শিল্পের জন্য রাজ্যে এ বার নেটে একজানলা ব্যবস্থা

শিল্পের জন্য এ বার অনলাইনে একজানলা ব্যবস্থা তৈরি করছে রাজ্য। মূলত রাজ্যে ব্যবসা শুরু করার পথ মসৃণ করতেই ১৯৬টি সরকারি পরিষেবার এই অনলাইন পরিকাঠামো আনতে চলেছে সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:১২
Share:

ইনফোকম প্রদর্শনীতে তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র

শিল্পের জন্য এ বার অনলাইনে একজানলা ব্যবস্থা তৈরি করছে রাজ্য। মূলত রাজ্যে ব্যবসা শুরু করার পথ মসৃণ করতেই ১৯৬টি সরকারি পরিষেবার এই অনলাইন পরিকাঠামো আনতে চলেছে সরকার।

Advertisement

বৃহস্পতিবার ইনফোকমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ বারের থিম, ‘নিয়মভাঙা পথে হেঁটে পরিবর্তন’-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি সচিব তাল্লিন কুমার এ কথা জানান। একই সঙ্গে বলেন, সহজে ব্যবসা করার পাশাপাশি লগ্নির আর এক শর্ত, মেধাসম্পদের জোগান নিশ্চিত করতে ‘ডিজিটাল লকার’-ও তৈরি করছে রাজ্য। তাঁর দাবি, ‘‘বিভিন্ন ডিগ্রি বা শংসাপত্র আপলোড করা যাবে এখানে। সেগুলি সরকারি ওয়েবসাইটে রাখলে নিয়োগকারী ও চাকরিপ্রার্থী, দু’পক্ষেরই সুবিধা হবে। ভুয়ো শংসাপত্রের সমস্যা মিটবে। তা সুরক্ষিতও থাকবে।’’

প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে সহজে ব্যবসার পরিকাঠামো গড়া নিয়ে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগ্রহী। গত বছর শিল্পমহলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি জানিয়েছিলেন, জমির চরিত্র বদল, পরিবেশ, দমকল, বিদ্যুতের মতো বিষয়ে একজানলা ব্যবস্থার মাধ্যমে ছাড়পত্র দেওয়া হবে। এখন এই পরিষেবার সংখ্যা ৩০। রাজ্য আয়োজিত শিল্প সম্মেলন ‘বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট’-এর আগে আরও ১৩৬টি পরিষেবা একজানলার আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে সরকারি সূত্রে জানানো হয়।

Advertisement

এ বছর মুখ্যমন্ত্রীর মসনদে ফিরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এ বার রাজ্যের শিল্পায়নে সবচেয়ে বেশি নজর দেবেন তিনি। উল্লেখ্য, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রক শিল্পবান্ধব রাজ্যগুলির তালিকা প্রকাশ করেছে। সেখানে পশ্চিমবঙ্গ ঠাঁই পেয়েছে ১৫ নম্বরে। আগের বছরে ছিল ১১তম স্থানে।

বিশ্বব্যাঙ্কের সাহায্যে তৈরি এই রিপোর্ট বলছে, ৩৪০টি সংস্কারের মধ্যে এখনও রাজ্যে ৫৩টির কাজ বাকি। এর মধ্যে রয়েছে একজানলা ব্যবস্থাও। নতুন শিল্পকে ছাড়পত্র দিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বহু আগেই যা তৈরি করেছিল। কিন্তু রিপোর্ট বলছে, ওই ব্যবস্থার জন্য বিভিন্ন দফতর থেকে উচ্চপদস্থ অফিসারকে যথোচিত ক্ষমতা দিয়ে নিয়োগ করার কাজটি হয়নি। বিভিন্ন দফতরের অফিসারদের নিয়ে আলাদা অফিস তৈরির কাজও বাকি। এ সব ঘাটতি অনলাইন একজানলা ব্যবস্থায় মিটিয়ে ফেলা যাবে বলে দাবি রাজ্যের।

‘নিয়মভাঙা পথে হেঁটে পরিবর্তন’— থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এ দিন গোটা অনুষ্ঠানের সুর বাঁধলেন উদ্বোধনী মঞ্চের বক্তারা। নিউ কাস্‌ল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুগত মিত্র, এরিকসন ইন্ডিয়ার এমডি অমিতাভ রায় থেকে শুরু করে অ্যাকসেঞ্চার টেকনোলজির অন্যতম কর্তা ভাস্কর ঘোষ, মার্কিন বিজনেস স্কুলের শিক্ষক ব্রেট আনিত্রা গিলবার্ট— সকলেরই দাবি, প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে নিয়মভাঙা প্রযুক্তির হাত ধরেই বদল আনতে হবে। ইনফোকমের আয়োজক এবিপি প্রাইভেট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও ডি ডি পুরকায়স্থ জানান, নোট বাতিলের পরবর্তী পরিস্থিতিতে এই থিম আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।

এ বার ইনফোকম পনেরো বছরে পা দিল। ১২০০ প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন। বক্তা ১২০ জন। ভারত ছাড়াও বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটানের ২০০ প্রযুক্তিবিদ অনুষ্ঠানে সামিল হয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন