বাগানের ব্যথা বুঝে মলম সেই কর ছাড়

রাজ্য বাজেটে কমল স্ট্যাম্প ডিউটি, ঘোষণায় খুশি চা শিল্পও

চা শিল্প মহলও জানিয়েছে, অন্যান্য রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গেও বাগানগুলির অবস্থা ভাল নয়। বিরূপ আবহাওয়া প্রভাব ফেলেছে উৎপাদনে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৫৯
Share:

বিরূপ আবহাওয়া-সহ নানা কারণে খানিকটা বেসামাল উত্তরবঙ্গের চা শিল্প। তার মধ্যে গত বছর টানা ১০৪ দিনের গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের জেরে মুখ থুবড়ে পড়েছে দার্জিলিঙের বাগানগুলি। আর বাজারে চায়ের দামের নিম্নগতি চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে ক্ষুদ্র চা চাষিদের কপালে। সকলকেই কিছুটা স্বস্তি দিয়ে বুধবার বাজেটে চা শিল্পের জন্য কৃষি আয়কর ও সেস-এ সাময়িক ছাড়ের প্রস্তাব দিলেন অর্থ মন্ত্রী অমিত মিত্র।

Advertisement

রাজ্যের কৃষি আয়কর আইন অনুযায়ী, ছোট-বড় সব ধরনের বাগানকেই নিট আয়ের একাংশের উপর ৩০% হারে কৃষি আয়কর দিতে হত। অর্থমন্ত্রী এ দিন জানান, ২০১৮-’১৯ ও ২০১৯-’২০ সালে তাদের সেই কর দিতে হবে না। এ ছাড়া শিক্ষা সেস ও গ্রামীণ কর্মসংস্থান সেসও লাগবে না ২০১৮-’১৯ সালে। তাঁর বক্তব্য, গত কয়েক বছর ধরেই চা শিল্প, বিশেষ করে ছোট বাগানগুলি দুর্দশার মধ্যে রয়েছে। এখনও অনেক বাগান ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। তাদের পাশে দাঁড়াতেই এই কর ছাড়ের প্রস্তাব। তাঁর দাবি, এর ফলে লক্ষ লক্ষ চা শ্রমিকও উপকৃত হবেন।

উল্লেখ্য, চা শিল্প মহল সূত্রে খবর, এর আগে ২০০৬-’০৭, ২০০৭-’০৮ ও ২০০৮-’০৯ সালেও কৃষি আয়কর মকুবের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তৎকালীন বাম সরকার। আর গত কয়েক বছর ধরে বর্তমান রাজ্য সরকার সেস-এ ছাড় দিচ্ছে। এ বারের প্রস্তাবে রাজ্যের তিনশোরও বেশি বাগান লাভবান হবে বলে দাবি শিল্পের।

Advertisement

চা শিল্প মহলও জানিয়েছে, অন্যান্য রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গেও বাগানগুলির অবস্থা ভাল নয়। বিরূপ আবহাওয়া প্রভাব ফেলেছে উৎপাদনে। বাজারে চায়ের দাম না বাড়লেও চা প্রক্রিয়াকরণের খরচ বাড়ছে। এর মধ্যে গত বছর গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলনের জেরে বিপর্যস্ত গোটা দার্জিলিঙের চা ব্যবসা। হারিয়েছে রফতানি ব্যবসা। এই অবস্থায় কর ছাড়ের প্রস্তাব কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে, বলছেন ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল অরিজিৎ রাহা, দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল কৌশিক বসু এবং কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট বিজয়গোপাল চক্রবর্তী।

অরিজিৎবাবুর মতে, বাগানগুলির আয় কমছে। ফলে কর ছাড় পেলে অর্থের জোগান বাড়বে। তাঁর কথায়, ‘‘বাগানগুলির সমস্যা সুরাহা করতে রাজ্যের পক্ষে যতটা করা সম্ভব ছিল, বাজেটে সরকার তা করেছে।’’ বিজয়বাবুর দাবি, এতে ৫০ হাজারেরও
বেশি ক্ষুদ্র চা চাষি উপকৃত হবেন। তিনি বলেন, ‘‘এই চাষিদের আয় এমনিতেই খুব কম। তার উপর এই করের বোঝা চাপায় তাঁদের দুর্দশা আরও বেড়েছিল। বহু বছর ধরেই আমরা এটি তোলার দাবি জানাচ্ছিলাম।’’

সুরাহা যেখানে

• কৃষি আয়কর মকুব আগামী দু’টি অর্থবর্ষে

• ২০১৮-’১৯ সালে লাগবে না শিক্ষা, গ্রামীণ কর্মসংস্থান সেস

• লাভবান হবে ৩০০-র বেশি চা বাগান

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement