এক হাজার পয়েন্ট পাড়ি দিতে সেনসেক্স সময় নিল মাত্র ১০টি কাজের দিন। ৩৭,০০০ পেরিয়ে বৃহস্পতিবার পৌঁছল ৩৮,০০০ ঘরে। বিক্রির চাপে শুক্রবার তা ফের ৩৭,০০০-এর ঘরে নেমে এসেছে ঠিকই, কিন্তু হঠাৎ করে কোনও প্রতিকূল খবর না এলে অদূর ভবিষ্যতে সেনসেক্সের ফের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
শুক্রবার প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুনে শিল্পোৎপাদন বেড়েছে ৭% হারে। যা গত পাঁচ মাসে সর্বোচ্চ। এর আগে বাজার পেয়েছিল পরিকাঠামো শিল্পে উৎপাদন বৃদ্ধির খবর। সেই সঙ্গে রয়েছে কয়েকটি সংস্থার ভাল ফলাফল। এই সমস্ত খবরেই ৩৮,০০০-এর কোঠায় পা রেখেছিল সেনসেক্স। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকের ফল প্রকাশ এখন শেষ পর্যায়ে। সামনের দু’দিনে প্রকাশিত হয়ে যাবে বাকি প্রায় সব ফলাফল। সেগুলি মোটের উপর সন্তোষজনক হলেই আরও শক্তি পেতে পারে শেয়ার বাজার। সেনসেক্স ও নিফ্টি দৌড়তে পারে নতুন উদ্যমে।
বছরের প্রথম তিন মাসে কোল ইন্ডিয়ার বিক্রি ১৯,৮১০ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২২,৫৯৮ কোটি। নিট লাভও ২,৩৫১ কোটি থেকে বেড়ে হয়েছে ৩,৭৮৬ কোটি। ম্যাঙ্গালোর রিফাইনারির মুনাফা ৫৪.৫৪% বেড়ে হয়েছে ৩৬২ কোটি। গাড়ি সংস্থা মহীন্দ্রা অ্যান্ড মহীন্দ্রার নিট লাভ ৬৭% বেড়ে পৌঁছেছে ১,২৫৭ কোটিতে। আকর্ষণীয় দামে বাজারে নথিবদ্ধ হয়েছে এইচডিএফসি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের শেয়ার। প্রথম দিনেই সুযোগ করে দিয়েছে ৬৫% লাভের। আবার শততম বছরে ব্রিটানিয়া ইন্ডাস্ট্রিজ় সদস্যদের শেয়ার পিছু ৬০ টাকা দামের একটি করে বোনাস ডিবেঞ্চার ইস্যু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ডিবেঞ্চার বাজারে নথিবদ্ধ হবে।
এরই পাশাপাশি পর পর তিনটি ত্রৈমাসিকে লোকসান করেছে স্টেট ব্যাঙ্ক। মোট আয় ২,৫৮২ কোটি বাড়লেও এপ্রিল-জুনে তাদের ক্ষতি হয়েছে ৪,৮৭৬ কোটি টাকা। আগের বছর একই সময়ে ব্যাঙ্কটির নিট লাভ হয়েছিল ২,০০৬ কোটি।
খারাপ ফল সত্ত্বেও ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, তৃতীয় ত্রৈমাসিক থেকে ঘুরে দাঁড়ানো নিয়ে আশাবাদী তারা। শুধু তা-ই নয়, চতুর্থ ত্রৈমাসিক থেকে মুনাফা ঘরে তোলার ব্যাপারেও আত্মবিশ্বাসী তারা। লাভ হতে পারে গোটা অর্থবর্ষেও। স্টেট ব্যাঙ্ক ক্ষতির মুখে পড়লেও তাদের আশ্বাসবাণীতে ভর করেই শুক্রবার ব্যাঙ্কের শেয়ার দর অনেকটা বেড়েছে। উল্লেখ্য, প্রথম ত্রৈমাসিকে ব্যাঙ্কটির মোট অনুৎপাদক সম্পদ ২,২৩,৪২৭ কোটি থেকে নেমেছে ২,১২,৮৪০ কোটি টাকায়। আশার খবর সেটিও। আর এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ইউবিআইয়ের অবশ্য আয় কমেছে। বেড়েছে ক্ষতির অঙ্ক। পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের লোকসান ছুঁয়েছে ৯৪০ কোটি টাকা।
সব মিলিয়ে ভাল-মন্দয় মেশানো সপ্তাহে ভালর পাল্লা ভারী ছিল বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তাই বাজারের নতুন দৌড় নিয়ে তাঁরা আশাবাদী।
(মতামত ব্যক্তিগত)