নজিরবিহীন ভাবে ধস নামল শেয়ার বাজারে। সোমবার এক ধাক্কায় সেনসেক্স পড়ে গেল ১৬২৪ পয়েন্ট। বাজার বন্ধের সময় সেনসেক্স নেমে এসে ঠেকেছে ২৫৭৪১.৫৬ অঙ্কে। এর আগে এক দিনে সূচকের এতটা পতন কখনও হয়নি।
শেয়ারের পাশাপাশি এই দিন ডলারের সাপেক্ষে ভাল রকম পড়েছে টাকার দামও। এই দিন বিদেশি মুদ্রার বাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার পর দ্রুত পড়তে থাকে টাকার দাম। ডলার কেনাবেচার ক্ষেত্রে টাকার দাম ২৯ পয়সা পড়ে যায়। যার ফলে প্রতি ডলারের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৬৫.৮৩ টাকা। গত দুই বছরের মধ্যে টাকার দাম এতটা আগে পড়েনি।
তবে শেয়ার বাজারের এই পতন কিন্তু কোনও ভারতীয় কারণে হয়নি। চিনের শেয়ার বাজারে এই দিন বড় মাপের ধস নামে। তার জেরেই ভারতে শেয়ার বাজার পড়েছে।
বাজারের এই মেগা পতনের জেরে আতঙ্ক ছড়ানো ঠেকাতে মাঠে নেমেছেন স্বয়ং কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। সংবাদ সংস্থার খবর, এই দিন জেটলি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সমস্যার জেরে ভারতের শেয়ার বাজারে পতন হয়েছে। ভারতে এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি যাকে ওই পতনের কারণ হিসাবে দায়ী করা যেতে পারে।’’
ঘটনাটক্রে এই দিনও ছিল সোমবার। ভারতের শেয়ার বাজারের ইতিহাসে আজ পর্যন্ত ১০টি বড মাপের পতন হয়েছে। এর মধ্যে সাতটিই সোমবারে। যার জন্য এই সোমবারকে শেয়ার বাজার মহল ‘কালা সোমবার’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
এই দিন প্রায় সমস্ত ধরনের শেয়ারের দামই দ্রুত পড়েছে। ব্যাঙ্ক, বিদ্যুৎ, নির্মাণ শিল্প, তেল এবং গ্যাস কোন ক্ষেত্রই পতনের হাত থেকে রেহাই পায়নি।
জেটলি জানিয়েছেন ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া সহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষই শেয়ার বাজারের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। কখন কী ব্যবস্থা নিতে হবে, সে ব্যাপারে তার বিশেষ ভাবে সচেতন।’’
ভারতের শেয়ার বাজারে ২০০৯ সালের পর সবচেয়ে বড় পতন এটি। আমেরিকার শেয়ার বাজার খোলার সঙ্গে সঙ্গেই এ দিন সেখানেও একই ধারা বজায় থাকে। ২০০৭ সালের পর এটাই ছিল সবচেয়ে বড় পতন। ওপেনিং ট্রেডেই হাজারেরও বেশি পয়েন্ট হারায় ডাও জোনস। শতাংশের হিসাবে যা ৬ শতাংশ। চিনের বাজারে পতনের জের ভারত ও আমেরিকা ছাড়া দেখা যায় ইউরোপীয় বাজারেও। লন্ডনের শেয়ার বাজারে এফটিএসই-১০০ সূচক পড়েছে সাড়ে চার শতাংশেরও বেশি। অন্য দিকে, ফাঙ্কফুর্টের ডাক্স-৩০ সূচক পড়েছে ছয় শতাংশেরও বেশি।