সামিল হচ্ছে না রাজ্যের ট্রাক মালিক সংগঠন

দেশে পণ্য পরিবহণে দু’দিন ধর্মঘটের ডাক

ধর্মঘটে সামিল হচ্ছে না রাজ্যের ট্রাক মালিকদের সংগঠন ফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন। তা ছাড়া ধর্মঘটী সংগঠনগুলিরও দাবি, শিল্পপণ্য পরিবহণ বন্ধ থাকলেও, ব্যাহত হবে না খাদ্যদ্রব্য, ওষুধ পাঠানোর মতো জরুরি পরিষেবা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৪৪
Share:

দুশ্চিন্তা: এ ভাবেই কি থমকে যেতে চলেছে পণ্যের জোগান? নিজস্ব চিত্র

জিএসটি মেটানো নিয়ে জটিলতা, ডিজেলের চড়া দাম, পণ্য পরিবহণের সময়ে রাস্তায় ‘হেনস্থা’র মতো অভিযোগে আগামী কাল ও পরশু (৯ ও ১০ অক্টোবর) দেশ জুড়ে পণ্য পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে অল ইন্ডিয়া মোটর ট্রান্সপোর্ট কংগ্রেস (এআইএমটিসি)। এ রাজ্যেও তার বিক্ষিপ্ত প্রভাব পড়ার আশঙ্কা।

Advertisement

তবে বিরোধিতা না-করলেও, এই ধর্মঘটে সামিল হচ্ছে না রাজ্যের ট্রাক মালিকদের সংগঠন ফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন। তা ছাড়া ধর্মঘটী সংগঠনগুলিরও দাবি, শিল্পপণ্য পরিবহণ বন্ধ থাকলেও, ব্যাহত হবে না খাদ্যদ্রব্য, ওষুধ পাঠানোর মতো জরুরি পরিষেবা।

এই ধর্মঘটে অংশ নিচ্ছে মূলত পণ্য পরিবহণের বরাত নেওয়া ‘কন্ট্র্যাক্টর’রা। যেমন, দ্য ক্যালকাটা গুডস ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন। নিজস্ব ট্রাক থাকলেও তারা মূলত বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে পণ্য পরিবহণের বরাত নেয়। সংগঠনের ভাইস প্রেসিডেন্ট সন্তোষ সরাফ জানান, জিএসটি চালুর পরে প্রথমে তাঁদের ওই কর দিতে হত না। যে-সব সংস্থার কাছ থেকে তাঁরা বরাত নেন, তারাই সরাসরি ৫% হারে জিএসটি গুনত। কিন্তু এখন তার পাশাপাশি কনট্র্যাক্টরদেরও সংস্থাগুলির হয়ে ১২% হারে আগাম জিএসটি মিটিয়ে দিতে বলা হচ্ছে। পরে বরাতের বিলের সঙ্গে জুড়ে সংস্থাগুলির কাছ থেকে সেই টাকা আদায় করে নিতে বলা হচ্ছে তাঁদের।

Advertisement

সন্তোষবাবুর দাবি, এতে তাঁদের আয় কমতে পারে। কারণ, সংস্থার হয়ে জিএসটি-র টাকা আগাম দেওয়ার পরে সেই টাকা ফের আদায় করতে সময় লাগে। ফলে ব্যবসার নগদ পুঁজিতে টান পড়ছে। তার উপর অনেক সময়ে আবার বিলের পুরো টাকা মেলে না। সে ক্ষেত্রে পুরো বিলের উপর ধরা জিএসটির পুরোটা আদায় না-হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। এই সমস্যার দ্রুত সুরাহা চান তাঁরা।

তাঁদের আরও অভিযোগ, ট্রাক পরে বিক্রি করতে গিয়েও সমস্যা হচ্ছে। কারণ, তার উপর জিএসটি চেপেছে। পণ্য পরিবহণের সময়ে মাঝ রাস্তায় নানা হেনস্থা এবং দুর্নীতিরও অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। তিনি জানান, এ সবের প্রতিবাদে ওই দু’দিন ‘চাক্কা জ্যামে’র আওতায় সিমেন্ট, লোহা, প্লাস্টিক ইত্যাদি শিল্পপণ্যের পরিবহণ বন্ধ থাকবে।

নিজেদের ট্রাক রয়েছে কিন্তু কন্ট্র্যাক্টরের কাছ থেকে পণ্য পরিবহণের বরাত নিয়ে তা করেন— রাজ্যে এ রকম ট্রাক মালিকদের সংগঠন ফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক সজল ঘোষ এ দিন বলেন, ‘‘আমরা ধর্মঘটের বিরোধিতা করছি না। তবে পক্ষেও নেই। ট্রাক সচল রাখব।’’ তাঁর দাবি, জিএসটি-তে তাঁদের সুবিধাই হয়েছে। আগে প্রতি রাজ্যের সীমানা পেরোতে টাকা দিতে হত। জিএসটির কারণে তা হচ্ছে না। এ দিন ১৯টি জেলায় সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।

তিনি আরও জানান, ধর্মঘটের সময়ে কোনও সংস্থা পণ্য পরিবহণের জন্য সরাসরি তাঁদের সেই বরাত দিলে তাঁরা ট্রাক চালাবেন। এ ছাড়া, মালগাড়িতে আসা পেঁয়াজ, আলু, চাল, গমের মতো জিনিসপত্রও নিয়ে যেতে তাঁদের আপত্তি নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন