সুদ কমলেও চিন্তা কমেনি বাজারের

ডিসেম্বরে শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধির হার নেমে এসেছে মাত্র ২.৪ শতাংশে, যা আগের বছর একই মাসে ছিল ৭.৩ শতাংশ। অর্থাৎ বাজারের কাছে চিন্তার খোরাক এখন অনেক।

Advertisement

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:২৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

সুদ কমা সত্ত্বেও বাজারের অবাধ পতন অব্যাহত। পরপর সাতটি কাজের দিনে সূচক পড়েছে একনাগাড়ে। সুদ কমতে পারে এই আশায় যে সেনসেক্স পৌঁছে গিয়েছিল ৩৭ হাজারে, তা এক হাজারেরও বেশি পয়েন্ট খুইয়ে শুক্রবার নেমে এসেছে ৩৫,৮০৯ অঙ্কে। শুধু ভারতে নয়, বাজার পড়েছে গোটা বিশ্ব জুড়ে। চিন ও আমেরিকার মধ্যে শুল্ক যুদ্ধকেই মূলত দায়ী করা হচ্ছে এই পতনের জন্য। বিদেশি লগ্নিকারীরা ভারত থেকে অনেকটাই লগ্নি গুটিয়েছে এই কয়েক দিনে। দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়েছে চলতি সপ্তাহে পুলওয়ামায় সন্ত্রাসবাদী হামলা। এর কালো ছায়াও পড়তে পারে শেয়ার বাজারে। বাজারের নজর থাকবে ভারত-পাক সম্পর্ক কোন দিকে গড়ায়, তার উপর। এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম আবার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায়, তারও প্রতিকূল প্রভাব রয়েছে বাজারে। চিন্তা আছে ব্রেক্সিট নিয়েও। ডিসেম্বরে শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধির হার নেমে এসেছে মাত্র ২.৪ শতাংশে, যা আগের বছর একই মাসে ছিল ৭.৩ শতাংশ। অর্থাৎ বাজারের কাছে চিন্তার খোরাক এখন অনেক।

Advertisement

তবে ভাল খবর একদম নেই, তা নয়। জানুয়ারিতে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার আরও নেমে পৌঁছেছে ২.০৫ শতাংশে। ডিসেম্বরে এই হার ছিল ২.১১ শতাংশ। শুধু খুচরোই নয়, পতন হয়েছে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হারেও। জানুয়ারিতে এই হার ছিল মাত্র ২.৭৬ শতাংশ, যা এক বছর আগে একই মাসে ছিল ৩.০২ শতাংশ। মূল্যবৃদ্ধির হারে এই পতন জমি তৈরি করছে সুদের হার আরও কমানোর। এই নিয়ে এপ্রিলে আবার পর্যালোচনা করবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।

পণ্যমূল্য আবার যদি মাথা না তোলে, তবে আর এক দফা সুদ ছাঁটাইয়ের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না বলে মনে করা হচ্ছে। শিল্পের জন্য অবশ্যই এটি একটি ভাল খবর। তবে কয়েক দিন আগে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমালেও ব্যাঙ্কগুলি তেমন ভাবে এখনও ঋণ ও জমার উপর সুদ কমায়নি।

Advertisement

সর্বত্র যখন অনিশ্চয়তা, তখন চড়চড়িয়ে বাড়ছে সোনার দাম। কলকাতায় ১০ গ্রাম খাঁটি সোনার দাম পৌঁছে গিয়েছে ৩৩,৮৫০ টাকায়। হলমার্ক গয়নার সোনার দাম এখন ৩২,৫৯৫ টাকা। গোল্ড ইটিএফ এবং গোল্ড বন্ডে লগ্নিকারীদের জন্য এটি এক সুখবর হলেও যাঁদের পারিবারিক অনুষ্ঠানের জন্য প্রকৃত সোনা প্রয়োজন, তাঁদের কাছে এই মূল্যবৃদ্ধি একটি বড় দুশ্চিন্তার কারণ।

গত দু’বছর লাভের মুখ দেখেনি বেশির ভাগ ইকুইটি ফান্ড। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন যাঁরা এসআইপি পথে একনাগাড়ে লগ্নি করেছেন। এর ফলে লগ্নি কমতে শুরু করেছে ফান্ডে। ৬.৭ শতাংশ কমে জানুয়ারিতে নিট সংগ্রহ নেমে এসেছে ৬,১৫৮ কোটি টাকায়। মিউচিুয়াল ফান্ডের পথে বাজারে লগ্নি কমলে দুর্বল হয়ে পড়তে পারে শেয়ার বাজার। জানুয়ারিতে ইকুইটি ফান্ডে লগ্নি কমেছে ৬০ শতাংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement