কারখানা আধুনিকীকরণ-সহ বিভিন্ন প্রকল্পে টাকা ঢালার পরে চটকলগুলি ভর্তুকি চেয়েছিল ৭০.৫ কোটি টাকা। আশা ছিল, আগেকার রীতি মাফিক তা পাওয়াও যাবে। কিন্তু সূত্রের খবর, চলতি অর্থবর্ষের শেষে এসে জাতীয় পাট পর্ষদ চটকল মালিকদের জানিয়েছে, আপাতত ওই ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, বস্ত্র মন্ত্রক সাকুল্যে এক কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে এই খাতে। জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের চটকল মালিকেরা এ বার কেন্দ্রের কাছে ভর্তুকির দাবি জানাতে চলেছে।
রাজ্যের চটকল মালিকদের একাংশের দাবি, কেন্দ্র ঘোষিত বিভিন্ন প্রকল্পে খরচ করলে ভর্তুকি মিলবে, এটা ধরেই লগ্নি করেছেন তাঁরা। যার মধ্যে আছে কারখানা আধুনিকীকরণ, পাটজাত নতুন পণ্য উৎপাদনের পরিকাঠামো তৈরি, কারখানা অধিগ্রহণ-সহ নানা প্রকল্প। কিন্তু এখন টাকা পাওয়া নিয়ে জট তৈরি হয়েছে। অনেকে অবশ্য বলছেন, এই জটিলতা কমবেশি চলছে তিন বছর ধরেই।
এই পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন, কেন্দ্র যেখানে পাট শিল্পের সঙ্গে জড়িত কয়েক লক্ষ মানুষের স্বার্থরক্ষার কথা বারবার বলে থাকে, সেখানে ভর্তুকি নিয়ে এমন জটিলতা তৈরি হবে কেন? আগামী দিনে কোন ভরসায় নতুন প্রকল্প রূপায়ণের পথে হাঁটবে চটকলগুলি?
চটকল মালিকরা জানান, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে খরচ করার পরে পাট পর্ষদের কাছে হিসেব দিয়ে ভর্তুকির দাবি জানান তাঁরা। পর্ষদ তা খতিয়ে দেখে কেন্দ্রের কাছে বরাদ্দের দাবি জানায়। সূত্রের দাবি, বাজেট বরাদ্দ বা সংশোধিত বরাদ্দে পর্ষদের দাবি মতো অর্থ মঞ্জুর হয়নি এ বার। ফলে চটশিল্পের চাহিদা মেটানোর মতো সংস্থান তাদের নেই। তবে ভর্তুকি খাতে যেখানে ৭০.৬ কোটি প্রয়োজন, সেখানে মাত্র ১ কোটি হাতে নিয়ে পর্ষদ কি করবে, সেই উত্তরই খুঁজছে শিল্প।
পাট চাষ এবং চটকলের সঙ্গে বহু মানুষের রুজি-রোজগার জড়িয়ে। অথচ বস্তা-সহ পাটজাত পণ্যের চাহিদা বাজারে প্রয়োজনের তুলনায় কম। এই পরিস্থিতিতে চট শিল্পের উন্নয়নের স্বার্থে বিভিন্ন খাতে কেন্দ্র ভর্তুকির কথা ঘোষণা করে। অথচ সেই অর্থ যাদের মাধ্যমে আসার কথা, সেই পর্ষদেরই ‘হাঁড়ির হাল’। ফলে চটকলগুলি এখন বসে কেন্দ্রের আশ্বাসের অপেক্ষায়।