কলকাতায় দ্বিতীয় কেন্দ্র গড়তে চলেছে জার্মান বহুজাতিক মেট্রো ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি। সব কিছু ঠিকঠাক চললে জোকায় জমি কিনে তাদের দ্বিতীয় কেন্দ্র তৈরির কাজ চলতি বছরেই শুরু করে দিতে চায় ২৯টি দেশে ছড়িয়ে থাকা এই সংস্থা।
কলকাতায় ই এম বাইপাসে ২০০৮ সালে সংস্থার একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ সরবরাহ কেন্দ্র চালু হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, আরও তিনটি কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা ছিল তাদের। কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ও বারাসতে জমি চিহ্নিতও হয়েছিল। তবে সংশ্লিষ্ট শিল্পমহলের মতে, চুক্তি চাষ ও কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি পণ্য কেনার বিষয়ে বর্তমান রাজ্য সরকারের বিরূপ মনোভাবের কারণে সেই পরিকল্পনা পিছিয়ে যায়।
সম্প্রতি কৃষি বিপণন আইন বদল নিয়ে রাজ্য সরকার নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু করায় এ বার কিছুটা আশান্বিত সংস্থা। পাশাপাশি, কলকাতা কেন্দ্রের ব্যবসায়িক সাফল্যের কারণেও দ্বিতীয় কেন্দ্র গড়ার পাকা সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেট্রো ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ভারতে যে ১৬টি কেন্দ্র রয়েছে, সেগুলির মধ্যে লাভের নিরিখে কলকাতার স্থান উপরের দিকে।
কেন্দ্রীয় কৃষি বিপণন আইন অন্যান্য ১৬টি রাজ্যে চালু হয়ে গেলেও পশ্চিমবঙ্গ-সহ কয়েকটি রাজ্যে তা মানা হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এ বার এই রাজ্যেও আইন বদল হওয়ার সম্ভাবনা সংস্থার সম্প্রসারণ পরিকল্পনাকে নতুন করে চাঙ্গা করেছে। মেট্রোর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এক স্থানীয় সংস্থার কাছেই জোকায় জমি কেনার জন্য সাহায্য চেয়েছে তারা। প্রসঙ্গত, মেট্রো ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারির লাভের ৩০ শতাংশই আসে তাজা কৃষি পণ্য বেচে। তাই এ রাজ্যে পা রাখার পেছনেও ছিল এখানে যথেষ্ট পরিমাণে কৃষি পণ্য উৎপাদন।
রাজ্যে অবশ্য প্রথম থেকেই নানা বাধায় জড়িয়েছে মেট্রোর লগ্নি। ‘এগ্রিকালচারাল প্রোডিউস মার্কেট কমিটি’ বা এ পি এম সি ছাড়পত্র নিয়ে টালবাহানা তো ছিলই। সেই সঙ্গে ছিল জমি নিয়ে আইনি সমস্যাও। ছোট ব্যবসায়ীরা মার খাবেন, এই যুক্তিতে মেট্রোর বিনিয়োগ ঠেকানোর চেষ্টা করেছিল বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক। বহু বিতর্কের পরে ২০০৬ সালে এ পি এম সি লাইসেন্স পায় তারা। তবে এর পরেও রাজনৈতিক বাধার কারণে কেন্দ্র চালু করতে দেরি হয়।
২০০৬ সালে এই রাজ্যে ব্যবসা শুরুর কথা জানান মেট্রো গোষ্ঠীর কর্তারা। তাঁরা জানিয়েছিলেন, আগামী তিন বছরে এ রাজ্যে পাঁচটি অত্যাধুনিক স্বয়ংসম্পূর্ণ গুদাম তৈরি করা হবে। যেগুলি মেট্রো গড়বে, সংরক্ষণের জন্য তাতে থাকবে হিমঘর। থাকবে বণ্টনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও।