এর আগে ভারতীয় অর্থনীতি শক্তিশালী এবং দ্রুত এগোচ্ছে দাবি করেছিল এসঅ্যআন্ডপি গ্লোবাল রেটিংস। —প্রতীকী চিত্র।
বহু দিন ধরেই মোদী সরকার চাইছে ঋণ শোধের ঝুঁকির নিরিখে ভারতের মূল্যায়ন বাড়ুক। তা হলে লগ্নির মানচিত্রে এ দেশের কদর বাড়বে। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির কাছে মূল্যায়ন বৃদ্ধির দরবারও করেছে তারা। অবশেষে চারপাশের চূড়ান্ত অনিশ্চয়তার মধ্যেই সেই লক্ষ্যের কিছুটা পূর্ণ হল। শুক্রবার কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাল, ভারতের মূল্যায়ন বেড়েছে। তা ‘BBB’-তে তুলেছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মূল্যায়ন সংস্থা মর্নিংস্টার ডিবিআরএস। সময়মতো শোধের ক্ষমতা বিচার করে কোনও দেশকে ঋণ দেওয়া কতটা ঝুঁকির, তা দেখায় মূল্যায়ন। সেই দিক থেকে ‘BBB’ মানে, ঋণ শোধের ক্ষমতা ভাল। তবে নিখুঁত নয়। সাধারণ ভাবে সময় মতো শোধ করা হয়। কিন্তু কঠিন সময়ে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। সংস্থা ভারতের অর্থনীতি সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি স্থিতিশীল বা ‘স্টেবল’ রেখেছে। অর্থাৎ মূল্যায়ন কমার আশঙ্কা নেই।
এর আগে ভারতীয় অর্থনীতি শক্তিশালী এবং দ্রুত এগোচ্ছে দাবি করেও আমেরিকার মূল্যায়ন বহুজাতিক এসঅ্যআন্ডপি গ্লোবাল রেটিংস এ দেশের সার্বভৌম মূল্যায়ন অপরিবর্তিত রেখেছিল। ফলে তা দীর্ঘ মেয়াদে রয়েছে ‘BBB-’। লগ্নি এবং ঋণ পাওয়ার যোগ্যতার সর্বনিম্ন ধাপ। লগ্নির অযোগ্য ধাপের ঠিক উপরে। আর এক সংস্থা ফিচ-এক মূল্যায়নও ছিল এটাই। তবে গোটাটাই দীর্ঘ দিন ধরে এক জায়গায় থমকে।
মর্নিংস্টারের অবশ্য দাবি, ভারতের আর্থিক অবস্থার নিরিখে মূল্যায়ন বাড়ানো হয়েছে। দীর্ঘ এবং স্বল্প মেয়াদে ভারতীয় এবং বিদেশি মুদ্রায় ঋণপত্র ছাড়ার ক্ষেত্রে তা ‘BBB’ গণ্য হবে। মূলত যে সব মাপকাঠির নিরিখে এই সিদ্ধান্ত তার মধ্যে রয়েছে, পরিকাঠামো উন্নয়নে লগ্নি, ডিজিটাল ব্যবস্থার প্রসার ইত্যাদি। কারণ এই সব কিছুর হাত ধরে ভারতের আর্থিক ভিত পোক্ত হয়েছে। যা এক দিকে দেশের ঋণ এবং রাজকোষ ঘাটতি কমাতে সাহায্য করছে। অন্য দিকে ঠেলে তুলেছে আর্থিক বৃদ্ধিকে। আঁটোসাঁটো হয়েছে আর্থিক ব্যবস্থা। ফলে ২০২১-২২ থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে জিডিপি বৃদ্ধির গড় হার দাঁড়িয়েছে ৮.২%। তার উপর মূল্যবৃদ্ধির হার স্থিতিশীল। বেড়েছে বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার। ব্যাঙ্কিং শিল্পেরও উন্নতি হয়েছে। ব্যাঙ্কগুলিতে মূলধনের অভাব নেই। অনুৎপাদক সম্পদের হার ১৩ বছরের তলানিতে। মূল্যায়ন বৃদ্ধির জ্বালানি জুগিয়েছে এই সবই।
সেই সঙ্গে মূল্যায়ন সংস্থাটির আরও বার্তা, ভবিষ্যতে আর্থিক বৃদ্ধিতে গতি আনতে দেশে লগ্নি বৃদ্ধির লক্ষ্যে সংস্কার চালিয়ে গেলে, মূল্যায়ন বাড়বে। বিশেষত ভারত যে ঋণ করেছে, তা শোধের ঝুঁকি যেহেতু খুব কম। সংস্কার কার্যকর করার পাশাপাশি জিডিপির অনুপাতে ঋণের হার কমলে, তা মূল্যায়ন বৃদ্ধির পথকে চওড়া করবে।
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে