আশঙ্কার ঠান্ডা স্রোত মেরুদণ্ডে

ভিসা বিতর্কে চিন্তিত তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প

মঙ্গলবারই ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেসের ডিরেক্টর ফ্রান্সিস সিস্‌না জানান, এইচ-১বি ভিসা নিয়ে কড়াকড়ির কথা তো ট্রাম্প প্রশাসন ভাবছেই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদন শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৮ ১২:৩৮
Share:

ট্রাম্প প্রশাসনের প্রস্তাব। তাকে ঘিরে জল্পনা। আর তার সঙ্গে একটি রিপোর্ট। এই ত্রিমুখী আক্রমণেই এখন কিছুটা দিশেহারা ভারত ও আমেরিকার তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প।

Advertisement

মঙ্গলবারই ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেসের ডিরেক্টর ফ্রান্সিস সিস্‌না জানান, এইচ-১বি ভিসা নিয়ে কড়াকড়ির কথা তো ট্রাম্প প্রশাসন ভাবছেই। তার উপর ওই ভিসায় মার্কিন মুলুকে যাওয়া কর্মীদের স্বামী বা স্ত্রীর কাজের সুযোগ বন্ধেরও ভাবনা রয়েছে তাদের। তার জন্য কঠোর হবে এইচ-৪ ভিসার নিয়ম। আর এই জোড়া ঘোষণাতেই চিন্তার ভাঁজ দু’দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের কপালে। তার উপর বুধবার আবার এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৭-তে সালে প্রথম সারির সাতটি ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মীদের এই ভিসা পাওয়ার সংখ্যা কমেছে ৪৩%। ফলে ঘুম ছুটেছে সংশ্লিষ্ট শিল্পের কর্মীদের।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশে ভিসার এই চোখরাঙানিতে ভারতে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প ধাক্কা খেতে পারে বলে শঙ্কিত তার সংগঠন ন্যাসকম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কগনিজ্যান্টের এক কর্তা জানান, ভিসার সমস্যায় দক্ষ কর্মী পাওয়াই এখন দুষ্কর। তার উপরে স্ত্রী বা স্বামীর কাজের সুযোগ কাড়ার প্রস্তাব সমস্যা আরও জটিল করে তুলছে। তাঁর দাবি, আগে বিদেশে প্রকল্পের শরিক হওয়ার যে আগ্রহ ছিল, এখন তা নেই। উল্টে বিদেশ পাঠানোর প্রস্তাব দিলে, কর্মীরা চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন। অথচ চাকরি, এমনকী ‘বিয়ের বাজারে’ তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের সমাদরের অন্যতম কারণ ছিল বিদেশযাত্রা।

Advertisement

টেক মহীন্দ্রার প্রাক্তন এক কর্মী জানান, তিন বছরের প্রকল্পে মার্কিন মুলুকে গিয়েছিলেন। কিন্তু ভিসার ডামাডোলে স্ত্রীর কাজের সম্ভাবনা ক্ষীণ হওয়ায় শেষ পর্যন্ত অন্য সংস্থায় চাকরি নিয়ে দেশে ফিরেছেন।

তার উপর বুধবার প্রকাশিত ন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর আমেরিকান পলিসির রিপোর্ট বলছে, ২০১৭ মার্কিন অর্থবর্ষে ভারতীয় সংস্থাগুলির ৮,৪৬৮টি ভিসা মঞ্জুর হয়েছে। ২০১৫ সালের তুলনায় যা ৪৩% কম। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই ঘুম ছুটেছে তাদের।

ইনফোসিস, কগনিজ্যান্ট, টিসিএস, আইটিসি ইনফোটেকের মতো সংস্থার মতে, ভিসা কম মঞ্জুর হওয়া এবং তাকে ঘিরে অনিশ্চয়তা ছায়া ফেলছে চাকরির বাজারেও। মানবসম্পদ বিশেষজ্ঞদের মতে, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে আগ্রহ হারাচ্ছেন ইঞ্জিনিয়াররা। উপদেষ্টা সংস্থা কেলি সার্ভিসেসের দাবি, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের চেয়ে এখন পাল্লা ভারী গাড়ি শিল্পের মতো উৎপাদন ক্ষেত্রের।

তোপ দাগছে মাইক্রোসফট, ফেসবুক, গুগ্‌লের মতো মার্কিন সংস্থাগুলিও। তাদের মতে, এইচ-৪ ভিসার অনেক কর্মীরই পড়াশোনা প্রচুর। তাঁরা দক্ষ। তাই প্রস্তাব কার্যকর হলে আমেরিকায় দক্ষ কর্মী অনেকটা কমে যাবে। প্রতিবাদে সামিল বেশ কয়েক জন মার্কিন কংগ্রেস সদস্যও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন