Share Market

প্রতিকূল শর্ত অনেক, এখন অস্থিরতাই থাকবে বাজারে

দু’দিন মিলিয়ে প্রায় ১৬৫০ পয়েন্ট পতনের ফলে সূচক আসে ৫৯,৩৩১ অঙ্কে। দেড় মাস পার করে তার অবস্থান প্রায় একই।

Advertisement

অমিতাভ গুহ সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৩ ০৮:২৯
Share:

২৫ ও ২৭ জানুয়ারি সেনসেক্স নেমেছিল যথাক্রমে ৭৭৪ ও ৮৭৪ পয়েন্ট। প্রতীকী ছবি।

গত ২৪ জানুয়ারি হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশের পর থেকেই অস্থির শেয়ার বাজার। ২৫ ও ২৭ জানুয়ারি সেনসেক্স নেমেছিল যথাক্রমে ৭৭৪ ও ৮৭৪ পয়েন্ট। দু’দিন মিলিয়ে প্রায় ১৬৫০ পয়েন্ট পতনের ফলে সূচক আসে ৫৯,৩৩১ অঙ্কে। দেড় মাস পার করে তার অবস্থান প্রায় একই। আদানি কাণ্ডের ছাড়াও আর যে সমস্ত কারণ বাজারকে দমিয়ে রেখেছে তা হল—

Advertisement

• ফেব্রুয়ারিতে আমেরিকা ও ভারত, দুই দেশেই সুদের হার বাড়ানো হয়েছে ২৫ বেসিস পয়েন্ট করে। ইঙ্গিত, ভবিষ্যতে তা আরও বাড়ানো হতে পারে। সুদ বৃদ্ধির ফলে শিল্পের পুঁজি জোগাড়ের খরচ বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে বাড়ি-গাড়ির ঋণের কিস্তি।

• ভারতে ২০২২ সালের মে থেকে রেপো রেট বাড়ানো হয়েছে ২২৫ বেসিস পয়েন্ট। চড়া সুদের প্রভাবে অর্থনীতির গতিও শ্লথ হচ্ছে। আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস কমাচ্ছে দেশি-বিদেশি মূল্যায়ন সংস্থাগুলি। এরই প্রভাব পড়ছে শেয়ার বাজারে।

Advertisement

• কোভিডের ধাক্কা কাটিয়ে চিনের অর্থনীতি খুলছে। ভারতে বৃদ্ধির হার কমার আশঙ্কায় অনেক বিদেশি লগ্নি সরছে চিন-সহ বিভিন্ন দেশে।

• আজ ফেব্রুয়ারির খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার প্রকাশিত হওয়ার কথা। আশঙ্কা, এ বারেও সেই হার মাথা নামানোর সম্ভাবনা কম (জানুয়ারিতে ছিল ৬.৫২%)। তা হলে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ আরও বাড়াতে পারে।

• এল-নিনোর প্রভাবে মার্চ-মে পর্যন্ত ভারতে অস্বাভাবিক তাপপ্রবাহ হতে পারে। কমতে পারে কৃষি উৎপাদন। সে ক্ষেত্রে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়বে।

• এক দিকে বাজারের দুর্বলতা ও অন্য দিকে মেয়াদি আমানতে সুদ বাড়ায় অনেকেই শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ড থেকে টাকা সরিয়ে নিচ্ছেন ব্যাঙ্ক এবং এনবিএফসির মেয়াদি আমানতে।

• ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিও ভাবাচ্ছে বাজারকে। এক দিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামার লক্ষণ নেই। অন্য দিকে তাইওয়ানকে রক্তচক্ষু দেখাচ্ছে চিন।

• আমেরিকার সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কে তালা ঝোলায় বিশ্ব বাজারে ফের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এর প্রতিকূল প্রভাব ভারতে ক’দিন থাকে সেটাও দেখার।

বাজার অনিশ্চিত হলেও ফেব্রুয়ারিতে একুইটি ফান্ডে লগ্নি ৩১৪০ কোটি টাকা বেড়ে পৌঁছে গিয়েছে ১৫,৬৮৬ কোটি টাকায়। নভেম্বর এবং ডিসেম্বরে ওই সমস্ত ফান্ডে লগ্নির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ২২৫৮ কোটি এবং ৭৩০৩ কোটি টাকা। একুইটি ফান্ডে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ইঙ্গিত দেয়, লগ্নিকারীরা মনে করছেন, দেশের অর্থনীতি তার দুর্বলতা কাটিয়ে উঠবে। বস্তুত, বিদেশি লগ্নিকারীদের নাগাড়ে শেয়ার বিক্রি সত্ত্বেও ফান্ডের পথ ধরে মোটা পুঁজি না ঢুকলে হয়তো বাজার আরও দুর্বল হত।

(মতামত ব্যক্তিগত)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন