সংসদে উর্জিত। ফাইল চিত্র
তখনও তিনি পদত্যাগ করেননি। অর্থ মন্ত্রকের সঙ্গে সংঘাত প্রকাশ্যেও আসেনি। অথচ নীরব মোদী-মেহুল চোক্সীদের প্রতারণা রুখতে না পারায় তাঁর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই পরিস্থিতিতে অর্থ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সামনে হাজির হয়ে শীর্ষ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর উর্জিত পটেল দাবি করেছিলেন, তাঁর অবস্থাটা অনেকটা ঢাল-তরোয়ালহীন নিধিরাম সর্দারের মতো। যাঁর হাতে না আছে অনাদায়ি ঋণের সমস্যা সমাধানের যথেষ্ট অস্ত্র, না রয়েছে প্রতারণা, জালিয়াতি রোখার ঢাল। এমনকি সরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে নজরদারির জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত ক্ষমতাও না কি তাদের হাতে নেই।
উর্জিতের সেই দাবি নিয়ে তখনই প্রশ্ন তুলেছিল অর্থ মন্ত্রক। এ বার কার্যত একই ধরনের প্রশ্ন তুলল সংসদীয় স্থায়ী কমিটিও। কংগ্রেস নেতা বীরাপ্পা মইলির নেতৃত্বাধীন কমিটির প্রশ্ন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হাতে যথেষ্ট ক্ষমতা নেই, না কি যে ক্ষমতা রয়েছে, তা ঠিক মতো কাজে লাগাতে পারছে না শীর্ষ ব্যাঙ্ক?
সংসদীয় কমিটির সুপারিশ, কেন্দ্র ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক মিলে কমিটি তৈরি করুক। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হাতে যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা না থাকার অভিযোগ সেখানে খতিয়ে দেখা হোক। স্থায়ী কমিটির বক্তব্য, ‘‘রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নালিশ জানাচ্ছে যে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার মতো যথেষ্ট ক্ষমতা নেই। অথচ দেখে মনে হচ্ছে, যে ক্ষমতা রয়েছে, তা কার্যকারিতার সঙ্গে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক প্রয়োগ করছে না।’’
ব্যাঙ্কে অনুৎপাদক সম্পদের সমস্যা সমাধানের জন্য মোদী সরকার দেউলিয়া বিধি চালু করেছিল। আজ অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি যুক্তি দিয়েছেন, দেউলিয়া বিধির প্রথম দু’বছরে যথেষ্ট সাফল্য মিলেছে। ব্যাঙ্ক ও ঋণদাতা সংস্থাগুলি প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা আদায় করতে পেরেছে। মার্চের মধ্যে আরও কিছু অনাদায়ি ঋণের মামলা সমাধান হয়ে গেলে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা ব্যাঙ্কগুলির ঘরে আসতে পারে।
স্থায়ী কমিটি অনাদায়ি ঋণ বা এনপিএ সমস্যা নিয়ে চিন্তা প্রকাশের পাশাপাশি ব্যাঙ্ক প্রতারণার ঘটনা বেড়ে যাওয়া নিয়েও চিন্তা প্রকাশ করেছে। যুক্তি, ২০১৬-১৭ সালে ব্যাঙ্ক প্রতারণার অঙ্ক ছিল ২৩,৯৩০ কোটি টাকা। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক হিসেব পরীক্ষার নতুন ব্যবস্থা চালু করার পরেও ২০১৭-১৮ সালে তা বেড়ে ৩২,০৪০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।