ক্ষতির হিসেব কষতে গিয়ে হিমশিম চা শিল্প

দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশন (ডিটিএ) আগেই জানিয়েছিল, এত দিন বাগান বন্ধ থাকায় সেগুলি আগাছায় ভরেছে। চা গাছের পাতাও এত লম্বা হয়ে গিয়েছে যে, তা না ছাঁটলে চা তৈরির উপযুক্ত পাতা গজাবে না।

Advertisement

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৭ ১০:৩০
Share:

পাহাড়ে অশান্তির জেরে ক্ষতিগ্রস্ত দার্জিলিঙের চা শিল্পমহল আর্থিক সাহায্যের জন্য টি বোর্ডের দ্বারস্থ হয়েছিল। বোর্ড চেয়েছিল তার নির্দিষ্ট হিসেব। কিন্তু তারপর সপ্তাহ দুয়েক পেরিয়ে গেলেও সেই হিসেব কষতে গিয়ে কার্যত হিমসিম দশা তাদের। চা শিল্পের দাবি, এমন ঘটনা নজিরবিহীন। অনিশ্চয়তাও একচুলও কমেনি। ফলে প্রাথমিক ধাক্কাটা বোঝা গেলেও, তার প্রভাব কতটা সুদূরপ্রসারী তার সঠিক দিশার মূল্যায়ন করা সহজ নয়।

Advertisement

পাহাড়ে আন্দোলনের চলায় গত ৯ জুন থেকে সেখানকার ৮৭টি চা বাগান বন্ধ। তারা শুধু যে ‘সেকেন্ড-ফ্লাশ’ চায়ের রফতানি বাজার হারিয়েছে তা নয়, এ বছর আর সেখানে চা তৈরির সম্ভাবনাই কার্যত নেই। দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশন (ডিটিএ) আগেই জানিয়েছিল, এত দিন বাগান বন্ধ থাকায় সেগুলি আগাছায় ভরেছে। চা গাছের পাতাও এত লম্বা হয়ে গিয়েছে যে, তা না ছাঁটলে চা তৈরির উপযুক্ত পাতা গজাবে না। সব মিলিয়ে বহু বাগানেই উৎপাদন স্বাভাবিক হতে বছর তিনেক লাগতে পারে।

তা হলে সেই সময় ধরেই কেন লোকসানের হিসেব কষা যাচ্ছে না?

Advertisement

ডিটিএ-র সেক্রেটারি জেনারেল কৌশিক বসু শুক্রবার বলেন, ‘‘কোথাও কোথাও বছর তিনেকের থেকের বেশিও লাগতে পারে। এমন অবস্থা দার্জিলিঙে আগে কখনও না-হওয়ায় গোটা পরিস্থিতি চট করে বোঝা সম্ভব নয়। তা ছাড়া শুধু গাছ নয়, চা তৈরির জন্য সার্বিক ভাবে আরও অনেক তথ্য জরুরি। সেগুলি যাচাই করে দেখা হচ্ছে। তাই কতটা আর্থিক সাহায্য প্রয়োজন তার মূল্যায়ন করতে সময় লাগছে।’’

তাঁদের বক্তব্য, যতটা সম্ভব সার্বিক ভাবে লোকসানের হিসেব কষে তবেই আর্থিক সাহায্যের প্রস্তাব দেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, তা না-হলে কেন্দ্রের কাছে বারবার নতুন হিসেব দাখিল করে সাহায্য চাওয়া ঠিক নয়।

সেকেন্ড-ফ্লাশ চায়ের প্রায় সবটাই রফতানি হয়। এ বার তা হয়নি। তবে কৌশিকবাবু জানান, আমদানিকারীরা নিয়মিত খোঁজ নিচ্ছেন, আগামী বছর ফের বিশ্ব বাজারে পৌঁছবে তো দার্জিলিং চা? যদিও পাহাড়ের এখনও যা অবস্থা, তাতে এর কী জবাব দেওয়া হবে, তা বুঝতে পারছে না চা শিল্প।

এই পরিস্থিতিতে সকলের একটাই ভরসা, ‘জিওগ্রাফিক্যাল আইডেন্টিটি’-র (জিআই) স্বীকৃতি, বছর কয়েক আগে যা পেয়েছিল দার্জিলিং চা। এর ফলে বিশ্বের কোথাও অন্য কোনও চা-কে বেআইনি ভাবে কেউ দার্জিলিং চা নাম দিতে বেচতে পারবে না। ফলে আপাতত বাজার হারালেও, আগামী দিনে ফের বিদেশের চা প্রেমীদের পেয়ালা ভরার সুযোগ তার থেকে যাচ্ছে।

তাই সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এই জিআই স্বীকৃতি না থাকলে আরও বড় প্রশ্ন চিহ্নের মুখে পড়ে যেত দার্জিলিং চায়ের ভবিষ্যৎ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন