এক ঘণ্টা, যেন পলক পড়ছে না সূচকেরও

যে সূচক অনেক সময়ে সামান্য খবরেই ওঠানামা করে রোলার কোস্টারের মতো, বুধবার প্রায় এক ঘণ্টা তা দাঁড়িয়ে রইল কার্যত এক উচ্চতায়। চুপ করে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৯ ০২:১০
Share:

রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা। সূচকেরও!

Advertisement

যে সূচক অনেক সময়ে সামান্য খবরেই ওঠানামা করে রোলার কোস্টারের মতো, বুধবার প্রায় এক ঘণ্টা তা দাঁড়িয়ে রইল কার্যত এক উচ্চতায়। চুপ করে।

সেনসেক্স মন্দার আশঙ্কা ভুলে বুধবারও সকাল থেকে উঠছিল, ১১টা ২৩ মিনিটে মোদীর বার্তা দেওয়ার টুইটের পরেই তা পড়ল ১০০ পয়েন্ট। তার পর থেকে যত ক্ষণ না তিনি পর্দায় হাজির হলেন, সেই এক ঘণ্টা বাজারও প্রায় এক জায়গাতেই দাঁড়িয়ে রইল। কখনও তা এগোল কয়েক পয়েন্ট। আবার কখনও কমল সামান্য। কিন্তু সকালের গতি ফিরল না।

Advertisement

টিভিতে একের পর এক চ্যানেলে আলোচনা। স্মার্ট ফোনের পর্দায় ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপে ঝড় উঠেছে। কী বলবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী? জাতির উদ্দেশে কোন ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বার্তা দেবেন? সেই চিন্তায় কপালে ভাঁজ শেয়ার বাজারেরও।

সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, নির্বাচনী আচরণ বিধি জারি হয়ে যাওয়ায়, বাজারকে ঝাঁকুনি দেওয়ার মতো বড় কোনও ঘোষণা যে মোদী করবেন না, তা এক রকম নিশ্চিত ছিল। কিন্তু তা-ও লগ্নিকারীরা আশ্বস্ত হতে পারেননি। বরং পলাতক আর্থিক অপরাধীদের ফেরানো থেকে শুরু করে যুদ্ধ ঘোষণা, সব কিছুর জন্যই প্রস্তুত হচ্ছিল বাজার। উঁকি দিচ্ছিল ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বরের স্মৃতিও। যে দিন সন্ধ্যায় এমনই এক ভাষণে নোট বাতিলের কথা ঘোষণা করেছিলেন মোদী।

আর এই সব কারণেই যে সূচক মঙ্গলবার ৪২৪ পয়েন্ট ওঠার পরে বুধবারও সকাল থেকে ২০০ পয়েন্টের কাছাকাছি উত্থান দেখছিল, ঘোরাফেরা করছিল ৩৮,৪৪৫ অঙ্কে, সেই সেনসেক্সই প্রধানমন্ত্রীর টুইটের পরে ১০০ পয়েন্ট পড়ে যায়। অস্থিরতা বাড়ে ১১.৪৫ থেকে। কারণ ওই সময়েই মোদীর ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ১২.২৪-এ প্রধানমন্ত্রী বার্তা দিতে শুরু করার পরে তা হারানো জমি কিছুটা উদ্ধার করে।

বাজারে যে চিন্তা ছিল, তা মানছেন ব্রোকাররাই। জয়পুরের এক স্টক ব্রোকারের কথায়, কী ঘোষণা হবে, তা নিয়েই তুঙ্গে ছিল জল্পনা। ঘোষণায় বাজার কী রকম ভাবে সাড়া দেবে, আশঙ্কা ছিল তা নিয়েও। ফলে লগ্নিকারীরাও সতর্ক ছিলেন।

অনেকের মতে, ভারতে লোকসভা ভোটের আগে সূচক অস্থির থাকবে। বিশ্বের অর্থনীতি নিয়েও চিন্তা তৈরি হয়েছে নতুন করে। পড়েছে ইউরোপ, আমেরিকার বাজার। বৃহস্পতিবার ভারতে মার্চের ডেরিভেটিভ লেনদেনের শেষ দিন। ফলে সব মিলিয়ে লগ্নিকারীরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভাবছেন। যে কারণে মোদীর এক টুইটেই প্রায় স্তব্ধ থাকা সূচক প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠলেও, পরের দিকে উত্থান ধরে রাখতে পারেনি সূচক। সেনসেক্স থেমেছে ৩৮,১৩২.৮৮ অঙ্কে। নিফ্‌টি ৩৮.২০ পয়েন্ট পড়ে নেমেছে ১১,৪৪৫.০৫ অঙ্কে।

তবে এর মধ্যেই আশার আলো বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি। যারা এ দিনও ভারতের বাজারে ১,৪৮১.১১ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন