প্রতীকী ছবি।
চিন ব্যবসায় বিপত্তি ডেকে এনেছিল। আবার চিনের জন্যই সেই ধাক্কা খাওয়া ব্যবসার কিছুটা পুনরুদ্ধারের পথ দেখছে রাজ্যের চর্মশিল্প। সঙ্গে ভরসা দিচ্ছে ডলারের সাপেক্ষে দুর্বল টাকাও।
বিশ্ব জুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের জেরে রাজ্যে চামড়ার পণ্য তৈরির উপাদানে টান পড়েছে। তেমনই আবার সেই পণ্যের রফতানির ক্ষেত্রেও তৈরি হয়েছে সংশয়। তবে এরই মধ্যে চিনের ‘হারানো’ রফতানি বাজারের একাংশ ভারতের দিকে ঝোঁকায় খানিকটা ভরসা পাচ্ছে রাজ্যের চর্মশিল্প।
এ রাজ্যে তৈরি ব্যাগ, জুতো-সহ চামড়ার বিভিন্ন পণ্য ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়ার বিভিন্ন দেশে রফতানি হয়। তা ছাড়া চিন-সহ কয়েকটি দেশে চামড়ার পণ্য (মূলত আসবাবপত্র) তৈরির জন্য ‘ফিনিশড লেদার’ যায় এ রাজ্য থেকে। কাউন্সিল ফর লেদার এক্সপোর্টের (সিএলই) পূর্বাঞ্চলের চেয়ারম্যান রমেশ জুনেজা জানাচ্ছেন, চিনের বাইরে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পরে রফতানি বাজারে কিছুটা প্রভাব পড়ছে। নতুন বরাত পাওয়া নিয়েও তৈরি হয়েছে সংশয়। আর এই অবস্থায় কিছুটা ভরসা দিচ্ছে সেই চিন।
সমস্যা ও ভরসা
• করোনার দাপটে টান পড়েছে রাজ্যের চর্মশিল্পে কাঁচামালের জোগান।
• চলছে বিকল্প বাজারের খোঁজ। দিল্লি, আগরা, এমনকি তাইল্যান্ড থেকেও কেনা হচ্ছে উপাদান।
• রফতানির ক্ষেত্রে চিনের বিকল্প হিসেবে অনেকেই ভারতের খোঁজ করছে।
• ব্রিটেন, জার্মানি, আমেরিকা থেকে নতুন বরাত পাচ্ছেন এ রাজ্যের রফতানি ব্যবসায়ীরা।
কী ভাবে?
রমেশ জানান, বিশ্বের নানা দেশে চর্মপণ্য রফতানি করে চিনও। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণের জেরে তাদের রফতানি ধাক্কা খেয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে সংশয় তৈরি হলেও রফতানির বাজার একেবারে থমকে যায়নি। ফলে চিন থেকে রফতানির ঘাটতি তৈরি হওয়ায় বিকল্প হিসেবে অনেক দেশই ভারতের খোঁজ করছে।
সিএলই-র হিসেবে, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে এ রাজ্য থেকে ৬০০০ কোটি টাকার চর্মপণ্য রফতানি হয়েছিল। চলতি অর্থবর্ষের এপ্রিল-ডিসেম্বর তা ৭% কম হয়েছে। তার পরেই শুরু হয়েছে করোনাভাইরাসসের প্রভাব। বিকল্প বাজার থেকে বরাত পেলে পরিস্থিতির কতটা উন্নতি হয়, সে দিকেই এখন তাকিয়ে রাজ্যের চর্মশিল্প। পাশাপাশি, রফতানি সামান্য কমলেও শক্তিশালী ডলার সেই ক্ষতি পুষিয়ে দেবে বলে আশা তাদের।
অন্য দিকে, চিন থেকে বিভিন্ন কাঁচামালের জোগান ধাক্কা খাওয়ায় সমস্যায় পড়েছে এ রাজ্যের চর্মশিল্প। জুনেজা জানান, আরও দিন পনেরোর মতো মজুত ভাণ্ডার রয়েছে। আপাতত দিল্লি, আগরার পাশাপাশি তাইল্যান্ড থেকেও কাঁচামাল আমদানি করে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা চলছে।