কৃষ্ণা-গোদাবরী অববাহিকায় ডি-থ্রি ব্লক ছাড়ছে রিলায়্যান্স

প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম নিয়ে কেন্দ্র শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেবে, সেই উৎকণ্ঠা তো রয়েইছে। গত বছর দেড়েক ধরে তার সঙ্গে যোগ হয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের নিষেধাজ্ঞা। মূলত এই দুই কারণেই কৃষ্ণা-গোদাবরী অববাহিকায় (কে জি বেসিন) ডি-থ্রি ব্লক ছেড়ে দিতে চলেছে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ (আরআইএল)।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:১৬
Share:

প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম নিয়ে কেন্দ্র শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেবে, সেই উৎকণ্ঠা তো রয়েইছে। গত বছর দেড়েক ধরে তার সঙ্গে যোগ হয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের নিষেধাজ্ঞা। মূলত এই দুই কারণেই কৃষ্ণা-গোদাবরী অববাহিকায় (কে জি বেসিন) ডি-থ্রি ব্লক ছেড়ে দিতে চলেছে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ (আরআইএল)।

Advertisement

ব্রিটিশ সংস্থা হার্ডি অয়েল অ্যান্ড গ্যাসের সঙ্গে জোট বেঁধে ২০০৫ সালে ওই ডি-থ্রি ব্লক থেকে গ্যাস তোলার অনুমতি পেয়েছিল মুকেশ অম্বানীর সংস্থা আরআইএল। পরে প্রকল্পের ৩০% অংশীদারি ব্রিটিশ বহুজাতিক বিপি-কে বিক্রি করে তারা। ফলে এখন প্রকল্পে রিলায়্যান্স, বিপি এবং হার্ডি-র অংশীদারি যথাক্রমে ৬০, ৩০ ও ১০%। বুধবার এই হার্ডিই জানিয়েছে যে, শেষমেশ ডি-থ্রি ব্লক ছেড়ে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রিলায়্যান্স। এবং প্রকল্পের শরিক হিসেবে সেই সিদ্ধান্তে সায় দিয়েছে তারা।

২০১২-র অক্টোবরে ওই ব্লকের একটি অংশে নতুন করে গ্যাস খোঁজার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। রিলায়্যান্স-সহ তিন সংস্থাকে সে কথা জানিয়েছিল তেল ও গ্যাস নিয়ন্ত্রক ডিজিসিএ। তখনই তিন সংস্থা দেখে, এর ফলে ৩,২৮৮ বর্গ কিলোমিটারে ছড়িয়ে থাকা ব্লকের ৩৮ শতাংশেই (১,২৪২ বর্গ কিলোমিটার) আর গ্যাস খোঁজা যাবে না। যদিও ওই নিষেধাজ্ঞা চাপানো অঞ্চলে গ্যাসের বড়সড় ভাণ্ডার ছিল বলে হার্ডির দাবি।

Advertisement

অবশ্য শুধু প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের নিষেধাজ্ঞা নয়। কে জি বেসিনের ওই ব্লক ছাড়ার পিছনে বড় ভূমিকা নিয়েছে প্রাকৃতিক গ্যাসের দর নিয়ে আজ দীর্ঘ দিন ধরে চলতে থাকা অনিশ্চয়তাও।

শুরুতে প্রতি ১০ লক্ষ ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট গ্যাসের জন্য ৪.২ ডলার দাম বেঁধেছিল কেন্দ্র। কিন্তু রিলায়্যান্সের দাবি ছিল, গ্যাস তুলতে যা খরচ হচ্ছে, তাতে ওই দরে উৎপাদন চালানো শক্ত। তাই দাম বাড়াতে কেন্দ্রের কাছে ক্রমাগত দরবার করে গিয়েছে তারা। দাবি করেছে, ওই দর হওয়া উচিত ৮.৪ ডলার।

সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, আরআইএল-সহ তিন সংস্থারই হয়তো আশা ছিল, কেন্দ্রে নতুন সরকার আসার পরে তারা ওই দর বেঁধে দিতে পারে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে এখনও তা হয়নি। গ্যাসের দর এক লাফে দ্বিগুণ করলে প্রথমেই সার এবং বিদ্যুতের দাম বাড়ার আশঙ্কা। তাই আপাতত ওই দর আগের তুলনায় ৩৩% বাড়িয়ে ৫.৬১ ডলারে বেঁধেছে মোদী-সরকার। দাম নিয়ে এই টানাপড়েনও তাই রিলায়্যান্সের ডি-থ্রি ব্লক ছাড়ার অন্যতম কারণ বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।

কে জি বেসিনে গ্যাস উত্তোলনের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই গ্যাস সরবরাহ বা গ্যাস তোলার খরচের মতো নানা বিষয়ে বিতর্ক তাড়া করেছে আর আই এল-কে। হার্ডির বিবৃতি অনুযায়ী, ডি-থ্রি ব্লকে গ্যাস তোলায় সায় মেলার পর থেকে এ পর্যন্ত ২২ কোটি ডলারেরও বেশি ঢেলেছে ৩ সংস্থা। আবিষ্কৃত হয়েছে ৪টি গুরুত্বপূর্ণ গ্যাস কূপ। অথচ তা সত্ত্বেও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের নিষেধাজ্ঞা ও গ্যাসের দর নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে শেষমেশ তারা ডি-থ্রি ব্লক ছাড়তে বাধ্য হল বলেই হার্ডির দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন