নোট নাকচের দাওয়াইয়ে আদপে আমজনতারই ভোগান্তি। কালো টাকা উদ্ধার করতে হলে, আগে ব্যবস্থা হোক বিদেশি ব্যাঙ্ক থেকে তা আনার। বিরোধীদের এই আক্রমণের মুখে মঙ্গলবার বড় সাফল্য দাবি করল কেন্দ্র। এ দিন সুইৎজারল্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি সই হওয়ায় ২০১৯ সাল থেকে ওই দেশের ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের নতুন অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য পাবে দিল্লি।
অর্থ মন্ত্রকের দাবি, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়রা যে-সব অ্যাকাউন্ট খুলবেন, সেগুলিতে লেনদেনের তথ্য সরাসরি হাতে পাবে ভারত। প্রথম বার তথ্য মিলবে ২০১৯-এর সেপ্টেম্বরে। তবে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরের আগের অ্যাকাউন্টের খুঁটিনাটি দিল্লি আপাতত পাবে না বলে জানিয়েছে ইউরোপীয় দেশটি।
গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টের গোপনীয়তা বজায় রাখায় সুইস ব্যাঙ্কগুলি প্রায় কিংবদন্তি। কিন্তু সেই একই কারণে ওই দেশ করফাঁকির স্বর্গরাজ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ উঠছিল আন্তর্জাতিক মহলে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিজে থেকেই তথ্য দেওয়ার চুক্তিতে (অটোমেটিক এক্সচেঞ্জ অব ইনফর্মেশন) সইয়ের পিছনে তার যথেষ্ট ভূমিকা আছে।
তবে সুইৎজারল্যান্ডের সঙ্গে এই চুক্তিকে প্রত্যাশিত ভাবেই কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বড় জয় হিসেবে চিহ্নিত করছে মোদী সরকার। গত লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদীর প্রতিশ্রুতি ছিল, বিদেশি ব্যাঙ্কে জমে থাকা ভারতীয়দের কালো টাকা ফিরিয়ে এনে আমজনতার অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে ভরে দেবেন তিনি। তা না-হওয়ায় তাঁকে প্রায়ই নিশানা করেন বিরোধীরা। এর পরে কালো টাকার বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে রাতারাতি নোট বাতিল করায় তাকে আখেরে সাধারণ মানুষের হয়রানির তকমাই দিয়েছেন তাঁরা। মোদী অবশ্য জানিয়েছিলেন, দেশে কালো টাকা রুখতে একসঙ্গে নোট, বেনামি সম্পত্তি ও বেআইনি সোনা কেনাকাটার উপর নজরদারি কড়া করছেন তাঁরা। আর বিদেশে কালো টাকার খোঁজ পেতে কথা বলছেন বিভিন্ন দেশের সঙ্গে।
৬ জুন জেনিভায় সুইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেন মোদী। আলোচনা করেন করফাঁকি দিয়ে সুইস ব্যাঙ্কে লুকিয়ে রাখা টাকার তথ্য পাওয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে। বিষয়টিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ১৫ জুন বিভিন্ন অফিসারের সঙ্গে কথা বলেন রাজস্ব সচিব হাসমুখ অধিয়া। এই সব কিছুর পরে তাই একে সাফল্য হিসেবেই তুলে ধরছে কেন্দ্র।