সিদ্ধান্ত হয়েছিল গত নভেম্বরে রাজ্যে মন্ত্রিসভার বৈঠকেই। নাম একই রেখে ডিপিএলের (দুর্গাপুর প্রোজেক্টস লিমিটেড) ১০০% মালিকানা পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাবে সিলমোহর দিয়েছিল রাজ্য। ঠিক হয়েছিল, ডিপিএল নিগমের সহযোগী বিদ্যুৎ উৎপাদক সংস্থা হিসেবে কাজ করবে। গত এক বছর সব দিক খতিয়ে দেখে অবশেষে ইংরেজি নতুন বছরের পয়লা তারিখ থেকে কার্যত শুরু হতে যাচ্ছে তাকে ঢেলে সাজার কাজ। তার বণ্টন, সংবহন এবং সেই সংক্রান্ত যাবতীয় কাজকর্ম, সম্পদ ও দায় কোন রাজ্য সরকারি সংস্থার আওতায় যাবে, সেই বিষয়েও সিদ্ধান্ত সারা।
লোকসানে ধুঁকতে থাকা ডিপিএলকে বাঁচাতে ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সংস্থা পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। প্রতিশ্রুতি ছিল, কোনও কর্মীর চাকরি যাবে না। তার পরেই ডিপিএলের মালিকানা হস্তান্তরের প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শুরু হয়।
এ জন্য অর্থ দফতরের সায় নিয়ে বিদ্যুৎ দফতর উপদেষ্টা সংস্থা নিয়োগ করার পাশাপাশি পুরো প্রক্রিয়া দেখভালের জন্য কমিটি গঠন করে। সূত্রের খবর, তাদের প্রথম পর্যায়ের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরে নজরদারি কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী সম্প্রতি বিদ্যুৎ দফতর ১ জানুয়ারি থেকেই ডিপিএল পুর্নগঠনের কার্যক্রম শুরুর ব্যাপারে অর্থ দফতরের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। তাতে সায় মিলেছে।
গত কয়েক বছর ধরেই এই সংস্থার আর্থিক অবস্থা বেশ খারাপ। সূত্রের খবর, বছরে ২০০ কোটি টাকার বেশি লোকসানের পাশাপাশি ডিপিএলের ঘাড়ে ঋণের বোঝাও কম নয়। প্রশাসনের কর্তাদের অভিযোগ ছিল, লোকসানের শিকড়, সংস্থার ঢিলেঢালা পরিচালনা ব্যবস্থা এবং পেশাদারিত্বের অভাব। তার জেরেই মার খেয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বণ্টন।
তাই ২০১৪ সাল থেকেই ডিপিএল পুর্নগঠনের ভাবনা শুরু করে রাজ্য। মাঝে সংস্থার জমি নিলাম করে আর্থিক হাল ফেরানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানিয়েছিলেন, যেমন করে হোক ডিপিএলকে ফের চাঙ্গা করা হবে। শেষে সংস্থাটিকে রাজ্যের বিদ্যুৎ সংস্থাগুলির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর অনুযায়ী, এত দিনের সেই পরিকল্পনাই অবশেষে কার্যকর হতে যাচ্ছে নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে।