টাটা মোটরসের বাজি এ বার বিকল্প জ্বালানির বাস

পুণে থেকে ফিরে। চার চাকার ছোট যাত্রী গাড়ির বাজারে লড়াইটা শুরু হয়েছে বেশ কিছু দিন আগেই। এ বার তা দানা বাঁধার ইঙ্গিত বাসের মতো গণ-পরিবহণ ক্ষেত্রেও। যেখানে পেট্রোল-ডিজেলের বদলে গাড়ি শিল্পের বাজি বিকল্প জ্বালানি— পুরোদস্তুর বৈদ্যুতিক (ইলেকট্রিক), ডিজেল বা প্রাকৃতিক গ্যাস ও বিদ্যুতের মিশেল (হাইব্রিড), হাইড্রোজেন গ্যাস (ফুয়েল সেল) ও প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি)।

Advertisement

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৪৪
Share:

নতুন বাসের প্রদর্শনে সংস্থার কর্তা গুন্টার বুশেক এবং পিশারোদি।

পুণে থেকে ফিরে। চার চাকার ছোট যাত্রী গাড়ির বাজারে লড়াইটা শুরু হয়েছে বেশ কিছু দিন আগেই। এ বার তা দানা বাঁধার ইঙ্গিত বাসের মতো গণ-পরিবহণ ক্ষেত্রেও। যেখানে পেট্রোল-ডিজেলের বদলে গাড়ি শিল্পের বাজি বিকল্প জ্বালানি— পুরোদস্তুর বৈদ্যুতিক (ইলেকট্রিক), ডিজেল বা প্রাকৃতিক গ্যাস ও বিদ্যুতের মিশেল (হাইব্রিড), হাইড্রোজেন গ্যাস (ফুয়েল সেল) ও প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি)। এ বার সেই দৌড়ে সামিল হতেই পা বাড়াল টাটা মোটরস। আনল বিকল্প জ্বালানির আধ ডজন বাস ও ছোট বাণিজ্যিক গাড়ি।

Advertisement

ইতিমধ্যেই দেশে তাদের প্রথম বৈদ্যুতিক বাসের উপর থেকে পর্দা তুলেছে অশোক লেল্যান্ড। ভলভো কোমর বেঁধে লেগেছে হাইব্রিড বাস তৈরিতে। আর সেই পথে হেঁটেই পুণের কারখানায় টাটা মোটরস প্রদর্শন করল হাইব্রিড, ইলেকট্রিক, ফুয়েল সেল এবং এলএনজি-চালিত বাস। এর মধ্যে মুম্বই মেট্রোপলিটন রিজিয়ন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি-র (এমএমআরডিএ) বরাত দেওয়া ২৫টি হাইব্রিড বাস আগামী অর্থবর্ষের গোড়াতেই তাদের হাতে দেবে সংস্থাটি। টাটা মোটরসের দাবি, এটিই ভারতে তৈরি প্রথম নিচু মেঝের (লো ফ্লোর) বাস। বরাত পেলে বিকল্প জ্বালানির বাকি বাসগুলিও বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন করা যাবে বলে দাবি সংস্থা-কর্তাদের। সে ক্ষেত্রে পুরোদস্তুর বৈদ্যুতিক বাসের দাম ১.৬-২ কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

বস্তুত, দূষণ রুখতে পেট্রোল-ডিজেলের বিকল্প জ্বালানি ব্যবহারে জোর দিচ্ছে সারা বিশ্বই। ছোট যাত্রী গাড়ির ক্ষেত্রে কিছু বহুজাতিক সংস্থা সফল ভাবে সেই পরিবেশ-বান্ধব প্রযুক্তি বাস্তবায়িত করতে শুরুও করেছে। কিন্তু খরচসাপেক্ষ হওয়ায় তা এখনও তেমন ছড়ায়নি। বিশেষত বাণিজ্যিক গাড়ি এত দিন থেকে গিয়েছিল এর থেকে বহু যোজন দূরে। তবে এই ছবিটাও যে দ্রুত বদলাতে শুরু করেছে, সে বার্তা দিচ্ছে গাড়ি শিল্পই।

Advertisement

সংস্থাগুলিকে এই ব্যবসা বাড়ানোয় উৎসাহ দিতে এখন কেন্দ্রের ‘ফাস্টার অ্যাডপশন অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং অব ইলেকট্রিক ভেহিক্‌লস’ বা ‘ফেম’ প্রকল্পে হাইব্রিড গাড়ি বা বাসে ভর্তুকির ব্যবস্থা আছে। কিন্তু পুরোপুরি বৈদ্যুতিক গাড়িতে ক্রেতা সেই আর্থিক সুবিধা পান কিছু ক্ষেত্রে। টাটা মোটরসের এগ্‌জিকিউটিভ ডিরেক্টর (বাণিজ্যিক গাড়ি) রবীন্দ্র পিশারোদি জানান, বৈদ্যুতিক বাসেও এই সুবিধা দিতে গাড়ি শিল্প কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানিয়েছে। তাঁদের আশা, মার্চের মধ্যে এ নিয়ে নীতি তৈরি হবে।

শুধু বাস নয়, টাটাদের আশা, ভবিষ্যতে বিকল্প জ্বালানির ছোট বাণিজ্যিক গাড়িরও বাজার তৈরি হবে। তাই তিনটি গাড়ির বৈদ্যুতিক সংস্করণ দেখিয়েছে সংস্থা। এস, আইরিশ ও ম্যাজিক। বরাত পেলেই সেগুলি তৈরি হবে বাণিজ্যিক ভাবে। তৈরি হচ্ছে মাঝে ‘ভেস্টিবিউল’ দিয়ে জোড়া দুই কামরার বড় বাস-ও।

বাস তৈরির ক্ষেত্রে আধুনিক নকশার চাহিদাকেও গুরুত্ব দিচ্ছে টাটা। সংস্থার প্রধান নকশাবিদ প্রতাপ বোস জানান, বিদেশ থেকে আনা বিশেষ কৃত্রিম মাটি (ইন্ডাস্ট্রিয়াল ক্লে) দিয়ে বাসের নকশা তৈরি হচ্ছে পুণে কারখানার ‘ডিজাইন স্টুডিও’-তে। নিজের গাড়িতে সফরের মতো আরাম যাতে বাসেও মেলে, সেই বন্দোবস্ত করাই এখন তাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, বলছে টাটা মোটরস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন