উর্জিত পটেল
রাজনৈতিক স্তর থেকে চাপের প্রশ্নই নেই। ছ’সাত মাস আগে থেকেই উর্জিত পটেল রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের পদ থেকে সরে দাঁড়াতে চাইছিলেন বলে দাবি করলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উর্জিতের পদত্যাগের পর বস্তুত এই প্রথম মোদী সরকারের কোনও ব্যক্তি তাঁর পদত্যাগের ‘কারণ’ ব্যাখ্যা করলেন। তা-ও খোদ প্রধানমন্ত্রী নিজে। মোদী বলেন, ‘‘উনি নিজেই ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করতে চেয়ে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। আমি এই প্রথম এ কথা প্রকাশ করছি। পদত্যাগের ছ’সাত মাস আগে থেকে আমাকে বলছিলেন। উনি আমাকে চিঠিও লিখেছিলেন।’’
প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরে কংগ্রেস নেতাদের প্রশ্ন, তা হলে কি গত ছ’সাত মাস ধরেই মোদী সরকারের অর্থ মন্ত্রক উর্জিত পটেলের উপরে চাপ তৈরি করছিল? যাতে তিনি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারের অর্থ সরকারের সিন্দুকে পাঠিয়ে দেন? যাতে তিনি লোকসভা ভোটের আগে অনাদায়ি দেনাগ্রস্ত ব্যাঙ্কগুলিকে আরও ঋণ বিলি করতে ছাড়পত্র দিয়ে দেন? যাতে নির্বাচনের আগে বিজেপির ভোটব্যাঙ্ক ব্যাবসায়ীদের সুবিধা হয়! না হলে কী কারণে উর্জিত পদত্যাগ করতে চাইবেন?
গত ১০ ডিসেম্বর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের পদে তিন বছরের মেয়াদ ফুরনোর আগেই পদত্যাগ করেন উর্জিত পটেল। তার আগেই তাঁর ডেপুটি বিরল আচার্য রিজার্ভ ব্যাঙ্কের উপরে সরকারি চাপ নিয়ে মুখ খুলে সরকারকে সাবধান করেছিলেন। এর পরে জানা যায়, রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে দিয়ে নিজের ইচ্ছে মতো কাজ করাতে অর্থ মন্ত্রক রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আইনের কখনও কাজে না লাগানো ধারাকে কাজে লাগিয়েছে। বোর্ডে সরকার মনোনীত সদস্য সঙ্ঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ এস গুরুমূর্তিরাও সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। কংগ্রেস নেতাদের যুক্তি, প্রধানমন্ত্রীর কথা থেকেই স্পষ্ট, গোটা বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার আগে থেকেই উর্জিতের উপর চাপ তৈরি করা হচ্ছিল। মোদী জমানায় রঘুরাম রাজন দ্বিতীয় দফায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের পদে থাকতে চাননি। উর্জিত প্রথম দফার মেয়াদ ফুরনোর আগেই বিদায় নেন।