চিনকে রুখতে শাস্তি-শুল্কের প্রস্তাব

শাড়ি থেকে শুরু করে শার্ট হোক বা পর্দা— হিসেব বলছে ভারতে দ্রুত বাড়ছে লিনেনের চাহিদা।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:১৩
Share:

—ফাইল চিত্র।

শাড়ি থেকে শুরু করে শার্ট হোক বা পর্দা— হিসেব বলছে ভারতে দ্রুত বাড়ছে লিনেনের চাহিদা। ব্যবসার সম্ভাবনা দেখে লগ্নির ঝুলি উপুড়ও করছে বহু সংস্থা। অথচ শিল্প মহলের অভিযোগ, বাস্তবে গোটা ছবিটাই মাটি হয়ে যাচ্ছে চিনের দৌলতে। কারণ, বিপুল পরিমাণে সস্তার লিনেন সুতো ভারতের বাজারে ঢুকছে পড়শি দেশ থেকে। যা এ দেশে মোট চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশেরও বেশি। ফলে মার খাচ্ছেন ছোট-বড় দেশীয় ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

তাঁদের নালিশ, এর জেরে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও সস্তার সুতোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে। মুনাফা দূর অস্ত্, এমন চললে দেশীয় সংস্থাগুলির ব্যবসা করাই মুশকিল হবে। আর তার পরেই নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্র। সম্প্রতি জয়শ্রী টেক্সটাইলের করা একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ট্রেড রেমিডিস (ডিজিটিআর)। সব কিছু খতিয়ে দেখে বিদেশ (মূলত চিন) থেকে আমদানি করা লিনেন সুতোর উপরে অবিলম্বে কিলোগ্রাম প্রতি প্রায় সাড়ে চার ডলার করে শাস্তিমূলক শুল্ক বসানোর সুপারিশ করেছে তারা। তবে কর বসানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক।

এই প্রস্তাবে খুশি ভারতের লিনেন ব্যবসায়ীরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রের হিসেব, শাস্তি শুল্ক চাপলে চিন থেকে ঢোকা লিনেন সুতোর দাম ভারতে তৈরি সুতোর দামের সমান বা বেশি হবে। ব্যবসায়ীদের দাবি, তখন ব্যবসার বাধা কিছুটা কাটবে। লিনইর্য়ান টেক্সটাইলের সিইও পল্লব রায় বলেন, ‘‘ এখন মূলত পর্দা ও কার্পেটের জন্য সুতো তৈরি করি। শাড়ির জন্য নরম লিনেন সুতোর চাহিদা বাড়ছে। ডিজিটিআর-এর প্রস্তাবে কেন্দ্র সায় দিলে নরম সুতো তৈরির কারখানা গড়ব।’’

Advertisement

টার্টল-এর ডিরেক্টর সিতাংশু ঝুনঝুনওয়ালার কথায়, ‘‘লিনেনের শার্টের চাহিদা অনেক বেড়েছে। গরমে ও উৎসবের মরসুমে বিক্রি বাড়ে। আমরা সুতো তৈরি করি না ঠিকই। তবে দেশের বাজার উপকৃত হলে পরোক্ষে সুবিধা হবে আমাদেরও ।’’

লিনেন কি?

মূলত তৈরি হয় ফ্ল্যাক্স নামের গাছ থেকে। ইউরোপের ঠান্ডা আবহাওয়ায় যা ভাল হয়। তার ফাইবার ভারতে এনে তৈরি হয় লিনেন সুতো।

অভিযোগ
মূলত চিন থেকে সস্তার লিনেন সুতো ঢুকছে দেশে।
মার খাচ্ছেন দেশীয় ব্যবসায়ীরা।

দাওয়াই
বিদেশ থেকে আমদানি হওয়া লিনেন সুতোয় কেজিতে প্রায় সাড়ে চার ডলার শাস্তি-শুল্ক চাপানোর সুপারিশ।

তথ্য বলছে, ২০১৭ সালে পাটের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সস্তার পণ্যে রাশ টানতে কেন্দ্র ডিজিটিআরের প্রস্তাব মতো আমদানি শুল্ক বসানোয় উপকৃত হন বহু পাট চাষি এবং সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। সেই ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়া সুব্রত গুপ্তের দাবি, ‘‘লিনেন সুতোর আমদানিতে শাস্তি শুল্ক বসলে ভারতে তা তৈরির ক্ষেত্রে আরও লগ্নি আসবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন