শুল্ক ঘিরে চিন-মার্কিন হুমকি আর হুঙ্কারে গত সপ্তাহে সরগরম ছিল বিশ্বের অর্থনীতি। আর তার জেরে পতনের মুখে পড়েছে ভারত-সহ বিভিন্ন দেশের শেয়ার বাজার। গত সপ্তাহে সেনসেক্স নেমেছে প্রায় ১,৫০০ পয়েন্ট। অবস্থা যে আশু শোধরাবে, তারও ইঙ্গিত নেই।
দেড় সপ্তাহের মধ্যে লোকসভা ভোটের ফল বেরোবে। ফলে সে দিকে চোখ রেখেও হাত খুলে টাকা ঢালছেন না লগ্নিকারীরা। অন্য দিকে বিভিন্ন সংস্থার ফল আশাব্যঞ্জক হয়নি। মার্চে শিল্পোৎপাদন সরাসরি কমার সঙ্গেই পরিসংখ্যান বলছে, কমেছে মূলধনী পণ্য উৎপাদনও, যা অন্যান্য শিল্পের কাজে লাগে। এর জের বিভিন্ন সংস্থার দরে পড়বে। ফলে সব মিলিয়ে শেয়ার বাজার সম্পর্কে এখনই আশার আলো দেখানো যাচ্ছে না।
ভোটের মুখে বাজারে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ার জের পড়েছে ফান্ডে লগ্নিতেও। এপ্রিলে ইকুইটি (শেয়ার ভিত্তিক) ফান্ডে লগ্নি ৫৭% কমে দাঁড়িয়েছে ৪,৬০৯ কোটি টাকায়। ২০১৮ সালের এই সময়ে তা ছিল ১০,৭২৪ কোটি। গত কয়েক মাসে সূচক চাঙ্গা থাকার অন্যতম কারণ ছিল ফান্ডের পথে মোটা টাকা নিয়মিত বাজারে লগ্নি হওয়া। এখন ফান্ডে লগ্নি কমলে, বাজারের উপরে চাপ বাড়বে। আবার ডেট (ঋণপত্র নির্ভর) ফান্ডেও অনিশ্চয়তা বেড়েছে। আগামী কয়েক মাসও তা বহাল থাকবে বলে ধারণা।
এই অস্থিরতার জেরে লগ্নির অন্য পথ খুঁজছেন মানুষ। বাছছেন এমন প্রকল্প, যেখানে আসল ও সুদ পাওয়ার নিশ্চয়তা রয়েছে। এদের মধ্যে চাহিদা রয়েছে ব্যাঙ্ক, সরকারি বন্ড ও কিছুটা গৃহঋণ সংস্থার মেয়াদি আমানতের। এ ছাড়াও প্রবীণ নাগরিকদের সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম, প্রধানমন্ত্রী বয়োবন্দনার মতো প্রকল্প রয়েছে। তবে মনে রাখতে হবে, সাধারণত এই সব প্রকল্পের আয় করযোগ্য হয়।
এ দিকে গত সপ্তাহেও প্রকাশিত হয়েছে বেশ কিছু সংস্থার ফল। গত অর্থবর্ষের শেষ তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) স্টেট ব্যাঙ্ক ঘরে তুলেছে ৮৩৮ কোটি টাকার নিট মুনাফা। আগের বছর এই সময়ে লোকসান ছিল ৭,৭১৮ কোটি। ওই তিন মাসে এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের লোকসান বেড়ে হয়েছে ৩,৮৩৪ কোটি। লার্সেন অ্যান্ড টুব্রোর নিট মুনাফা ৭.৯% বেড়ে ছুঁয়েছে ৩,৪১৮ কোটি টাকা। টাইটানের লাভ ১৪.৪১% বেড়ে হয়েছে ৩৪৮ কোটি।
নিট মুনাফা ৫% কমে ৯৬৯ কোটিতে নামলেও, চলতি অর্থবর্ষ নিয়ে আশার কথা শুনিয়েছে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক। ২ টাকা মূল দামের প্রতি শেয়ারকে ১ টাকার দু’টি শেয়ারে ভাঙা নিয়ে কথা হবে বলে জানিয়েছে এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক।
(মতামত ব্যক্তিগত)