জমি ধরে রাখতে এ বার প্রতিপক্ষের খাস এলাকায় ঢুকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ।
এক দিকে, ইট-কাঠ-পাথরের দোকান পণ্য বেচতে বেছে নিচ্ছে অনলাইন দুনিয়াকে। অন্য দিকে, নেট মারফত কেনাকাটার সংস্থাগুলি সন্তুষ্ট থাকছে না স্রেফ মাউসের ক্লিকে পণ্য বিকিয়ে। তারা মনে করছে, ক্রেতাদের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে অফলাইন বিপণির জুড়ি নেই। ফলে অস্তিত্ব রক্ষার টক্করে ক্রমশ ফিকে হচ্ছে দুই বাজারের বিভেদ। আর নেট বাজার বনাম সাধারণ বাজারের লড়াইয়ে এখন ক্রেতা টানার নতুন হাতিয়ার এটাই। যার হাত ধরে দেশের সংগঠিত খুচরো বিপণন (রিটেল) ২০১৯ সাল নাগাদ ছুঁতে চলেছে পৌনে দু’লক্ষ কোটি টাকার ব্যবসা। অর্থাৎ বাজার দখল ১৯% থেকে এক লাফে বেড়ে ২৪%। সম্প্রতি খুচরো ব্যবসার এই ছবি তুলে ধরেছে বিশেষজ্ঞ সংস্থা নাইট-ফ্র্যাঙ্ক ও রিটেলার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার (আরএআই) রিপোর্ট।
গত কয়েক বছর ধরেই সাধারণ খুচরো বাজারের ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন নেট বাজারে। বিশেষজ্ঞ সংস্থা ফরেস্টারের সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১২ সালের তুলনায় ২০১৬-তে ৪৫০% বিক্রি বাড়িয়েছে ই-কমার্স। কিন্তু নাইট ফ্র্যাঙ্কের পরিসংখ্যান বলছে, অফলাইন-অনলাইনের সেই ভেদাভেদ কমছে। যা তৈরি করছে খুচরো ব্যবসা বাড়ানোর নতুন দিশা।
শুধু যে সাধারণ বাজারই নেটকে আঁকড়ে ধরছে তা নয়। লেন্সকার্ট, জিভামে, ফার্স্টক্রাই-এর মতো অনলাইন সংস্থাও গড়ছে ইট-কাঠ-পাথরের বিপণি।
আরএআই-এর প্রধান কুমার রাজাগোপালনের মতে, এ যুগে ক্রেতাদের চাহিদা মেনে এই দুই পথকে মিলিয়ে ব্যবসা করা জরুরি। আর নাইট ফ্র্যাঙ্কের অর্থনীতিবিদ স্যমন্তক দাসের মতে, লাভ করতে চাই অনলাইন ও অফলাইন, দুই ক্ষেত্রেই জোরালো উপস্থিতি।
যে-কারণে নতুন কৌশল ছকছে কিশোর বিয়ানির ফিউচার গোষ্ঠী, টাটা গোষ্ঠীর ইনফিনিটি রিটেল থেকে শুরু করে রহেজা গোষ্ঠীর শপার্স স্টপ-সহ প্রায় সকলে। কখনও প্রযুক্তির হাত ধরে, কখনও অনলাইন সংস্থা কিনে নেট বাজারে খুঁটি পোক্ত করছে খুচরো ব্যবসা। ফলে প্রতিযোগিতার বাজারে এগিয়ে থাকতে সংস্থাগুলির বাণিজ্যিক মানচিত্রে জায়গা করে নিচ্ছে দুই বাজারই। যেমন, গৃহসজ্জার অনলাইন সংস্থা ফ্যাবফার্নিশকে কিনে নিজেদের গৃহসজ্জার ব্র্যান্ড হোমটাউন-এর সঙ্গে মেশানোর কথা বলেছেন বিয়ানি। কিংবা অনলাইন প্রযুক্তিতে টাকা ঢেলে বাজার ধরতে তৎপর শপার্স স্টপ।
আবার জিভামের প্রতিষ্ঠাতা রিচা করের দাবি, ক্রেতার কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে ইট-কাঠ-পাথরের দোকানের জুড়ি নেই। তাই ৩ বছরে ১০০টি বিপণি খুলতে চান তাঁরা। একই পথে হাঁটছে চশমা বিপণি লেন্সকার্ট ও বাচ্চাদের জিনিসের অনলাইন বিক্রেতা ফার্স্টক্রাই। সংস্থার ভাবমূর্তি তৈরিতে অফলাইন দোকানের বিকল্প নেই, মত তাদেরও।