ওএনজিসি-র উপরে করের জল্পনা, বিক্ষোভ পথে

সংস্থার লাভ নিংড়ে ক্ষতে মলমের চিন্তা

সম্প্রতি তেলের দরে রাশ টানার জন্য দ্রুত সমাধান খোঁজার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৮ ০২:১৫
Share:

তেলের দাম আকাশ ছোঁয়ার পরেও নাগাড়ে তার বৃদ্ধি নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন বিরোধীরা। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দিকে টুইট-চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। ক্রমশ আরও জোরালো হচ্ছে আমজনতাকে কিছুটা অন্তত সুরাহা দিতে উৎপাদন শুল্ক ছাঁটাইয়ের দাবি। কিন্তু এই সমস্ত কিছুর পরেও দিনের শেষে ফের দাম বাড়ল পেট্রল, ডিজেলের। কলকাতায় লিটারে ৩৫ ও ২২ পয়সা।

Advertisement

সম্প্রতি তেলের দরে রাশ টানার জন্য দ্রুত সমাধান খোঁজার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। মোদী সরকারেরও দাবি, এর নাকি একেবারে পাকাপাকি সমাধান খুঁজছে তারা। কিন্তু এ দিনও তেমন কোনও ঘোষণা সরকারের তরফে হয়নি। তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান আটকে থেকেছেন শুকনো প্রতিশ্রুতিতেই।

তারই মধ্যে জোর জল্পনা, দরে রাশ টানতে নাকি ওএনজিসি-র মতো রাষ্ট্রায়ত্ত তেল উত্তোলন সংস্থার উপর কর বা সেস বসাবে কেন্দ্র। যাতে সেই বাবদ হাতে আসা টাকা তেল বিপণন সংস্থাগুলিকে দিয়ে পেট্রল, ডিজেলের দামে বাঁধ দিতে পারে তারা। কেন্দ্রের দাবি, তাতে ঘাটতির লাঠি ভাঙবে না। আবার মারা যাবে দাম বৃদ্ধির সাপকেও। শোনা যাচ্ছে, এই ফর্মুলায় নাকি এক বছর একই দামে তেল জোগানোর প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে ওএনজিসিকে। যদিও এই দাওয়াই কতটা কার্যকর, প্রশ্ন রয়েছে তা নিয়ে।

Advertisement

বিক্ষোভেও বৃদ্ধি

• নাগাড়ে তেলের দাম বাড়া নিয়ে রাস্তায় কংগ্রেস। আক্রমণে অন্যান্য বিরোধী দলও। পুড়ল তেলমন্ত্রীর কুশপুতুল।

• আমজনতাকে সুরাহা দিতে ভ্যাট ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটুক রাজ্যগুলি, সওয়াল এ বার নীতি আয়োগের।

• দ্রুত সমস্যা সমাধানের দাওয়াই দেবে কেন্দ্র, ফের আশ্বাস তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের।

• মূল্যায়ন সংস্থা ক্রিসিলের মতে, মোদী সরকারের শেষ বছরে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ তেলের দামই।

• এত কিছুর পরেও শুক্রবারের জন্য ফের দাম বাড়ল পেট্রল, ডিজেলের। কলকাতায় লিটারে যথাক্রমে ৩৫ ও ২২ পয়সা।

চর্চায় ওএনজিসি

• জোর জল্পনা, তেলের দরে রাশ টানতে তেল উত্তোলন সংস্থা ওএনজিসি-র উপরে কর বসাতে পারে কেন্দ্র।

• বিশ্ব বাজারের দরেই এ দেশে অশোধিত তেল বিক্রি করে ওএনজিসি। ওই দর ব্যারেলে ৭০ ডলার পেরোলেই নাকি কর বা সেস চাপবে সংস্থাটির উপর।

• সে ক্ষেত্রে ওএনজিসি যে তেল উৎপাদন করে, তার জন্য ৭০ ডলারই দাম নেবে তারা। বাকিটা যাবে কেন্দ্রের ঘরে। দামে রাশ রাখতে তা ব্যবহার করবে কেন্দ্র।

• যুক্তি, তাতে আইওসি-র মতো তেল বিপণন সংস্থার ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়া যাবে ঘাটতি না বাড়িয়েই।

কিন্তু প্রশ্ন

• ৮০ শতাংশ অশোধিত তেলই তো আমদানি হয় বিদেশ থেকে। শুধু ওএনজিসি-র উপরে কর বসিয়ে সামাল দেওয়া যাবে কতটুকু?

• ঘাটতি কমাতে গিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ‘হাত মোচড়ানো’ কি ঠিক পথ? এর পরে বিলগ্নিকরণ হলে, তার শেয়ার ঠিক দাম পাবে তো?

• বাজারে নথিভুক্তির সময়ে অ্যারামকোর শেয়ার যাতে ভাল দাম পায়, সে জন্য তেলের দর অন্তত ৮০ ডলারে রাখতে মরিয়া সৌদি আরব। দর বাড়াচ্ছে ইরান ঘিরে জটিলতাও। এখন উপায়?

অর্থ ও তেল মন্ত্রকের অনেক আমলাই বলছেন, ওএনজিসি-র থেকে সেস নিয়েও কতটুকু লাভ হবে? ওই পথে হাঁটলে ওএনজিসিকে ধাপে ধাপে বিলগ্নিকরণের পরিকল্পনাও ধাক্কা খাবে বলে তাঁদের আশঙ্কা।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর আবার প্রশ্ন, তেলে কেন ভ্যাট কমাচ্ছে না রাজ্য? পেট্রোপণ্য জিএসটির আওতায় এলে দর কমবে বলেও তাঁর দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন