চিন্তা বাড়াচ্ছে শিল্পোৎপাদন, মূল্যবৃদ্ধি

বাজারের নজর আর্থিক ফলে 

আর্থিক ফলের শুরুটা ভাল হলেও, দেশের অর্থনীতি নিয়ে কিন্তু চিন্তা যাচ্ছে না। বরং তা আরও বাড়িয়েছে গত সপ্তাহে প্রকাশিত দুই পরিসংখ্যান। ফেব্রুয়ারিতে শিল্প বৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ০.১%।

Advertisement

অমিতাভ গুহ সরকার 

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৯ ০৬:৩৩
Share:

আজ, সোমবার শুরু হল আরও একটা বাংলা নতুন বছর। তার আগেই গত সপ্তাহে বাজারকে প্রভাবিত করার মতো দু’টি ঘটনার বৃত্তে ঢুকে পড়েছি আমরা। প্রথমত, দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে লোকসভা ভোট। যার প্রথম পর্ব মিটেছে বৃহস্পতিবার। আর দ্বিতীয়ত, শুক্রবার শুরু হয়েছে গত অর্থবর্ষের (২০১৮-১৯) আর্থিক ফল প্রকাশের পালা। এই দুই ফলেই নজর থাকবে বাজারের। তবে সংস্থার আর্থিক ফলের দিকে একটু বেশিই। কারণ, এক বার ভোট মিটে গেলে, দীর্ঘ মেয়াদে বাজারকে চালনা করবে সংস্থার স্বাস্থ্যই। কারণ লগ্নিকারীরা জানতে চাইবেন, কোন সংস্থা আগামী দিনে কী ভাবে চলবে, শেয়ার থেকে রিটার্নই বা কেমন হতে পারে। আর এই সবেরই কিছুটা দিশা দেয় আর্থিক ফল।

Advertisement

তবে আর্থিক ফলের শুরুটা ভাল হলেও, দেশের অর্থনীতি নিয়ে কিন্তু চিন্তা যাচ্ছে না। বরং তা আরও বাড়িয়েছে গত সপ্তাহে প্রকাশিত দুই পরিসংখ্যান। ফেব্রুয়ারিতে শিল্প বৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ০.১%। আগের ২০ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। এই সময়ে সরাসরি ৮.৮% কমেছে মূলধনী পণ্য উৎপাদন। এই পণ্য অন্যান্য শিল্পে কাজে লাগে। ফলে এর উৎপাদন সরাসরি কমা শিল্পের খারাপ অবস্থারই ইঙ্গিত দেয়। নির্বাচনের সময়ে সরকারের কাছেও যা অস্বস্তির কারণ। এর পাশাপাশি বেড়েছে খুচরো মূল্যবৃদ্ধিও। মার্চে তা দাঁড়িয়েছে ২.৮৬%। ফেব্রুয়ারিতে ছিল ২.৫৭%। তার উপরে ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে প্রত্যক্ষ কর আদায় লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫০ হাজার কোটি টাকা কম হতে পারে বলে ইঙ্গিত রয়েছে। সব মিলিয়ে অর্থনীতি খুব একটা ভাল জায়গায় নেই। যা লগ্নিকারীদের চিন্তায় রাখছে।

এ সবের মধ্যে ভাল খবর অবশ্য ঋণে সুদের হার। সামান্য হলেও যা কমাতে শুরু করেছে ব্যাঙ্কগুলি। মঙ্গলবার ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত গৃহঋণে ১০ বেসিস পয়েন্ট সুদ ছাঁটাই করেছে স্টেট ব্যাঙ্ক। এই সুবিধা পাবেন পুরনো ঋণগ্রহীতারাও। তবে সেভিংস অ্যাকাউন্টে ১ লক্ষ টাকার বেশি থাকলে, তাতে সুদ কমে হবে ৩.২৫%। ঋণে সুদ কমিয়েছে আরও কিছু ব্যাঙ্ক।

Advertisement

বছরের শেষ তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) ভাল ফল প্রকাশ করেছে ইনফোসিস ও টিসিএস। ইনফোসিসের সামগ্রিক আয় ১৯.১% বেড়ে পৌঁছেছে ২১,৫৩৯ কোটি টাকায়। নিট মুনাফার অঙ্ক ৪,০৭৮ কোটি। শেয়ার পিছু ১০.৫০ টাকা চূড়ান্ত ডিভিডেন্ড দেওয়ার সুপারিশ করেছে তারা। একই সময়ে টিসিএসের আয় ৩২,০৭৫ কোটি থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৮,০১০ কোটি টাকা। নিট মুনাফা ৮,১২৬ কোটি। এক জোড়া ভাল ফল দিয়ে বছর শুরু হলেও, মাস খানেক গেলে বোঝা যাবে সামগ্রিক ভাবে এ বারের ফল কোন দিকে যায়।

দু’তিন মাস ঝিমিয়ে থাকার পরে আবার আগ্রহ বেড়েছে মিউচুয়াল ফান্ডে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ ছাঁটাই, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে থাকায় ব্যাঙ্ক-ডাকঘরে সুদ কমার সম্ভাবনা, শেয়ার বাজারের সাম্প্রতিক উত্থান, কর সাশ্রয়ের সুবিধা এবং কেন্দ্রে স্থায়ী সরকার গঠিত হওয়ার আশাই এর কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

নতুন অর্থবর্ষের শুরুতে প্রথম ইসু এনে ভাল সাড়া পেয়েছে পলিক্যাব ইন্ডিয়া। আবেদন জমা পড়েছে প্রায় ৫২ গুণ। এপ্রিলের শুরুতে এসেছিল কয়েকটি অ-রূপান্তরযোগ্য ডিবেঞ্চারও (এনসিডি)। এলঅ্যান্ডটি ফিনান্সের ইসুতে আবেদন জমা পড়েছে ৬.৪৮ গুণ। প্রস্তাবিত ৫০০ কোটির জায়গায় ৩,২৩৮ কোটি টাকার এনসিডি ইসু করবে সংস্থা।

(মতামত ব্যক্তিগত)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন