গত বছরই ইউরোপে লোকসানে চলা ইস্পাতের রেল ইত্যাদি তৈরির ব্যবসা গ্রেবুল ক্যাপিটালকে ১ পাউন্ডে বিক্রি করতে রাজি হয়েছিল টাটা স্টিল-ইউকে। আর এ বার মাত্র ১ টাকায় ঋণের ভারে জর্জরিত মুন্দ্রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সিংহভাগ অংশীদারি গুজরাতের মতো রাজ্যকে বিক্রির প্রস্তাব দিল টাটা গোষ্ঠীরই সংস্থা টাটা পাওয়ার।
গুজরাতের এই কেন্দ্রে ৪,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। যার বেশিরভাগটাই কেনে গুজরাত, মহারাষ্ট্র-সহ বিভিন্ন রাজ্য। তাই তাদের কাছেই কেন্দ্রের ৫১% মালিকানা বিক্রির প্রস্তাব রেখেছে টাটা পাওয়ারের শাখা কোস্টাল গুজরাত পাওয়ার।
তবে বিক্রির শর্ত একটাই, এখানে উৎপাদিত বিদ্যুতের দাম স্থির হবে সংস্থার সব খরচ হিসেবের মধ্যে ধরে। অর্থাৎ, ইতিমধ্যেই ধার্য দামের তুলনায় তা বেশি হবে। আর টাটাদের হাতে থাকবে বাকি অংশীদারি এবং কেন্দ্রটি পরিচালনার ভার। রাজ্যগুলিকে পাঠানো চিঠিতে টাটা পাওয়ারের দাবি, ভবিষ্যতে এই কেন্দ্রটি বন্ধ এবং ঋণ-খেলাপের জেরে অনুৎপাদক সম্পদে পরিণত হওয়া থেকে আটকাতেই মালিকানা বিক্রির এই প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে মুন্দ্রার এই কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ইউনিট পিছু ২.২৬ টাকা দরে নিলাম জেতে টাটা গোষ্ঠীর সংস্থাটি। তাদের ইচ্ছে ছিল ইন্দোনেশিয়ায় তাদের নিজস্ব খনি থেকে এই কেন্দ্রের জন্য কয়লা আমদানি করা। কিন্তু ২০১০ সালে ইন্দোনেশিয়া সরকার নতুন রফতানি নীতিতে জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই রফতানি করতে হবে সংস্থাগুলিকে। ফলে বাড়ে কয়লা আমদানি খরচ। কিন্তু সেই অনুপাতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর জন্য টাটাদের আর্জি খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
এর পর থেকেই লোকসানের বোঝায় ধুঁকছে মুন্দ্রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ক্রমাগত বেড়ে চলেছে ঋণ। এখন যার অঙ্ক প্রায় ১০,১৫৯ কোটি টাকা। প্রকল্পের জন্য এখন আর নতুন করে ধার দিতে রাজি নয় ঋণদাতারা। তাই সব দিক বিচার করে শেষে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে টাটা পাওয়ার।