কর পরিকল্পনা করতে হবে নয়া সরকারের বাজেট পেশের পর

উত্তেজনা টোয়েন্টি টোয়েন্টির মতো। কিন্তু ফলাফলের ক্ষেত্রে চলতি নির্বাচন যেন টেস্ট ম্যাচ। ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে ১৬ মে পর্যন্ত। নানা সমীক্ষায় ভোটের ফলাফলে গেরুয়া রং সবুজ ও লালকে ছাপিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তুলে ধরা হলেও, গত সপ্তাহ শেয়ার বাজার কিন্তু ছিল লালের দখলে। রোজই নেমেছে তা। সূচক কয়েক দিন সবুজে খুললেও বন্ধ হয়েছে সেই লালেই। ফলে, সর্বকালীন উচ্চতা থেকে সেনসেক্স নেমে এসেছে ২২৪০৪ অঙ্কে।

Advertisement

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৪ ০২:১২
Share:

উত্তেজনা টোয়েন্টি টোয়েন্টির মতো। কিন্তু ফলাফলের ক্ষেত্রে চলতি নির্বাচন যেন টেস্ট ম্যাচ। ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে ১৬ মে পর্যন্ত। নানা সমীক্ষায় ভোটের ফলাফলে গেরুয়া রং সবুজ ও লালকে ছাপিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তুলে ধরা হলেও, গত সপ্তাহ শেয়ার বাজার কিন্তু ছিল লালের দখলে। রোজই নেমেছে তা। সূচক কয়েক দিন সবুজে খুললেও বন্ধ হয়েছে সেই লালেই। ফলে, সর্বকালীন উচ্চতা থেকে সেনসেক্স নেমে এসেছে ২২৪০৪ অঙ্কে। ৬৭০০ পয়েন্টের নীচে নেমেছে নিফ্টিও। অন্য দিনগুলি ভাল করলেও বুধবার ধস নেমেছিল স্মল ক্যাপ সূচকে। মিড ক্যাপের অবস্থান ভালই।

Advertisement

গত সপ্তাহেও প্রকাশিত হয়েছে কিছু সংস্থার আর্থিক ফলাফল। সব মিলিয়ে ফল এখনও পর্যন্ত মোটের উপর ভালই। বিভিন্ন শিল্পে যে ধরনের মন্থরতা এসেছে তা কিন্তু সংস্থার ফলাফলে এখনও পর্যন্ত ততটা ধরা পড়েনি। বাজার এখন অপেক্ষা করছে ১৬ মে দিনটির জন্য। ভোটের সম্ভাব্য ফলাফলের ভিত্তিতে সূচক এরই মধ্যে অনেকটা বেড়ে আছে। অনুমানের সঙ্গে ফল কম-বেশি মিললে সূচক আরও ৫০০/১০০০ পয়েন্ট বেড়ে ২৩ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। আর উল্টোটা হলে হতাশাজনিত পতনের সম্ভাবনা থাকবে। অর্থাৎ ১৬ তারিখ পর্যন্ত ধরে খেলতে হবে। ভোটের ফলই হবে ছোট মেয়াদে বাজারের বড় ‘ট্রিগার’।

আনন্দের কথা বৃষ্টি এসেছে। শুকিয়ে যাওয়া সব্জি খেতে প্রাণ ফিরেছে। দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা হয়তো এ বার কমবে। বৃষ্টি পেয়েছে উত্তর-পূর্বের প্রায় খরা কবলিত সমস্ত চা বাগান। চা শিল্পের কাছে এটি একটি বড় খবর। বরুণ দেবতা গোটা দেশের প্রতি সমান সদয় হলে তা অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়াতে ও বাজারকে চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করবে।

Advertisement

দেখতে দেখতে নতুন অর্থবর্ষের একটা মাস অতিক্রান্ত। করদাতাদের এখন দু’টি কাজ। করের রিটার্ন তৈরি এবং ২০১৪-’১৫ বছরের জন্য কর সাশ্রয়ের পরিকল্পনা করে লগ্নিতে নামা। রিটার্ন দাখিলের জন্য আয়ের বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে আগে টি ডি এস সার্টিফিকেট জোগাড় করতে হবে। ফর্ম-১৬ পেতে হবে নিয়োগকর্তার থেকে।

কর পরিকল্পনা এখনই হয়তো করা সম্ভব হবে না পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ না-হওয়ার কারণে। নতুন সরকারের প্রথম বড় কাজ হবে সংসদে ২০১৪-’১৫ বছরের আর্থিক বাজেট পেশ করা। বাজেট দেখে বোঝা যাবে অর্থনীতি সম্পর্কে নতুন সরকারের চিন্তাভাবনা। অনেকেরই আশা, করহীন আয়ের মাত্রা কিছুটা বাড়ানো হতে পারে। পরিবর্তন আনা হতে পারে কর সংক্রান্ত অন্য কিছু ধারাতেও। কর পরিকল্পনা করতে হবে সব কিছু দেখে নিয়ে তবেই। জুন মাসের মধ্যে বাজেট পেশ হবে আশা করা যায়। এ বারের বাজেটের বড় রকমের প্রভাব থাকবে শেয়ার বাজারের উপরও। কেন্দ্রে যদি শক্তিশালী স্থায়ী সরকার গঠিত হয়, তবে তা বাজারকে চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করবে। ভরসা পাবে বিদেশি লগ্নিকারীরা। বাজেট দেখে বোঝা যাবে সরকারের শিল্পনীতি। বাজেট বাজারের পছন্দ হলে হয়তো আমরা সূচককে নতুন নজির গড়তে দেখব। অর্থাৎ ১৬ মে কী হয় তার উপর নির্ভর করছে অনেক কিছুই।

নজর রাখতে হবে মূল্যবৃদ্ধি এবং সুদের হারের উপরেও। এর অনেকটাই নির্ভর করবে এ বার আকাশ কতটা সদয় হয় তার উপর। অর্থনীতির উপর বৃষ্টি পর্যাপ্ত হওয়া বা না-হওয়ার প্রভাব বিরাট। বাজারে সুদ এখনও বেশ চড়া। কত দিনে নামতে শুরু করবে এখনই তা আন্দাজ করা যাচ্ছে না। এই বাজারে শর্ট টার্ম বন্ড ফান্ডে লগ্নি লাভজনক হতে পারে। আয় হতে পারে ৯ শতাংশের আশপাশে। এক বছর ধরে রাখলে পাওয়া যাবে করের সুবিধাও। ইক্যুইটিতে লগ্নি করতে হবে চিন্তাভাবনা করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন