জটিলতা এ বার ম্যাট নিয়ে

বিদেশি বিনিয়োগ টানতে করনীতি স্পষ্ট করার আর্জি

শুধু শুকনো প্রতিশ্রুতিতে চিঁড়ে ভিজবে না। দেশে লগ্নিবান্ধব পরিবেশ তৈরির জন্য আগে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সামনে করনীতি স্পষ্ট করুক মোদী সরকার। কেয়ার্নকে করের নোটিস পাঠানোর পরে এ বার বিভিন্ন বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থার দরজায় যে ভাবে মিনিমাম অল্টারনেটিভ ট্যাক্সের (ম্যাট) পরোয়ানা পৌঁছচ্ছে, তাতে আশঙ্কিত হয়েই এ নিয়ে জোরালো দাবি তুলছেন মার্কিন ও ইউরোপীয় বিনিয়োগকারীরা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:১৭
Share:

শুধু শুকনো প্রতিশ্রুতিতে চিঁড়ে ভিজবে না। দেশে লগ্নিবান্ধব পরিবেশ তৈরির জন্য আগে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সামনে করনীতি স্পষ্ট করুক মোদী সরকার। কেয়ার্নকে করের নোটিস পাঠানোর পরে এ বার বিভিন্ন বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থার দরজায় যে ভাবে মিনিমাম অল্টারনেটিভ ট্যাক্সের (ম্যাট) পরোয়ানা পৌঁছচ্ছে, তাতে আশঙ্কিত হয়েই এ নিয়ে জোরালো দাবি তুলছেন মার্কিন ও ইউরোপীয় বিনিয়োগকারীরা।

Advertisement

পুরনো লেনদেনে কর বসানো নিয়ে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি বহুজাতিকের সঙ্গে সম্পর্ক তেতো হয়েছে দিল্লির। ভোডাফোন, শেল, মাইক্রোসফটের পরে এই তালিকায় সাম্প্রতিকতম সংযোজন কেয়ার্ন ইন্ডিয়া এবং কেয়ার্ন এনার্জি। আর এ সবের পরে এ বার বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে আসছে ম্যাট।

বেশ কয়েকটি বিদেশি সংস্থার দাবি, গত বছরের শেষ দিক থেকে হঠাৎই ম্যাট দেওয়ার চিঠি পেতে শুরু করেছে তারা। সংস্থাগুলির অভিযোগ, প্রথমত যে কর জমা দিতে বলা হয়েছে, তা তাদের দেওয়ার কথা নয়। আর দ্বিতীয়ত, এ নিয়ে ধোঁয়াশা থাকায় আগামী দিনে সমস্ত বিদেশি লগ্নির ক্ষেত্রেই এই সমস্যা বারবার ফিরে আসার সম্ভাবনা। তাই অবিলম্বে ম্যাট নিয়ে কেন্দ্রের অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির কাছে আর্জি জানাচ্ছে তারা।

Advertisement

দেশীয় সংস্থাগুলিকে যাতে তাদের মুনাফার উপর অন্তত একটি নির্দিষ্ট হারে কর দিতেই হয়, তার জন্য ম্যাট চাপায় কেন্দ্র। কিন্তু যে সমস্ত বিদেশি সংস্থা ভারতে পুঁজি ঢালে অথচ তাদের কাজ-কারবার এখানে তেমন থাকে না, সেগুলিকে সাধারণত এর বাইরেই রাখা হয়। কিন্তু এ ধরনের কিছু সংস্থার অভিযোগ, সম্প্রতি কেন্দ্রের কাছ থেকে ম্যাট জমা দেওয়ার নির্দেশ পেয়েছে তারা। এই সংস্থাগুলির দাবি, এ দেশে টাকা ঢালা বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলিকে স্বল্পমেয়াদি শেয়ার লেনদেনে মুনাফার জন্য কর দিতে হয় ১৫%। ঋণপত্রের ক্ষেত্রে তা ৫%। কিন্তু ম্যাট জমার যে চিঠি এসেছে, তাতে মুনাফায় কার্যত ২০% কর গুনতে হবে বলে তাদের অভিযোগ।

শুধু তা-ই নয়। সংস্থাগুলির দাবি, ম্যাট নিয়ে কেন্দ্রের নীতি স্পষ্ট না-হওয়ার কারণেই এই সমস্যা। কারণ, এ বার বাজেটে জেটলি জানিয়েছেন, ২০১৫ সালের এপ্রিলে ওই ধরনের বিদেশি সংস্থাগুলির মূলধনী লাভ ম্যাটের আওতার বাইরে থাকবে। কিন্তু বিদেশি সংস্থাগুলির মতে, বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে সেখান থেকেই। কারণ, কর দফতরের কর্তারা মনে করছেন, পুরনো আর্থিক বছরগুলির জন্য তা বসানো যাবে। দেখা যাচ্ছে, অনেক সংস্থাই নোটিস পেয়েছে ২০১১-’১২ অর্থবর্ষের জন্য। আর সেই কারণেই ওই বিদেশি সংস্থাগুলির দাবি, অবিলম্বে ম্যাট নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করুক মোদী-সরকার। জানাক যে, তাদের আগের, এখনকার বা ভবিষ্যতের কোনও মূলধনী লাভেই ম্যাট লাগবে না।

সম্প্রতি কেয়ার্ন এনার্জিকে ১০,২৪৭ কোটি টাকা এবং কেয়ার্ন ইন্ডিয়াকে ২০,৪৯৫ কোটি টাকা করের নোটিস পাঠায় আয়কর দফতর। তা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন ব্রিটিশ বিদেশ সচিব ফিলিপ হ্যামন্ড। তিনি বলেন, ভারতকে লগ্নির আকর্ষণীয় গন্তব্য করে তুলতে আগে পুরনো লেনদেনের উপর কর বসানো বন্ধ করতে হবে। ওই নোটিস লগ্নিকারীদের আস্থায় টোল ফেলেছে বলে দাবি ইউকে-ইন্ডিয়া বিজনেস কাউন্সিলেরও। এখন ম্যাট নিয়েও ওই একই কথা বলছে সে বিষয়ে সমস্যার মুখে পড়া বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন