রাজ্যে খুচরো বিপণন নীতি সেই তিমিরেই

২০১৫ সালে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রিটেলার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া (আরএআই) এই নীতি নিয়ে প্রাথমিক কথা-বার্তা শুরু করেছিল। সম্প্রতি কলকাতায় এসে আরএআই-এর প্রধান কুমার রাজাগোপালন জানান, আলোচনার স্তর পেরিয়ে আসল কাজ শুরু হতে এখনও সময় লাগবে।

Advertisement

গার্গী গুহঠাকুরতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৭ ০৪:৪৬
Share:

আলোচনা শুরু হয়েছে দু’বছর আগেই। কিন্তু রাজ্য এখনও তৈরি করে উঠতে পারেনি ‘রিটেল’ বা খুচরো বিপণন নীতি।

Advertisement

মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্নাটক ইতিমধ্যেই চালু করেছে এই নীতি। পঞ্জাব, হরিয়ানা, তেলঙ্গানা এবং গুজরাতও তৈরি করে ফেলেছে খুচরো বিপণন নীতি। অথচ এখনও দৌড়ে পিছিয়ে পশ্চিমবঙ্গ।

২০১৫ সালে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রিটেলার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া (আরএআই) এই নীতি নিয়ে প্রাথমিক কথা-বার্তা শুরু করেছিল। সম্প্রতি কলকাতায় এসে আরএআই-এর প্রধান কুমার রাজাগোপালন জানান, আলোচনার স্তর পেরিয়ে আসল কাজ শুরু হতে এখনও সময় লাগবে। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, খুচরো বিপণনে বিনিয়োগ টানতে রাজ্য স্তরে এই নীতি জরুরি। তাঁর মতে, পশ্চিমবঙ্গ মূলত ‘কনজিউমার’ বা ক্রেতা-প্রধান রাজ্য হওয়ার কারণে খুচরো বিপণনের বাড়বাড়ন্ত সরকারি কোষাগারেও ইতিবাচক ছাপ ফেলবে।

Advertisement

খুচরো বিপণন নীতি তৈরির ক্ষেত্রে একজানলা ব্যবস্থার উপর জোর দিয়েছে আরএআই। শিল্পের মতোই খুচরো বিপণনেও এই ব্যবস্থা তৈরি জরুরি বলে মনে করেন রাজাগোপালন। তাঁর মতে, বিভিন্ন সরকারি ছাড়পত্র পেতে দৌড়দৌড়ি করতে গিয়ে সময় নষ্ট হয়। সঙ্গে হয় হয়রানিও। সমাধানসূত্র হিসেবে তিনি মহারাষ্ট্রের রিটেল নীতির উদাহরণ দেন। মহারাষ্ট্র বিশেষ আধিকারিক নিয়োগ করে খুচরো বিপণনের জন্য একজানলা ব্যবস্থা তৈরি করেছে।

বস্তুত দেশে ৮% কর্মসংস্থান তৈরি করা রিটেল বা খুচরো বিপণন ক্ষেত্রে নতুন বিনিয়োগ টানতে জোরকদমে মাঠে নেমেছে মহারাষ্ট্র, তেলঙ্গানা, হরিয়ানা, কর্নাটক ও অন্ধ্রপ্রদেশের মতো রাজ্য। লগ্নি টানার ‘রোডম্যাপ’-কেই এ সব রাজ্য খুচরো বিপণন নীতির ভিত হিসেবে ব্যবহার করছে বলে জানান রাজাগোপালন। তিনি বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট নীতি থাকলে বিনিয়োগকারীরা স্বস্তি বোধ করেন। যেমন এই নীতির জোরে অন্ধ্রপ্রদেশ খুচরো বিপণনে ১৫০০ কোটি টাকা লগ্নি টেনেছে। তেলঙ্গানাও ১০০০ কোটি টাকার বেশি লগ্নি পেয়েছে।’’ বিশেষত আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড কোনও রাজ্যে পা রাখার আগে সংশ্লিষ্ট নিয়ম-কানুন খতিয়ে দেখে বলে দাবি তাঁর।

এক নজরে

• দেশে বছরে ব্যবসা বৃদ্ধি: ১২%

• ২০১৮ সালে ছোঁবে: ৯৫,০০০ কোটি ডলার

• বিদেশি লগ্নি:* ৯৪ কোটি ডলার

*২০০০-২০১৬ সাল পর্যন্ত

তথ্যসূত্র: আরএআই, কেন্দ্র

এ রাজ্যেও খুচরো ব্যবসায়ে দশ লক্ষের বেশি মানুষ কাজ করেন বলে রাজাগোপালনের দাবি। তিনি জানান, যে-কোনও কারণেই হোক, এ রাজ্য তুলনায় বড় শিল্পে কম লগ্নি টেনেছে। কর্মসংস্থানের নিরিখে সেই ঘাটতি অনেকটাই পুষিয়ে দিতে পারে খুচরো বিপণন। আর সেই মোটা অঙ্কের লগ্নি টানতে চাই নীতি। যে ভাবে রাজ্য শিল্পনীতি, তথ্যপ্রযুক্তি নীতি তৈরি করেছে, ঠিক সে ভাবেই।

আরএআই-এর তথ্যও বলছে, ভারতে ১২% বার্ষিক হারে বাড়ছে এই ব্যবসা। ২০১৮ সালে এই ব্যবসার পরিমাণ ছুঁয়ে ফেলবে ৯৫,০০০ কোটি ডলার। পাশাপাশি, কেন্দ্রের শিল্পনীতি ও উন্নয়ন দফতরের হিসেব অনুযায়ী ২০০০ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত প্রায় ৯৪ কোটি ডলার বিদেশি বিনিয়োগ টেনেছে এই ক্ষেত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন