CESC

সিইএসসি-র বিল নিয়ে এখনও কিছু ধন্দ বহাল

সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন, এত দিনেও সিইএসসি কেন বিষয়গুলি স্পষ্ট করতে পারল না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২০ ০৫:২৫
Share:

পরীক্ষামূলক ভাবে শহরে নতুন ওভারহেড কেব্‌ল লাইন বসাচ্ছে সিইএসসি।

এপ্রিল-মে মাসের অনাদায়ি ইউনিটের টাকা এখন না-নিয়ে, শুধু জুনের গড় বিদ্যুৎ খরচের নতুন বিল চলতি সপ্তাহ থেকে পাঠাবে বলে জানিয়েছে সিইএসসি। কিন্তু গ্রাহকদের একাংশের অভিযোগ, কিছু ক্ষেত্রে ধোঁয়াশা রয়েই গিয়েছে। যেমন, এপ্রিল-মে মাসের টাকাটা কবে, কী ভাবে নেওয়া হবে, যাঁরা জুনের অস্বাভাবিক চড়া বিল ভুল বলে দাবি করছিলেন, তাঁদের সমস্যা মেটানো হবে কী করে, জুলাইয়ের বিল ঠিক কতটা পিছোবে ইত্যাদি। অনেকের দাবি, শুধু জুনের টাকা দিতে বলায় আপাতত কিছুটা সুবিধা হলেও, এপ্রিল-মে মাসের অনাদায়ি ইউনিটের বকেয়ার খাঁড়াটি ঘাড়ে ঝুলিয়েই রাখা হয়েছে। তার উপরে জুলাইয়ের বিলও পিছিয়ে যাওয়ায়, সব বকেয়ার চাপ কী ভাবে ও কতটা ধাক্কা দেবে, সেই ধন্দও রক্তচাপ বাড়াচ্ছে। সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন, এত দিনেও সিইএসসি কেন বিষয়গুলি স্পষ্ট করতে পারল না।

Advertisement

সিইএসসি অবশ্য বুধবারই জানায়, এপ্রিল, মে-র বিদ্যুৎ খরচের অনাদায়ি অংশ আদায় নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। বৃহস্পতিবার সংস্থার দাবি, গ্রাহকদের বাকি প্রশ্নগুলির উত্তরও ঠিক সময় জানানো হবে। পরবর্তী বিলগুলি নির্দিষ্ট সময় অন্তরই মিলবে, যাতে কোনও অসুবিধা না হয়। এমন ভাবে বিল হবে না, যা জুনের মতো বেশি মনে হতে পারে। তবে এর পরেও যদি বিল নিয়ে প্রশ্ন থাকে, ফোন করলে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হবে।

রাজ্যে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সংগঠন অ্যাবেকার সাধারণ সম্পাদক প্রদ্যুৎ চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘শুধু জুনের বিদ্যুৎ খরচ ধরে বিল আসবে বলে গ্রাহকদের খুশি হওয়ার কারণ নেই। এপ্রিল, মে-র অনাদায়ি অংশ নিয়ে ধোঁয়াশাই থাকল। ওই টাকা সিইএসসি যেমন ‘এখন নিচ্ছি না’ বলে জানিয়েছে, তেমন ‘আমরাও আর দিচ্ছি না’ স্লোগান তুলে জনমত তৈরি করব।’’ বিদ্যুৎ মাসুল বৃদ্ধি বিরোধী নাগরিক মঞ্চের আহ্বায়ক প্রসেনজিৎ বসুর আশঙ্কা, অনাদায়ি অংশটা যখনই অন্য মাসে চাপবে, তখনই ফের গ্রাহকেরা চড়া বিলে নাজেহাল হবেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘জুনের বিল নিয়ে সিইএসসি এত সময় নেওয়ায় জটিলতা ও ধন্দ বাড়ল। কারণ, মিটার রিডিং পুরোদমে চলছে। কিন্তু জুনের বিল বকেয়া থাকায় জুলাইয়েরটাও বাকি পড়েছে। অথচ অগস্ট শেষ হতে চলল।’’

Advertisement

প্রশ্ন যেখানে

• যাঁরা বলেছিলেন এত টাকা বিল হতে পারে না, তাদের ক্ষেত্রে ভুল শোধরানোর চেষ্টা দেখা গেল না তো? এপ্রিল-মে মাসের বিল স্থগিত রাখা হল, কিন্তু হিসেব সংশোধন হল কি?

• এপ্রিল-মে মাসের বিলের যে অনাদায়ী টাকার কথা বলা হচ্ছে, সেটা কবে নেওয়া হবে এবং কী ভাবে?

• ওই টাকা কি ফের কোনও মাসের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হবে? তা হলে তো জুনের মতো ফের অস্বাভাবিক চড়া অঙ্কের বিল আসার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে!

• অগস্টের প্রায় শেষে এসে জুনের টাকা দিলে, জুলাইয়ের বিল সম্পর্কে পরিকল্পনা কি?

• এ ভাবে সবটা পিছিয়ে যাওয়ার ফলে বিদ্যুৎ বিলের প্রতি মাসের পুরো হিসেবটাই গুলিয়ে গেলে আখেরে গ্রাহককেই ভুগতে হবে না তো?

• জুনের নতুন বিল পাঠানোর সিদ্ধান্তের প্রায় মাস খানেক পরেও সব ধোঁয়াশা কাটানো হল না কেন?

সিইএসসি জানিয়েছে, এপ্রিল, মে মাসের বিদ্যুৎ খরচের জন্য মিটিয়ে দেওয়া প্রভিশনাল বিলের বাইরে গ্রাহকের কাছে সংস্থার অনাদায়ি কত ইউনিট বকেয়া থাকবে, তার হিসেব জুনের নতুন বিলে থাকবে। গ্রাহক স্বার্থেই যা আপাতত স্থগিত রাখা হচ্ছে। মার্চে কারও অনাদায়ি ইউনিট থাকলে, তা-ও আপাতত নেওয়া হবে না। প্রয়োজনে বিলে তা-ও স্পষ্ট করা হবে। যাঁরা জুনের বিল জমা দিয়ে অনাদায়ি ইউনিটের টাকা মিটিয়েছেন, তাঁদের জুলাইয়ের বিল থেকে তা বাদ যাবে। তবে জুলাইয়ের মিটার রিডিং নেওয়া হলেও বিল এখন যাবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন