পার্টিসিপেটরি নোট (পি নোট) নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের জেরে ফের আতঙ্কিত বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি। সোমবারই তারা ভারতে ৮৫৯ কোটি টাকার শেয়ার বেচল, যার জেরে ৫৫০.৯৩ পয়েন্ট পড়ে গেল বাজার। লগ্নিকারীদের ভয় কাটাতে তড়িঘড়ি সংসদ ভবনের দফতরে সাংবাদিকদের সামনে বিবৃতি দিতে হয় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে। সূচকের পতনে ইন্ধন জুগিয়েছে চিনের শেয়ার বাজারের এক ধাক্কায় ৮.৫% পতনও। ২০০৭ সালের পর যা সব থেকে বেশি। এ ছাড়া, এই অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে ভারতের বিভিন্ন শিল্প সংস্থার আর্থিক ফলেও শেয়ার বাজার অখুশি।
এ দিন সেনসেক্স ফের ২৭ হাজারের ঘরে নেমে দাঁড়িয়েছে ২৭,৫৬১.৩৮ অঙ্কে। ডলারে টাকাও ১২ পয়সা পড়েছে। এক ডলারের দাম দাঁড়ায় ৬৪.১৬ টাকা।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট) সেবি-র কাছে এমন আইন তৈরির সুপারিশ করেছে যাতে পি নোটের মাধ্যমে লগ্নি করা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম জানানো বাধ্যতামূলক হয়। পি নোট হল শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের জন্য বিশেষ ধরনের অ্যাকাউন্ট। বিদেশি সংস্থা এর মাধ্যমে সেখানকার বিনিয়োগকারীদের থেকে অর্থ সংগ্রহ করে ভারতের বাজারে লাগায়। সাধারণত লগ্নিকারী পিছু একটি পি নোট অ্যাকাউন্ট থাকে। কিন্তু কে লগ্নি করছেন, তা জানানো হয় না।
সেবি এ বার সিটের সুপারিশে সেই আইন করতে পারে, এই ভয়েই বিদেশি সংস্থাগুলি শেয়ার বিক্রি শুরু করে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। সম্প্রতি পুরনো লেনদেনে ন্যূনতম বিকল্প কর বা ম্যাট বসানোর প্রস্তাবেও একই ভাবে আতঙ্কে শেয়ার বেচে দিয়েছিলেন বিদেশিরা।
জেটলি এ দিন বলেন, ‘‘সিটের সুপারিশ নিয়ে এতটা আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। কেন্দ্র চটজলদি কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এ নিয়ে বিশদে আলোচনা হবে। তবে ভারতের শেয়ার বাজারে লগ্নির পরিবেশ বিঘ্নিত হবে, এমন পদক্ষেপ করা হবে না।’’
পি নোট নিয়ে অভিযোগ, এটিকে অনেকে কালো টাকা সাদা করায় কাজে লাগাচ্ছেন। মরিশাসের মতো কেম্যান দ্বীপেও আয়করে বিশেষ ছাড় আছে। ওই সব ব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে কিছু অসাধু লগ্নিকারী কর ফাঁকি দেয় এবং পরোক্ষ ভাবে তা ঢালে ভারতের বাজারে। মাধ্যম অনেক সময়েই পি নোট। বেআইনি পথে অর্জিত অর্থ এ ভাবে ভারতে ঢুকতে পারে। অবশ্য স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান কমল পারেখ বলেছেন, ‘‘সিট সুপারিশ করেছে। আইন তৈরি হয়নি এখনও। কেন্দ্র সব দিক দেখে সিদ্ধান্ত নেবে। আসলে বাজারে পতনের সম্ভাবনা ছিলই। পি নোট তাকে ত্বরান্বিত করল।’’