পাটচাষিদের পাশে দাঁড়াতে রাজ্য এই প্রথম নিজেদের উদ্যোগে চটের বস্তা কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর রাজ্যের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রক। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী রাজ্য বস্তা কিনতে যত টাকাই খরচ করুক না কেন তার পুরোটাই কেন্দ্র মিটিয়ে দেবে। তবে বস্ত্র মন্ত্রকের কর্তাদের দাবি, এই মরসুমে পশ্চিমবঙ্গ যে-পরিমাণ বস্তা কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা যথেষ্ট নয়। ধাপে ধাপে তা বাড়ানোর কথাও বলেছেন তাঁরা।
পাশাপাশি, মন্ত্রকের শীর্ষ কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, শুধু চাল নয়, পাট চাষিদের স্বার্থে রাজ্য সরকার আনাজ ও আলুর জন্যও চটের বস্তার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করুক। এ বিষয়ে মন্ত্রকের পক্ষ থেকে সম্প্রতি রাজ্যকে চিঠিও লেখা হয়েছে। রাজ্যের কৃষি ও খাদ্য দফতরের কর্তারা অবশ্য এ প্রসঙ্গে কিছু বলেননি। আরও বেশি বস্তা কেনার প্রসঙ্গে দফতরের কর্তাদের একাংশ জানান, প্রয়োজন হলে সরকার বিবেচনা করে দেখবে।
দীর্ঘদিন ধরেই কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রক রাজ্যকে চটের বস্তা কেনার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল। এতদিন পঞ্জাব, হরিয়ানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ় এমনকী ওড়িশার মতো রাজ্য নিজেদের উদ্যোগে চটের বস্তা কিনলেও পশ্চিমবঙ্গ কিনত না। রাজ্যের চালকলগুলিই নিজেদের মতো করে বাজার থেকে বস্তা কিনে নিত। এই প্রথম রাজ্য সরকার সরাসরি নিজেদের সংস্থা অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিগমের মাধ্যমে জুট কমিশনারের কাছ থেকে চটের বস্তা কিনতে চলেছে। রাজ্যের যুক্তি, দাম না-পেয়ে রাজ্যের পাট চাষিরা চরম দুর্দশায়। কেন্দ্রীয় সংস্থা পাট নিগম ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে চাষিদের থেকে পাট কিনতে পারছে না। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের পাশে দাঁড়াতেই সরকার মাঠে নামছে। নভেম্বরের গোড়া থেকই বস্তা কেনা শুরু হবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
প্রসঙ্গত, চটের বস্তা কেনায় কেন্দ্র বছরে কম-বেশি ৬০০০ কোটি টাকা খরচ করে। তার মধ্যে পঞ্জাব ও হরিয়ানা এই দু’টি রাজ্যেই ৩০০০ কোটি টাকার মতো বস্তা লাগে। দীর্ঘদিন ধরেই তারা কেন্দ্রের কাছে অভিযোগ করছিল, তাদের চটের বস্তা কিনতে বাধ্য করা হলেও পশ্চিমবঙ্গ তা মানে না। অথচ পাটশিল্পে জড়িত কৃষক পরিবার ও শ্রমিক পশ্চিমবঙ্গের। শেষ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ বস্তা কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় খানিকটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন মন্ত্রকের কর্তারাও।