যাত্রীর প্রয়োজন অনুযায়ী সময়ে তাঁর সামনে গাড়ি পৌঁছে দিয়ে ব্যবসার নতুন রাস্তায় হেঁটেছিল কলকাতার শিওর ট্যাক্সি। সেই ভিতের উপর দাঁড়িয়ে এ বার কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবার ব্যবসাতেও পা রাখল তারা।
কলকাতায় মিটার-চালিত ট্যাক্সির কমতি নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাদের নিত্য-নৈমিত্তিক প্রত্যাখানের ছবিই শিওর ট্যাক্সির ব্যাবসার ভিত গড়ে দিয়েছিল। কার, কখন, কোথায় ট্যাক্সি দরকার, সেই তথ্য চালকের কাছে পৌঁছে দিয়ে উভয়ের মধ্যে সংযোগ ঘটায় তারা। সংস্থা-কর্তা পিটার পুডাইটের দাবি, এ বার এই একই নীতি তাঁরা প্রয়োগ করতে চান অ্যাম্বুল্যান্সের ক্ষেত্রেও।
পিটের যুক্তি, অনেকের কাছেই অ্যাম্বুল্যান্সের নম্বর থাকে না। কিংবা থাকলেও এত ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে যে, বিপদের সময় চট করে পাওয়া শক্ত। দেখা গিয়েছে, অ্যাম্বুল্যান্সের খোঁজ পেতেই গড়ে আধ ঘণ্টা কেটে যায়। দেরি হয় হাসপাতাল পৌঁছতে।
শিওরের দাবি, কলকাতায় অ্যাম্বুল্যান্সের প্রায় ৪০০ নম্বর থাকলেও, অর্ধেকেরই ব্যবসা বন্ধ। ১০ শতাংশের গাড়ি হয় মেরামতির কাজে, অথবা চালক না থাকায় কার্যত অকেজো। ২০ শতাংশের গতিবিধি আবার নির্দিষ্ট এলাকাতেই সীমাবদ্ধ। তাই প্রয়োজনের এই জায়গায় চাহিদা-জোগানের ফাঁক ভরাট করতেই ময়দানে নামছে শিওর।
শিওর ট্যাক্সি আপাতত কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার ৬০টি অ্যাম্বুল্যান্সের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে। পিটের দাবি, দিন-রাতের কল-সেন্টাের ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্সের জোগানের বিষয়টি জানা যাবে। তিনি জানান, শহরে এখন ২০০-২৫০টি অ্যাম্বুল্যান্স চলে। তার অর্ধেকের সঙ্গে জোট বাঁধা ও চাহিদার ১৫ মিনিটের মধ্যে রোগীর কাছে সেটি পাঠানোই সংস্থার লক্ষ্য। তাঁর দাবি, এই গাঁটছড়ার ফলে আমজমতার কাছে জোগানের ক্ষেত্রটি বিস্তৃত হবে। দ্রুত অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়ার সম্ভাবনাও বাড়বে। তবে এ ক্ষেত্রেও তাদের ট্যাক্সির মতো একটু বাড়তি ভাড়া গুনতে হবে। তবে তা যাতে রোগীর পরিবারের উপর বাড়তি চাপ হয়ে না দাঁড়ায়, তা নিশ্চিত করতে চান পিট।
শিওর মানছে, অ্যাম্বুল্যান্সে জীবন-মরণ জড়িত। ফলে তা আরও দক্ষতা দাবি করে। তাদের দাবি, সাধারণ ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত তিন ধরনের অ্যাম্বুল্যান্স মিলবে তাদের কাছে। সঙ্কটজনক নয়, এমন রোগীর জন্য ট্রান্সপোর্ট অ্যাম্বুল্যান্স। বাকি দু’টি হল, বেসিক ও অ্যাডভান্স কেয়ার।