টাওয়ার বসানোর ক্ষেত্রে ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে ভুয়ো সংস্থার উপদ্রব। অনেকেরই অভিযোগ, তাঁদের বাড়ির ছাদে বা জমিতে সেগুলি বসাতে সরকারি ছাড়পত্র পাওয়ার নাম করে টাকা দাবি করছে তারা। মাঝে কিছু দিন থিতিয়ে থাকার পরে ফের এ ভাবে প্রতারণার ফাঁদ পাততে শুরু করেছে ভুয়ো টাওয়ার সংস্থাগুলি। কিন্তু টেলি শিল্পের নিয়ন্ত্রক ট্রাইয়ের দাবি, টাওয়ার বসাতে টাকা চাওয়ার প্রশ্নই নেই। তারা বা টেলিকম দফতর (ডট) এ রকম ছাড়পত্রও কাউকে দেয় না। প্রতারণা ঠেকাতে মানুষকে সচেতন হতে বলছে ট্রাই। দ্রুত পুলিশ-প্রশাসনে অভিযোগ জানাতে বলছে প্রতারণার শিকার হলে।
ট্রাই কর্তাদের দাবি, টাওয়ার বসাতে টাকা চাওয়া বেআইনি। কারণ এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে ওই জমি বা বাড়ির মালিকের সম্পর্ক বাড়িওয়ালা-ভাড়াটের মতোই। নিয়ম অনুযায়ী, কোথায় টাওয়ার জরুরি, বেতার তরঙ্গ পরীক্ষার মাধ্যমে তা ঠিক করে সংস্থা। তারপর সরাসরি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করে। সরকার স্বীকৃত টাওয়ার সংস্থার নির্দিষ্ট তালিকাও রয়েছে।
যাঁর বাড়ি বা জমিতে টাওয়ার বসবে, তাঁর সঙ্গে কথা বলে শর্ত ঠিক করার পরে চুক্তি হয়। সরকারি ছাড়পত্র জোগাড়ের দায়িত্ব সেই সংস্থার বা তাদের নিযুক্ত যন্ত্রাংশ সরবরাহকারীরই। ছাড়পত্র পেলে টাওয়ার বসে। বিনিময়ে চুক্তি মতো প্রতি মাসে ভাড়া পান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি। তাঁর আয় করযোগ্য হলে আয়কর দেন। ছাদ বা জমির বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনে স্থানীয় পুরসভা বা প্রশাসনের সায় নিতে হয়। কিন্তু ট্রাই বা ডটের ছাড়পত্র লাগে না।
অথচ ভুয়ো সংস্থাগুলি টাওয়ার বসাতে বিজ্ঞাপন বা কারও মারফত প্রতারণার জাল ছড়ায়। বিপুল ভাড়া, এমনকি পরিবারের সদস্যদের চাকরির টোপও দেয়। তবে সে জন্য নানা সরকারি ছাড়পত্র (নো অবজেকশন বা এনওসি) জরুরি বলে বাড়ি বা জমির মালিকের কাছে ফি, স্ট্যাম্প ডিউটি বা কর বাবদ টাকা চায় তারা। অভিযোগ, দাবি মেনে বেশ কিছু টাকা দেওয়ার পরেও টাওয়ার বসানো দূর অস্ত্, অনেক সময় সংস্থার হদিসই মেলে না।
ট্রাই সূত্রের খবর, আস্থা কুড়োতে এখন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ভুয়ো সরকারি এনওসি-ও পাঠাচ্ছে ওই সব সংস্থা। সন্দেহ দূর হলে বিভিন্ন খাতে টাকা চাইছে। এ রাজ্যে এমন বহু অভিযোগ জমা পড়েছে। তাই দ্রুত সকলকে সতর্ক হওয়ার বার্তা দিচ্ছে তারা।