সন্দেহভাজন ভুয়ো সংস্থার তকমা মুছতে সেবি-র বিরুদ্ধে আপিল আদালতে গেল ওই তালিকায় নাম ওঠা বেশ কয়েকটি সংস্থা। যার মধ্যে রয়েছে পার্শ্বনাথ ডেভেলপার্স, জে কুমার ইনফ্রা প্রোজেক্টস, প্রকাশ ইন্ডাস্ট্রিজ প্রমুখ। আগামী দিনে আরও সংস্থার এই পথে হাঁটার সম্ভাবনা।
সংস্থাগুলির দাবি, তাদের ব্যবসা বৈধ। তাই এ ভাবে ভুয়ো সংস্থার (শেল কোম্পানি) তকমা সেঁটে দেওয়া অর্থহীন। কিন্তু উল্টো দিকে বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি-র পাল্টা যুক্তি, কোম্পানি বিষয়ক মন্ত্রকের কাছ থেকে তালিকা পাওয়ার পরে তবেই এ বিষয়ে পদক্ষেপ করেছে তারা। ব্যবস্থা নিতে বলেছে স্টক এক্সচেঞ্জগুলিকে।
আপিল আদালত অবশ্য সেবির কাছে জানতে চেয়েছে, নির্দেশ জারির আগে কেন এ নিয়ে তদন্ত করেনি তারা। সেবির কাছে সংস্থার নামের তালিকা এসেছিল ৯ জুন। আর স্টক এক্সচেঞ্জগুলিকে তারা নির্দেশ পাঠিয়েছে ৭ অগস্ট। মাঝের এই সময়ে তদন্তের কাজ শুরু হয়েছে বা এগিয়েছে কি না, তা-ও জানতে চেয়েছে আপিল আদালত।
মঙ্গলবার ৩৩১টি সন্দেহভাজন ভুয়ো (শেল) সংস্থার নামের তালিকা প্রকাশ করেছে সেবি। তার আগের দিন, সোমবার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিভিন্ন স্টক এক্সচেঞ্জকে নির্দেশ দিয়েছে বাজার নিয়ন্ত্রক। অনিয়মের অভিযোগে ১৬৪টি সংস্থার শেয়ার লেনদেন আগে থেকেই বন্ধ। বাকি ১৬৭টির মধ্যে ১৬২টির শেয়ার লেনদেনে রাশ টানা হয় গত কালই। জানানো হয়, আপাতত তা করা যাবে মাসে এক দিন। বুধবার বিএসই বাকি পাঁচ সংস্থার শেয়ারেও একই কড়াকড়ি জারি করেছে। এনএসই জানিয়েছে, তালিকায় থাকা যে ৪৮টি সংস্থা সেখানে নথিভুক্ত, তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে।
এমনিতে শেল কোম্পানির ধরাবাঁধা সংজ্ঞা নেই। কিন্তু সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানিয়েছিলেন, এমন বহু সংস্থা তৈরিই হয়েছে শুধুমাত্র বিপুল অঙ্কের কর ফাঁকি দিতে। কিছু দিন আগে লোকসভায় তিনি বলেন, কালো টাকা সাদা করতে ভুয়ো সংস্থা (শেল কোম্পানি) তৈরির ‘সদর দফতর’ হয়ে উঠেছে কলকাতা। তাঁর অভিযোগ ছিল, এমন অজস্র শেল কোম্পানি রয়েছে, যাদের খাতায়-কলমে অস্তিত্ব থাকলেও, বাস্তবে ব্যবসা নেই।
গত মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও জানিয়েছিলেন, শুধু কর ফাঁকি দিতে খোলা হয়েছে, এমন ৩৭ হাজার ভুয়ো সংস্থাকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করেছে কেন্দ্র। সন্দেহজনক লেনদেনের জন্য নোট বাতিলের পর থেকে কড়া নজর রাখা হচ্ছে এ ধরনের ৩ লক্ষ সংস্থার উপর। কারণ, নোট বাতিলের পরে বহু ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে টাকা সরানো হয়েছে বলে মনে করে কেন্দ্র। সেগুলির শেয়ার দর ফুলেফেঁপে ওঠে বলেও অভিযোগ।