কর্মকাণ্ড: রাজ্যে উইপ্রোর প্রথম ক্যাম্পাস। এ বার অপেক্ষা দ্বিতীয়টির।
ইনফোসিসের পরে এ বার সম্ভবত জট কাটার মুখে উইপ্রোর জমিও।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, রাজ্যের তরফে ইতিমধ্যেই জমি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ছাড়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে জমির লিজ স্বত্ত্বের বদলে সরাসরি মালিকানা (ফ্রি-হোল্ড) দেওয়ার প্রস্তাবও। এক মাসের মধ্যেই দেশের অন্যতম অগ্রণী তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা উইপ্রো এই প্রস্তাবের উত্তর দেবে বলে জানিয়েছে ইতিমধ্যেই।
রাজারহাটে ইনফোসিসের জমির কাছেই উইপ্রোর ৫০ একর জমি রয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পমহলের মতে, ২০১০ সালে ৭৫ কোটি টাকার বিনিময়ে পাওয়া এই জমির মিশ্র ব্যবহারের অনুমতি সংস্থার পক্ষে লাভজনকই হবে। ফলে রাজ্যের প্রস্তাবে সায় দেওয়ারই কথা সংস্থার। ঠিক যে ভাবে সম্প্রতি বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের (সেজ) বদলে রাজ্যের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা নিতে এগিয়ে এসেছে ইনফোসিস।
গত মন্ত্রিসভার বৈঠকের শেষে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ইনফোসিসকে প্রকল্পের জন্য চিহ্নিত জমির অন্তত ৫১ শতাংশ তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের জন্য ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। ৪৯ শতাংশে অন্য কাজ করা যেতে পারে। আগের চুক্তি অনুযায়ী, জমির ৭৫ শতাংশ তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের জন্য ব্যবহার করার কথা ছিল। বাকি ২৫ শতাংশ অন্য কোনও কাজে লাগানো যেতে পারত। দেওয়া হয়েছে জমির ‘ফ্রি-হোল্ড’ মালিকানাও।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালে সল্টলেক সেক্টর ফাইভে সেজ তৈরির সবুজ সঙ্কেত পায় উইপ্রো। ২০০৫ সালে ১৩.৫ একর জমিতে চালু হয়ে যায় দেশের প্রথম তথ্যপ্রযুক্তি সেজ। কিন্তু সংস্থার দ্বিতীয় ক্যাম্পাস সেজ বিতর্কে এখনও থমকে আছে। যে সমস্যার জেরে আটকে ছিল ইনফোসিস প্রকল্প। ইনফোসিসের মতো রাজ্য সরকারের সেজ বিরোধিতা নিয়ে অবশ্য সরাসরি মুখ খোলেনি উইপ্রো।
প্রথম ক্যাম্পাসে স্থানাভাবের কারণে উইপ্রো বছর দুয়েক আগে সল্টলেকের বর্তমান ক্যাম্পাসের সঙ্গে আড়াই একর জমি যুক্ত করার জন্য কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের দ্বারস্থ হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সরকারের সেজ সংক্রান্ত পরিচালন পর্ষদ বা বোর্ড অব অ্যাপ্রুভালস-এর কাছে আবেদন করেছিল, দু’টি জমি পাশাপাশি না-হলেও ডিজিটাল বা যান্ত্রিক নজরদারির দৌলতে একটি ক্যাম্পাস হিসেবেই তা পরিচালিত হবে। সংস্থার দাবি, বর্তমান ক্যাম্পাসের ১৮ লক্ষ বর্গ ফুটের বেশি জায়গায় আর নতুন করে কর্মী বসার ঠাঁই নেই। সেই কারণেই ওই আড়াই একর জমিতে নয়া পরিকাঠামো গড়ে ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে
চেয়েছিল সংস্থা।
দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের জমি নেওয়ার সময় সংস্থা জানিয়েছিল, ৫০০ কোটি টাকা লগ্নি এবং প্রায় ২০ হাজার নতুন কর্মসংস্থানের কথা। তবে বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের চাহিদায় ভাটা। চোখ রাঙাচ্ছে ভিসা নিয়ে কড়াকড়ি ও নতুন প্রযুক্তির হানা। এই পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাসে কত কর্মসংস্থান হবে, তা নিয়ে মুখ খোলেনি উইপ্রো।