ধুঁকতে থাকা দশা থেকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে ওয়েবেল-এর শাখা সংস্থাগুলিকে মিশিয়ে দেওয়ার নিদান দিয়েছে উপদেষ্টা সংস্থা ডেলয়েট। তার প্রাথমিক শর্ত হিসেবে বলেছে প্রতিটি শাখা সংস্থার আর্থিক স্বাস্থ্য চাঙ্গা করার কথা। সেই লক্ষ্য সামনে রেখে কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করার কথা জানাল তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের অধীন ওয়েবেলের শাখা সংস্থা ওয়েবেল ইনফর্ম্যাটিক্স (ডব্লিউআইএল)। মূলত তথ্যপ্রযুক্তি ও বৈদ্যুতিন শিল্পের জন্য প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত করে যারা।
হাল এতটাই খারাপ ছিল যে, এক সময়ে এই সংস্থার ব্যবসা নামে ৫০ হাজার টাকায়। ২০১১-’১২ অর্থবর্ষ পর্যন্ত প্রায় নাগাড়ে লোকসান করেছে তারা। সেখানে ২০১৬-’১৭ সালে তাদের ব্যবসা ৫০ কোটি ছাড়িয়েছে। পৌঁছেছে ৫২ কোটিতে। যা আগের বছরের তুলনাতেও প্রায় ২৫% বেশি।
সোমবার এ প্রসঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর দাবি, শুধু ডব্লিউ আই এল নয়, ওয়েবেলের সব শাখা সংস্থাকেই লাভজনক করে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। তিনি বলেন, ‘‘ডেলয়েটের সুপারিশ মেনে শাখা সংস্থাগুলির সংযুক্তিকরণ হচ্ছে। তার আগে প্রতিটি শাখা সংস্থার আর্থিক স্বাস্থ্য ফেরাতে হবে।’’
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, ২০১১-’১২ সাল পর্যন্ত ডব্লিউআইএলের লাগাতার লোকসান করার অন্যতম কারণ ওই সংস্থা থেকে তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর ব্যবসা আলাদা করে দেওয়া। ওয়েবেল টেকনোলজিকে সেই সমস্ত ব্যবসা দেওয়া হয়। ওয়েবেল সূত্রে খবর, সেই ধাক্কা সামলাতে সময় লেগেছে। বহু বাধা কাটিয়ে তবেই সম্ভব হয়েছে ৫২ কোটি টাকার ব্যবসা করা। ২০১৭-’১৮ সালে এই অঙ্ক ১০০ কোটি ছোঁবে বলে তাদের দাবি।
আরও পড়ুন: কোনও বিজ্ঞাপন নয়, স্রেফ মুখে মুখে ৩০০ কোটি ব্যবসা এই লজেন্সের!
উল্লেখ্য, গত বছরের মাঝামাঝি ওয়েবেলের শাখা সংস্থাগুলিকে সংযুক্তিকরণের নিদান দেয় ডেলয়েট। তার ভিত্তিতেই সংস্থা ঘুরে দাঁড়ানোর নক্শা তৈরি হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, ওয়েবেলকে বাণিজ্যিক ভাবে লাভজনক করে তুলতে এই সংযুক্তির উপরেই জোর দিয়েছে ডেলয়েটের রিপোর্ট। সেই প্রস্তাবে সায় দিয়েছে ওয়েবেলের পরিচালন পর্ষদও। সূত্রের মতে, সংযুক্তিকরণ হলে, ব্যবসা পাওয়া সহজ হবে। কমবে খরচ। কর্মীদের কাজে লাগানো যাবে। ব্যবহার করা যাবে তাঁদের সম্মিলিত দক্ষতা। মিলিত শক্তি ব্যবহার করা যাবে ব্যবসার জন্যও।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, ওয়েবেল টেকনোলজি নামে শাখা সংস্থাটিকে আলাদা রাখা হচ্ছে। তার ব্যবসার পরিমাণই সবচেয়ে বেশি। প্রথমে হিসেবের সুবিধার জন্য ওয়েবেলের সঙ্গে মিশবে ওয়েবেল টেকনোলজি। পরে আলাদা হয়ে তা বেরিয়ে আসবে। তারা কাজ করবে ই-গভর্ন্যান্সের নোডাল এজেন্সি হিসেবে।
এখন ওয়েবেলের মূল সংস্থা ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (ডব্লিউ বি ই আই ডি এল)। এ ছাড়া রয়েছে ছ’টি শাখা— ওয়েবেল ইনফর্ম্যাটিক্স, ওয়েবেল মিডিয়াট্রনিক্স, ওয়েবেল ইলেকট্রনিক কমিউনিকেশন সিস্টেমস, ওয়েবেল টেকনোলজি, ওয়েবেল কমিউনিকেশন ইন্ডাস্ট্রিজ ও ওয়েবেল কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স। সব মিলিয়ে কর্মী প্রায় ৪০০। তবে শেষ দু’টি বন্ধ।