যথেষ্ট নয় তিন বছর, সওয়াল রাজনের

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের পদে তাঁর মেয়াদ আর দু’মাস। কিন্তু শীর্ষ ব্যাঙ্কের কর্ণধারের জন্য তিন বছর সময় একেবারেই কম বলে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে সওয়াল করে গেলেন রঘুরাম রাজন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৬ ০৩:১৯
Share:

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের পদে তাঁর মেয়াদ আর দু’মাস। কিন্তু শীর্ষ ব্যাঙ্কের কর্ণধারের জন্য তিন বছর সময় একেবারেই কম বলে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে সওয়াল করে গেলেন রঘুরাম রাজন। তাঁর মতে, আগামী দিনে এই স্বল্প মেয়াদের ধারা বদলাক। এ বিষয়ে বরং উন্নত দুনিয়ার পথে হাঁটুক ভারত। যেখানে শীর্ষ ব্যাঙ্কের শীর্ষ কর্তার এক লপ্তের মেয়াদ সাধারণত তিন বছরের বেশি।

Advertisement

কংগ্রেস সাংসদ বীরাপ্পা মইলির নেতৃত্বাধীন ওই কমিটির কাছে বাণিজ্যিক (বিশেষত রাষ্ট্রায়ত্ত) ব্যাঙ্কগুলির অনুৎপাদক সম্পদের রিপোর্ট পেশ করেছেন রাজন। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতে, চলতি অর্থবর্ষে মোট ঋণ খেলাপের অনুপাত বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৯.৩%। মার্চে যা ছিল ৭.৬%। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সঙ্গেও দেখা করেছেন তিনি। কথা হয়েছে দ্রুত ঋণনীতি কমিটি তৈরি করা নিয়ে। যদিও ৯ অগস্টের ঋণনীতিতে সুদ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত এই প্রথম বার ছয় সদস্যের ওই কমিটি নিতে পারবে কি না, সে বিষয়ে রাজন নিশ্চিত নন।

আইন অনুযায়ী, কেন্দ্র রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর নিয়োগ করতে পারে অনধিক ৫ বছরের জন্য। কিন্তু রাজন, তাঁর পূর্বসূরি ডি সুব্বারাও-সহ অনেকে ওই পদে প্রথম বার বসেছেন ৩ বছরের মেয়াদে। সুব্বারাও, ওয়াই ভি রেড্ডি, বিমল জালান-সহ শীর্ষ ব্যাঙ্কের অনেক গভর্নর ওই পদে পুনর্নিযুক্ত হয়েছেন। কিন্তু ৩ বছরের মেয়াদ ফুরোনোর পরেই আগামী সেপ্টেম্বরে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন রাজন।

Advertisement

সেই সূত্রেই এ দিন শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের বুথ স্কুলের ছুটিতে থাকা অধ্যাপকের কাছে কমিটি জানতে চেয়েছিল, গভর্নরের ন্যূনতম মেয়াদ পাঁচ বছর হওয়া উচিত কি না? তার উত্তরে তিনি বলেন যে, তিন বছর বড্ড কম সময়। এ বিষয়ে উন্নত দুনিয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে হাঁটা উচিত ভারতের। এ প্রসঙ্গে টেনে আনেন মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেড রিজার্ভের কথা। যার কর্ণধারের প্রথম লপ্তের মেয়াদ চার বছর। খোলা থাকে দ্বিতীয় দফায় নিয়োগের দরজাও।

রাজন সংস্কারের ঝোড়ো ইনিংস খেলেছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতো রক্ষণশীল প্রতিষ্ঠানে। তাঁর আমলেই মূল্যবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বাঁধা আইন হয়েছে। উন্নত দুনিয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সুদ নির্ধারণ একা গভর্নরের হাতে না-রেখে ঋণনীতি কমিটির হাতে দিতে পা বাড়িয়েছেন তিনি। জোর দিয়েছেন ব্যাঙ্কিং পরিষেবা প্রসারে। দ্রুত নিকেশ চেয়েছেন অনুৎপাদক সম্পদের সমস্যার। সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণার চিঠিতে তিনি বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম এ সব বদল দেখে যাব। কিন্তু আবার ভেবে ও সরকারের সঙ্গে কথা বলার পরে পড়াশোনার জগতেই ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ অনেকে বলছেন, উত্তরসূরিদের যাতে সেই সমস্যা না-হয়, তার জন্য সওয়াল করে গেলেন আইএমএফের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনীতিবিদ। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট জিম অং কিম অবশ্য বলেছেন, রাজন চলে গেলেও তাঁর নীতি বজায় থাকবে বলে আশ্বস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন