প্রতীকী ছবি।
লটারি নীতিতে আমূল বদল আনল রাজ্য সরকার। গত ১৪ মে থেকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য লটারি প্রতিদিনের খেলা চালু করল। এত দিন বছরে ৪৮টি সাপ্তাহিক এবং ছ’টি এক কোটি টাকা পুরস্কারের বাম্পার লটারির খেলা হত। এখন থেকে রোজের লটারির সঙ্গে বাম্পার লটারি গুলিও বহাল থাকবে।
অর্থ দফতর সূত্রের খবর, বঙ্গলক্ষ্মী তিস্তা, তোর্সা, রায়ডাক, বঙ্গভূমি ভাগিরথী, অজয় এবং বঙ্গশ্রী দামোদর, ইছামতী নামে সাতদিনের খেলা চলবে। প্রতিদিন ৬ টাকা দামের ৩০ লক্ষ টিকিট বিক্রি করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এক অর্থ কর্তার কথায়, ‘‘টিকিট বিক্রি করে প্রতিদিন ১.৮ কোটি টাকা আয় হচ্ছে। তার মধ্যে ৯৯ লক্ষ টাকা পুরস্কার মূল্য হিসাবে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ১.২ লক্ষ ক্রেতাকে এই টাকা ভাগ করে দেওয়া হবে। সর্বোচ্চ পুরস্কার মূল্য রাখা হয়েছে ৩ লক্ষ টাকা।’’
অর্থ দফতরের এক কর্তা জানান, গত আর্থিক বছরে লটারি থেকে ১৭ কোটি টাকা আয় হয়েছে। এ বার রোজের লটারি চালু করে অন্তত ১৩০ কোটি রোজগার হবে। পরবর্তীকালে তা ১০০০ কোটি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
নবান্নের খবর, এ রাজ্যে লটারির টিকিট বিক্রির বাজারের মাত্র এক শতাংশ এখন ‘পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য লটারির’ দখলে। বাকি বাজার অন্য রাজ্য লটারির দখলে। ফলে এ রাজ্য থেকে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা রাজস্ব তুলে নিয়ে যাচ্ছে উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণের কিছু রাজ্য। সেই বাজার ধরতেই রাজ্য সরকারও রোজ লটারি খেলা চালু করছে।
নবান্নের এক শীর্ষ কর্তার কথায়,‘‘জিএসটি পরবর্তী সময়ে রাজ্যকে নিজের আয় আরও বাড়াতে হবে। লটারি যখন চলছেই তখন কেন সরকার সেখান থেকেও আয় বাড়াবে না?’’
নবান্নের কর্তারা জানাচ্ছেন, এ রাজ্যে রোজ ৮ থেকে ১০ কোটি লটারি টিকিট বিক্রি হয়। তার ৯৯ ভাগই ভিন রাজ্যের লটারি। কারণ, অন্য রাজ্য প্রতিদিন খেলা চালায়। রাজ্য লটারির খেলা হত সাপ্তাহিক। এ ছাড়া ১ জানুয়ারি, রথযাত্রা, দোল, পয়লা বৈশাখ, দীপাবলী এবং পুজোতে এক কোটির বাম্পার চালু আছে। এখন রাজ্য লটারির যে পরিমাণ টিকিট বিক্রি হয় তার মাত্র ৩৫% টাকা পুরস্কার দেওয়া হয়। সেই ব্যবস্থা বদলে এখন প্রতিদিনের লটারি চালু এবং টিকিট বিক্রির ৫৫% টাকা পুরস্কার হিসাবে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। তা দ্রুত দেবে সরকার।
এক কর্তার কথায়,‘‘কেরলে লটারি থেকে বছরে গড়ে ৫০০০ কোটি টাকা আয় হয়। বাংলার আয় মাত্র ১৭ কোটি। এখন আয় আরও বাড়বে।’’