সদ্য ছেড়ে আসা ২০১৪ সালের শেষ দিনে গাড়ির উৎপাদন শুল্কে ছাড় তুলে নেওয়ার কথা জানিয়েছিল কেন্দ্র। ফলে নতুন বছরের প্রথমেই গাড়ির দাম বাড়ানোর ঘোষণা ছিল স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। সেই অনুযায়ী, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই মারুতি-সুজুকি, হুন্ডাই, জেনারেল মোটরস ও হোন্ডা জানিয়ে দিল সেই পথে হাঁটার কথা। দাম বাড়ানোর কথা জানিয়েছে দেশের বৃহত্তম দু’চাকার গাড়ি সংস্থা হিরোমোটো কর্পও। তবে কতটা বাড়ানো হচ্ছে তা নিয়ে মুখ খোলেনি তারা।
দেশের বৃহত্তম গাড়ি সংস্থা মারুতি-সুজুকি ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ৭,৮৫০ থেকে ৩১,৬০০ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়েছে তারা। যেমন, ওমনির দাম বাড়ছে সবচেয়ে কম, ৭,৮৫০ টাকা। অত্যন্ত জনপ্রিয় অল্টো ৮০০-এর দাম বাড়ছে ৮,৫০০ থেকে ১২,৭০০ টাকা, সুইফটের ১৫,৮৫০ থেকে ২৫,১৫০ টাকা, ডিজায়ারের ১৭,৫০০ থেকে ২৬,৬৫০ টাকা। ওয়াগন-আর বাড়ছে ১২,৫০০ থেকে ১৫,৭০০ টাকা পর্যন্ত। সংস্থার নতুন কমপ্যাক্ট গাড়ি সেলেরিওর দাম বাড়ানো হচ্ছে ১৩,৬০০ থেকে ১৭,২০০ টাকা। মারুতির আর এক নয়া মডেল সিয়াজ কেনার খরচ বাড়ছে সব থেকে বেশি, ২২,৪৫০ থেকে ৩১,৬০০ টাকা।
জেনারেল মোটরস তাদের বিভিন্ন মডেলের দাম ১৫ হাজার থেকে ৬১ হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে। হোন্ডা কারস ইন্ডিয়া গাড়ির দাম বাড়িয়েছে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
তবে দাম বাড়ানোর পরিমাণের নিরিখে সব থেকে এগিয়ে হুন্ডাই। তারা গাড়ির দাম বাড়িয়েছে ন্যূনতম ১৫ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা পর্যন্ত। বর্ধিত সমস্ত দামই কার্যকর ধরা হবে গত ১ জানুয়ারি থেকে।
সব সংস্থারই দাবি, গাড়ি তৈরির খরচ এক লাফে বেশ খানিকটা বেড়ে যাওয়ার কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। আর এর জন্য মূলত দায়ী কেন্দ্রের উৎপাদন শুল্কে ছাড় গুটিয়ে নেওয়ার পদক্ষেপ। হিরোমোটো কর্পের মুখপাত্র বলেন, শুল্ক বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়ে গিয়েছেন তাঁরা। এর জেরে বেড়ে যাওয়া খরচ সামলাতে বাধ্য হয়ে দাম বাড়াতে হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত দু’বছর মন্দা চলার পর চলতি বছর থেকেই ভাগ্য খুলবে বলে আশা করে বসেছিল গাড়ি শিল্প। কিন্তু এ বার তারা উল্টে সিঁঁদুরে মেঘ দেখছে। দাম বাড়ানোর পদক্ষেপে ক্রেতারা যে দূরে সরে যেতে পারেন, সেই আশঙ্কাই তাড়া করে ফিরছে তাদের। যে কারণে বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলছেন, শুল্ক ওঠার বিরূপ প্রভাব পড়বে গাড়ি শিল্পে। আরও মন্থর হবে তার বৃদ্ধির হার। কারণ এমনিতেই এই শিল্পে এখনও সঙ্কট কাটেনি। আর তার জেরে আগামী দিনে গোটা উৎপাদন শিল্পই ভুগতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।