সপ্তাহ শেষে স্বস্তি। সূচক ফের সবুজে। ৩৪ হাজার পেরিয়েছে সেনসেক্স। ১০,৫০০ থেকে মাত্র কয়েক পয়েন্ট দূরে নিফ্টি। পিএনবি কেলেঙ্কারির নেতিবাচক প্রভাব কিছুটা হলেও কমেছে। শুক্রবার সেনসেক্স ৩২৩ পয়েন্ট ওঠায় অনেক শেয়ারই হারানো জমির কিছুটা পুনরুদ্ধার করেছে। ন্যাভ বেড়েছে প্রায় সব ইকুইটি ফান্ডের।
পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক শেয়ারে এখনও পতন চললেও, অন্য বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক শেয়ারকে শুক্রবার উঠতে দেখা গিয়েছে।
সপ্তাহ শেষে লগ্নিকারীদের মনে সাময়িক স্বস্তি ফিরলেও উত্থান স্থায়ী হবে কি না, তা নিয়ে অবশ্য সংশয় আছে। উত্থান ধরে রাখতে হলে কিছু ভাল খবর চাই। পাশাপাশি চাই বিশ্ব বাজারের মদত। নিচু বাজারে কিছু শেয়ারের দাম আকর্ষণীয় জায়গায় এসেছে। ফলে মিউচুয়াল ফান্ড এবং অন্য লগ্নিকারীরা শেয়ার কিনতে শুরু করায়, শুক্রবার বাজার ছিল ঊর্ধ্বমুখী। নীরব কেলেঙ্কারি প্রকাশিত হওয়ার আগে অতি অল্প সময়ে বাজার যেন একটু বেশিই উঠেছিল। উপযুক্ত কারণ ছাড়া এই উত্থানের পরে কিছুটা সংশোধনের প্রয়োজন এমনিতেই ছিল। আশা করা যায়, আতঙ্ক কাটিয়ে পরিস্থিতি অনুযায়ী চলতি সপ্তাহে বাজার নিজেকে গুছিয়ে নিতে পারবে।
পিএনবি কেলেঙ্কারিতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির সুনাম অনেকটাই ক্ষুণ্ণ হয়েছে। পাহাড়প্রমাণ অনাদায়ী ঋণকে সামাল দিতে অনেক ব্যাঙ্ক বাজার থেকে মূলধন সংগ্রহের পরিকল্পনা করেছিল। সুনাম ক্ষুণ্ণ হওয়ায় এখন তা অত সহজ হবে না। নতুন করে ঋণ পাওয়া কঠিন হবে হিরে ব্যবসায়ীদের পক্ষে। নীরব মোদীর জাল হিরের কথা প্রকাশ হওয়ায় মাঝারি ও ছোট হিরে ব্যবসায়ীদের ব্যবসাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। চাহিদা বাড়তে পারে বড় গোষ্ঠীর নামী ব্র্যান্ডের।
গত সপ্তাহটা ভাল কাটেনি চাকুরে মধ্যবিত্তদের জন্যও। কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডে (ইপিএফ) সুদ কমানোর কথা ঘোষণা করা হয় গত বৃহস্পতিবার। ১০ বেসিস পয়েন্ট কমে তা নেমেছে ৮.৫৫ শতাংশে। জানুয়ারিতে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি, পিএফ তহবিলের একাংশ শেয়ারে লগ্নিতে লাভ হওয়ায় ও সরকারি বন্ড ইল্ড বাড়ায় ভাবা হয়েছিল, এ দফায় হয়তো সুদ কমবে না। ফলে সুদ হ্রাসে হতাশ মধ্যবিত্ত।
অস্থির বাজারে সোনার দর বেশ চড়া। পাকা সোনা প্রায় ৩১ হাজার ছুঁইছুঁই। এতে দাম বেড়েছে গোল্ড ইটিএফের। স্বস্তিতে আছেন সরকারের ইস্যু করা গোল্ড বন্ডে লগ্নিকারীরাও।
অক্টোবর-ডিসেম্বরে আর্থিক ফলে উন্নতি ঘটেছে। আশা, আগামী কয়েক মাস তা জারি থাকবে। এর ভাল প্রভাব পড়বে সংশ্লিষ্ট সংস্থার শেয়ার দরে। দু’মাস বাজার তাকিয়ে থাকবে এ বারের বর্ষার পূর্বাভাস ও বার্ষিক ফলের দিকে। এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পক্ষে গেলে মাঝারি মেয়াদে ফের নতুন নজির গড়তে পারে সূচক। মার্চের গোড়ায় প্রকাশিত হবে কয়েকটি রাজ্যে ভোটের ফলাফল। এরও মৃদু প্রভাব থাকবে বাজারে।