প্রতীকী ছবি।
রাশিয়ায় রফতানি করা পণ্যের দাম ফেরত পাওয়ার ক্ষেত্রে গ্যারান্টি দেওয়ার সুবিধা বন্ধ করল এক্সপোর্ট ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (ইসিজিসি)। বাণিজ্য মন্ত্রকের আওতাভুক্ত ইসিজিসি-র দাবি, দেশীয়
সংস্থাগুলির স্বার্থ রক্ষার জন্যই এই গ্যারান্টি। কোনও বিদেশি আমদানিকারী পণ্য কিনে দাম নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে না-মেটালে তাদের হয়ে ভারতীয় রফতানিকারীকে টাকা দেয় তারা। পরে বিদেশি সংস্থাটির থেকে তা ফেরত নেয়। রাশিয়ায় রফতানির ক্ষেত্রে সেই সুবিধাই আপাতত বন্ধ হল। রফতানিকারদের কাছে শুক্রবার ই-মেলে নোটিস পাঠিয়েছে ইসিজিসি। এ দিন থেকেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। দেশের রফতানি শিল্পের অভিযোগ, এটা বড় ধাক্কা। রাশিয়ায় রফতানি মার খাওয়ার আশঙ্কা।
ভারতের ওষুধ, বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ ও পণ্য, জৈব-রাসায়নিক পণ্য, গাড়ি ইত্যাদির বিরাট বাজার রাশিয়া। গত বছরের প্রথম ন’মাসে সে দেশে রফতানির অঙ্ক ৯৪০ কোটি ডলার (প্রায় ৭০,৮১০ কোটি টাকা)। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান ও আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দেশগুলির নিষেধাজ্ঞা— বিশ্ব জুড়ে এমন সংঘাতের আবহে ভারতীয় রফতানিকারীকে রাশিয়ার আমদানিকারীর হয়ে পণ্যের দাম মেটানো ঝুঁকির মনে করছে ইসিজিসি। কারণ, টাকা ফেরত পাওয়া অনিশ্চিত। তাই গ্যারান্টির সুবিধা বন্ধ থাকছে।
রফতানি মহল জানিয়েছে, এই গ্যারান্টি এক ধরনের বিমা। বিদেশি আমদানিকারীর সায় নিয়েই গ্যারান্টি দেয় ইসিজিসি। এ দেশের রফতানিকারীকে সুবিধাটি নিতে হলে ইসিজিসিকে প্রিমিয়াম দিতে হয়। শিল্পের দাবি, এই সুবিধা ছাড়া রাশিয়ায় রফতানি বর্তমান অবস্থায় তাদের পক্ষেও ঝুঁকির। অথচ অনেকেরই পণ্য প্রস্তুত। ফলে বিরাট ক্ষতির আশঙ্কা। ইঞ্জিনিয়ারিং এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং রফতানিকারী নিফা গোষ্ঠীর ডিরেক্টর রাকেশ শাহ বলেন, “শুক্রবার গ্যারান্টি বাতিলের কথা জানানো হয়েছে। এতে অনেক ক্ষতি হবে। আমার গুদামেই এক কোটি টাকার পণ্য মজুত, যেগুলি রাশিয়ায় যাবে। এ বার কী করব?’’
এ দিকে বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতীয় আমদানি ও রফতানিকারীরা সমস্যায় পড়লে, তা সমাধানের জন্য সহায়তা কেন্দ্র চালু করেছে বাণিজ্য মন্ত্রক। ডিরেক্টর জেনারেল অব ফরেন ট্রেড-এর নির্দেশ, সমস্যা জানানো যাবে তাদের ওয়েবসাইটে।