গত বৃহস্পতিবার শুধু ৩৭ হাজারের ঘর ছুঁয়ে ৩৬ হাজারে নেমে গিয়েছিল সেনসেক্স। খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি লগ্নিকারীদের। পরের দিন অর্থাৎ শুক্রবারই প্রথম বার সূচক দাঁড়ায় ৩৭ হাজারের ঘরে (৩৭,৩৩৭)। বাজার এতটা ওঠায় সকলেই খুশি। আরও বেশি স্বস্তি মিলেছে এই দফায় বড় মাপের সংস্থাগুলির (লার্জ ক্যাপ) পাশাপাশি মাঝারি (মিড ক্যাপ) ও ছোট মাপের (স্মল ক্যাপ) সংস্থাগুলির শেয়ার দর বেড়ে ওঠায়। যে ছবি এর আগের নজির গড়া উত্থানগুলিতে তেমন দেখা যায়নি। এর জেরে সপ্তাহ শেষে ইকুইটি (শেয়ার) নির্ভর বেশির ভাগ ফান্ডের ন্যাভও মাথা তুলেছে।
পরিস্থিতির বিচারে সেনসেক্স হঠাৎ এত দ্রুত যে ৩৭ হাজারের ঘরে পৌঁছে যাবে, তা কিন্তু ভাবতে পারেননি বহু লগ্নিকারীই। তা সত্ত্বেও উত্থানের অন্যতম কারণ, সংসদে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবে মোদী সরকারের বিপুল ভোটে জয়। যা আসলে পোক্ত করেছে কেন্দ্রে স্থায়ী সরকার থাকার প্রত্যাশাকে।
তাতে ইন্ধন জুগিয়েছে বেশ কিছু পণ্যে জিএসটি কমা ও আরও কিছু পণ্যে কমার সম্ভাবনা। এতে দাম কমবে সংশ্লিষ্ট পণ্যের। বাড়বে চাহিদা। এই সব সুফল মাথায় রেখে বাজারে বেশ কিছুটা করে দাম বেড়েছে ওই সব পণ্য উৎপাদনকারী সংস্থাগুলির শেয়ারের। বিশ্ব বাজার তেমন প্রতিকূল খবর দেয়নি। উপরন্তু বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি ফের ভারতে শেয়ার কিনতে নেমেছে। ২ থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত ১,৮৪০ কোটি টাকা ঢেলেছে তারা। যেখানে এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে তুলে নিয়েছিল ২০,০০০ কোটি। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন সংস্থার ভাল আর্থিক ফল প্রকাশও বাজারে জ্বালানি জুগিয়েছে। কিছুটা হলেও দুশ্চিন্তা কাটার ইঙ্গিত মিলেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির ফলে। সব চেয়ে বড় কথা জুলাইয়ে ঢেলে বর্ষা দিয়েছে প্রকৃতি।
গত সপ্তাহে দেখা গিয়েছে আইটিসির নিট মুনাফা বেড়েছে ১০%। ইয়েস ব্যাঙ্কের ৩১%। এসবিআই লাইফের ১৩%। রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজের একত্রিত নিট লাভ বেড়ে হয়েছে ৯,৪৫৯ কোটি টাকা। ব্যাঙ্ক অব বরোদার বেড়ে হয়েছে ৫২৮ কোটি। এইচসিএল টেকের নিট লাভ ১০% বেড়েছে। তবে খাতা থেকে অনুৎপাদক সম্পদ মুছতে গিয়ে প্রায় ১২০ কোটি টাকা লোকসান করেছে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক। আইসিআইসিআই প্রু লাইফের নিট লাভ কমেছে ৩০%। ৯৪০ কোটি ক্ষতি গুনেছে ভারতী এয়ারটেলও। এশিয়ান পেন্টসের লাভ বেড়ে হয়েছে ৫৭১ কোটি। সিইএসসির ১৮২ কোটি। এলঅ্যান্ডটির নিট লাভ ৪৩% বেড়েছে। মারুতি সুজুকির ২৭%। লাভ অবশ্য কমেছে এনটিপিসি-র।