নয়াদিল্লিতে অ্যামিও-র প্রদর্শন। ছবি: পিটিআই
শুরুটা করেছিল মারুতি-সুজুকি। কম দামে ‘সেডান’ গাড়ির চাবি ক্রেতাদের হাতে তুলে দিতে তাদের জনপ্রিয় ‘সুইফট ডিজায়ার’ গাড়িটির দৈর্ঘ্য কমিয়ে চার মিটারের চেয়ে ছোট করেছিল তারা। যা তৈরি করেছিল ‘কমপ্যাক্ট সেডান’-এর নতুন বাজার। পরবর্তী কালে একই পথে হাঁটে হোন্ডা, টাটা মোটরস, হুন্ডাই, ফোর্ডের মতো সংস্থা। এ বার সেই দৌড়ে পা মেলাচ্ছে ফোক্সভাগেন-ও। এ মাসের শেষেই দেশের বাজারে আসছে তাদের প্রথম ‘কমপ্যাক্ট সেডান’ অ্যামিও। ১.২ লিটারের পেট্রোল ও ১.৩ লিটারের ডিজেল অ্যামিও তৈরি করছে সংস্থা। পেট্রোল গাড়ির দাম শুরু হচ্ছে ৫.২৪ লক্ষ টাকা থেকে। ডিজেল গাড়িটির দাম অবশ্য এখনও ঘোষণা করেনি তারা।
চার মিটারের চেয়ে ছোট গাড়ি হলে তার উপর উৎপাদন শুল্ক অনেক কম পড়ে। সাধারণ ভাবে সেডান বা ‘স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্ল’-এর মতো গাড়িগুলি তার চেয়ে বড়ই হয়। ফলে শুধু বাড়তি উৎপাদন শুল্কের জন্যই বেশি টাকা গুণতে হয় ক্রেতাদের। তাই সাধ থাকলেও অনেকেরই আর তা কেনার সাধ্য হয় না। সেই সূত্রেই চার মিটারের চেয়ে ছোট ‘কমপ্যাক্ট’ গাড়ি তৈরিতে জোর দিচ্ছে সংস্থাগুলি। সুইফট-ডিজায়ারের পরে হুন্ডাইয়ের এক্সেন্ট, হোন্ডা-র অ্যামেজ, টাটা মোটরস-এর জেস্ট, ফোর্ড-এর অ্যাস্পায়ার বাজারে এসেছে। এ বার পা রাখছে অ্যামিও। উল্লেখ্য, এখন বাজারে রয়েছে তাদের সেডান ভেন্টো। এটি অবশ্য চার মিটারের চেয়ে বড়।
ফোক্সভাগেন ইন্ডিয়া-র কর্তা (বিপণন ও জনসংযোগ) কমল বসুর দাবি, ‘কমপ্যাক্ট সেডান’-এর বিক্রি বৃদ্ধির হার গাড়ি শিল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হাত ধরে নতুন ক্রেতারাও যে এ ধরনের গাড়ির দিকেই ঝুঁকছেন, তাও স্পষ্ট। দেখা গিয়েছে, ‘কমপ্যাক্ট সেডান’ ক্রেতাদের প্রায় ৫৫ শতাংশই প্রথম গাড়ি কিনেছেন। অর্থাৎ, প্রথম বার গাড়ি কেনার সময়েই তাঁদের পছন্দ এ ধরনের গাড়ি।
গত ফেব্রুয়ারিতে দিল্লির অটো-এক্সপোয় প্রথমে অ্যামিও গাড়িটি প্রদর্শন করে সংস্থা। আনুষ্ঠানিক ভাবে বাজারে আসার আগে কলকাতা-সহ ১৭টি শহরে এক দিন করে গাড়িটির ‘রোড-শো’ করেছে তারা। সেই সূত্রেই সম্প্রতি কলকাতায় এসে কমলবাবু জানান, এ মাসের শেষে গাড়িটি বাজারে আসবে। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ থেকে ক্রেতাদের হাতে গাড়ি তুলে দেওয়া হবে। অ্যামিও-র হাত ধরে আগামী বছরখানেকের মধ্যে এই গাড়ির বাজারের ৮-১০ শতাংশ দখল করাই তাঁদের লক্ষ্য। অ্যামিও-র সমস্ত সংস্করণেই ‘ডুয়াল এয়ারব্যাগ’ এবং ‘এবিএস’ প্রযুক্তির সুবিধা থাকবে।
প্রতিযোগীরা যখন আগেই এই বাজার ধরতে নেমে পড়ছে, তখন ফোক্সভাগেন কি দেরি করে ফেলল না? এ কথা মানলেও অবশ্য কমলবাবু বলেন, ‘‘দেরি করে আসার কিছু সুবিধাও থাকে। যেমন এ ধরনের গাড়ির ক্ষেত্রে আমরাই কিছু বাড়তি সুবিধা দেব। সব চেয়ে দামি সংস্করণের অ্যামিও-তে থাকবে ‘ক্রুজ কন্ট্রোল’, ‘রেন সেন্সিং ওয়াইপার’।’’ কমলবাবু জানান, এ পর্যন্ত কলকাতার ‘রোড-শো’-তেই সবচেয়ে বেশি সাড়া পেয়েছেন তাঁরা। সেখানে ২০০ জন আগ্রহী এসেছিলেন। অনেকেই বুকিং-ও করেছেন।