সংবাদমাধ্যমে ‘ফাঁস’ হওয়া এনএসএসও-র রিপোর্টে দেশে কর্মসংস্থানের বেহাল দশার ছবি উঠে আসায় বিতর্ক হয়েছিল। সূত্রের খবর, শুক্রবার সেই রিপোর্ট সরকারি ভাবে প্রকাশ হতে পারে। তার আগে বৃহস্পতিবার কলকাতায় আর্থ-সামাজিক পরিসংখ্যান প্রকাশ না-করা ও তার যুক্তিপূর্ণ ব্যাখ্যা না-দেওয়ায় সরকারি ব্যবস্থাকে বিঁধলেন পরিসংখ্যান মন্ত্রকের প্রাক্তন সচিব প্রণব সেন। তাঁর দাবি, এ ধরনের জরুরি তথ্য কেন প্রকাশ করা হচ্ছে না, তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা না-দিলে ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে।
এর আগে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন বলেছিলেন, বিশ্বকে বোঝানো উচিত যে, তথ্যে কারচুপি করা হচ্ছে না। পরিসংখ্যানে স্বচ্ছতার কথা বলেন আইএমএফের মুখ্য অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথও। প্রণববাবুর প্রশ্ন, এনএসসি এবং এনএসএসও ওই রিপোর্টকে ঠিক বললেও, কেন তা প্রকাশ করা বা তার কারণ জানানো হয়নি? পরিসংখ্যান মন্ত্রকের বদলে কেন অর্থ মন্ত্রক ও নীতি আয়োগ তা নিয়ে মত দিয়েছে? পুরো ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা জরুরি।
এনএসএসও-র রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ২০১৭-১৮ সালে দেশে বেকারত্ব ছিল ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ। কেন্দ্রের অবশ্য দাবি ছিল সেটি খসড়া। এ দিন ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্যাল এডুকেশন সেন্টারের সমাবর্তনের পরে প্রণববাবুর দাবি, রিপোর্টটি প্রকাশ না হলে অসংগঠিত ক্ষেত্রের ছবি পরিষ্কার হবে না। তাঁর মতে, ঠিক পরিসংখ্যান না থাকলে আর্থিক কর্মকাণ্ডের দিশা মেলা কঠিন। এতে লগ্নির ঝুঁকি বাড়ে। নীতি তৈরিতে সমস্যা হয়। তাই সরকারি পরিসংখ্যান জরুরি। তার অভাবে বেসরকারি পরিসংখ্যানে ভরসা বাড়া ঠিক নয় বলেও তাঁর মত।
বেকারত্ব, বৃদ্ধি-সহ নানা সরকারি পরিসংখ্যান নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। খোদ পরিসংখ্যান মন্ত্রকের সমীক্ষা বলেছিল, যে তথ্যের উপরে নির্ভর করে জিডিপি হিসেব হয়, তাতে নাম থাকা বহু সংস্থার খোঁজ মেলেনি। এ দিন আবার মন্ত্রকেরই দাবি, অনেক সময়ে পরে দেখা গিয়েছে সংস্থাগুলি ব্যবসা বদল করেছে। সব মিলিয়ে মোদী সরকারের দ্বিতীয় দফার শুরুতেও তথ্য নিয়ে বিতর্ক থাকছে।