সাধন পাণ্ডে। শনিবার।
ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের রায় বিপক্ষে গেলেই অনেক সময় হাইকোর্টের দরজায় কড়া নাড়ছেন অভিযুক্ত ব্যবসায়ীরা। চাইছেন স্থগিতাদেশ। ফলে গ্রাহকের কাছে দীর্ঘ হচ্ছে সুবিচার মেলার প্রক্রিয়া। অভিযুক্তদের এ ভাবে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়া ঠেকাতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাবে রাজ্য সরকার। ক্রেতা সুরক্ষা দিবসের ঠিক আগে শনিবার এ কথা জানালেন সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে।
ক্রেতার নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা নিয়ে এ দিন বণিকসভা ফিকির সঙ্গে যৌথ ভাবে এক আলোচনার আয়োজন করেছিল ক্রেতা সুরক্ষা দফতর। প্রথমে সভায় এবং পরে সাধনবাবু অভিযুক্তদের হাইকোর্টে দ্বারস্থ হওয়ার ওই প্রসঙ্গ তোলেন। তাঁর অভিযোগ, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলায় হেরে স্থগিতাদেশের জন্য কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন। এবং অনেক ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশ পেয়েও যাচ্ছেন। ফলে কার্যত প্রশ্ন উঠছে ক্রেতা সুরক্ষা নিয়েই। তাঁর দাবি, ক্রেতা সুরক্ষার মামলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতেই হওয়া উচিত। এ জন্য জেলা থেকে জাতীয় স্তর পর্যন্ত ফোরাম বা আদালত রয়েছে। ক্রেতা-বিরোধ সংক্রান্ত বিষয়ে উচ্চতর আদালতে যেতে গেলে সেখানেই যাওয়া উচিত বলে সাধনবাবুর দাবি।
মন্ত্রী জানান, ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের মামলার এক্তিয়ার নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ওই আদালতের পক্ষেই রায় দিয়েছে, আগে এমন ঘটনা ঘটেছে। যদিও কোন রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের ক্ষেত্রে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তা তিনি জানাননি। তবে সেই প্রসঙ্গেই তিনি জানান, এ বার এ রাজ্যেও ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের রায়ের উপর স্থগিতাদেশের জন্য কোনও অভিযুক্ত যাতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে না পারেন, সে জন্য সুপ্রিম কোর্টে বিশেষ আবেদন (এসএলপি) জানাবেন তাঁরা।
ক্রেতার অধিকার নিশ্চিত করতেও পরিকাঠামো বৃদ্ধি-সহ একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতর। তার মধ্যে রয়েছে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন নিয়মকানুন তৈরি এবং নতুন ভাবনার জন্য দফতরকে সাহায্য করতে বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়া। সেখানে দফতরের সচিব ছাড়াও আইআইএম-কলকাতা ও আইআইটি-খড়গপুরের অধ্যাপক এবং ক্রেতা সুরক্ষা আন্দোলনে যুক্তরা থাকবেন।
পাশাপাশি, নাগরিকেরা সরকারি পরিষেবা ঠিক মতো পাচ্ছেন কি না, তা-ও এ বার খতিয়ে দেখবে ক্রেতা সুরক্ষা দফতর। সরকারি দফতরগুলি ক্রেতা সুরক্ষা দফতরকে লিখিত ভাবে জানাবে যে, তারা কি ধরনের পরিষেবা দিচ্ছে। শীঘ্রই একটি কমিশনও গড়া হবে। সরকারি পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ সেখানে জানানো যাবে।
সাধনবাবু জানান, এপ্রিল থেকে রাজ্যের সবক’টি ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে ক্রেতা সহায়ক কেন্দ্র চালু হবে। কলকাতায় তৃতীয় ক্রেতা সুরক্ষা ফোরাম এবং রাজ্য কমিশনের আরও একটি বেঞ্চ চালুর কথাও জানান ক্রেতা সুরক্ষা সচিব এ সুব্বাইয়া।