প্রতীকী ছবি।
যে ভয়টা পাচ্ছিল ভারত, শেষ পর্যন্ত সত্যি হল সেটাই। আমেরিকা ইস্পাতে ২৫% আমদানি শুল্ক চাপানোয়, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় উৎপাদিত ওই পণ্য বন্যার মতো ঢুকছে ভারতের বাজারে। আঘাত হানছে সন্ত্রস্ত দেশীয় ইস্পাত উৎপাদনকারীদের স্বার্থে। এতটাই যে, ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কেন্দ্র অবিলম্বে পদক্ষেপ (সেফগার্ড) করার কথা ভাবছে।
তবে রেলপথ ও নির্মাণ প্রকল্প গড়তে যে উঁচু মানের ইস্পাত লাগে, সেই চাহিদা দেশীয় সংস্থাগুলি মেটাতে পারে না। ফলে আমদানি আটকালে তার জোগানে টান পড়তে পারে বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের। সে ক্ষেত্রে আগামী দিনে ইস্পাত আমদানি রোখার সরকারি পদক্ষেপ পরিকাঠামো ও নির্মাণ সংস্থাগুলির পক্ষে বুমেরাং হবে কি না, উঠছে সেই প্রশ্নও।
ইস্পাত মন্ত্রকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে (এপ্রিল-জুন) দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ভারতে ইস্পাত আমদানি বেড়েছে গত বছরের তুলনায় ৩১%। জাপানের ক্ষেত্রে তা ৩০%। ইস্পাত মন্ত্রী চৌধুরী বীরেন্দ্র সিংহের দাবি, আমদানি এতটাই বেশি যে, নয়াদিল্লি তাতে রাশ টানতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। সিংহের দাবি, ‘‘বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই দুশ্চিন্তা আছে। যদি কিছু পদক্ষেপ করতেই হয়, দু’বার ভাবব না।’’ যদিও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়ম অনুযায়ী, দেশীয় শিল্পের স্বার্থ রক্ষার লক্ষ্যে আমদানি নিয়ন্ত্রণের মতো এই ধরনের পদক্ষেপ সব সময়ই সাময়িক হয়।
সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য মহলের দাবি, মন্ত্রীর পদক্ষেপের ইঙ্গিত তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষত সরকারি তথ্য যেখানে স্পষ্ট জানিয়েছে, ওই তিন মাসে বিদেশি ইস্পাত পণ্যের জোগান বেড়ে পৌঁছেছে ২১ লক্ষ টনে। গত বছরের চেয়ে ১৫% বেশি। শুধু তা-ই নয়, কোরীয় আয়রন অ্যান্ড স্টিল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, রফতানির নিরিখে ভারত ইতিমধ্যেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের মার্কিন মুলুককে পেছনে ফেলে দক্ষিণ কোরিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম বাজারের তকমা পেয়েছে।
ইস্পাত মন্ত্রকের হিসেব অনুযায়ী, গত এপ্রিল থেকে জুন ভারতীয় রেল তাদের ব্যবহারের জন্য ১৮ হাজার টনের বেশি ইস্পাত পণ্য আমদানি করেছে। গত বছর যা ছিল ৫০০ টন। আর নির্মাণে এ বার আমদানিকৃত ইস্পাত কাজে লেগেছে আগের বারের থেকে দ্বিগুণ, প্রায় ২২ হাজার টন।