চড়া বাজারে শেয়ার বিভাজনে ভাল লাভ লগ্নিকারীর

শেয়ার বাজার তুঙ্গে। বহু শেয়ার এখন সর্বকালীন উচ্চতায়। ফলে তা ছোট লগ্নিকারীদের কাছে এক রকম ধরাছোঁয়ার বাইরে। সাধারণ মানুষ যাতে ‘নামী’ শেয়ারে লগ্নি করতে পারেন, তার জন্য অনেক সংস্থা যাদের শেয়ারের দর বেশ উপরের দিকে, তারা প্রতিটি ১০ টাকার ফেসভ্যালু-যুক্ত শেয়ারকে ১০টি ১ টাকার অথবা ৫টি ২ টাকার শেয়ারে বিভাজন করছে। এর ফলে শেয়ারের সংখ্যা ১০ গুণ বা ৫ গুণ বেড়ে উঠছে।

Advertisement

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:৪১
Share:

শেয়ার বাজার তুঙ্গে। বহু শেয়ার এখন সর্বকালীন উচ্চতায়। ফলে তা ছোট লগ্নিকারীদের কাছে এক রকম ধরাছোঁয়ার বাইরে। সাধারণ মানুষ যাতে ‘নামী’ শেয়ারে লগ্নি করতে পারেন, তার জন্য অনেক সংস্থা যাদের শেয়ারের দর বেশ উপরের দিকে, তারা প্রতিটি ১০ টাকার ফেসভ্যালু-যুক্ত শেয়ারকে ১০টি ১ টাকার অথবা ৫টি ২ টাকার শেয়ারে বিভাজন করছে। এর ফলে শেয়ারের সংখ্যা ১০ গুণ বা ৫ গুণ বেড়ে উঠছে। অন্য দিকে ওই শেয়ারের বাজার দর নেমে আসছে যথাক্রমে এক-দশমাংশ অথবা এক-পঞ্চমাংশের কাছাকাছি। এর ফলে দাম নেমে আসছে নাগালের মধ্যে। বিভাজিত হওয়ায় বাড়ছে শেয়ারের জোগানও।

Advertisement

একটি কাল্পনিক উদাহরণ দিয়ে ব্যাপারটি বোঝার চেষ্টা করা যাক। ধরা যাক, একটি সংস্থার ১০ টাকা ফেসভ্যালু-যুক্ত শেয়ারের বাজার দর ৫,০০০ টাকা। ফলে অনেকেরই নাগালের বাইরে। এই ১০ টাকার শেয়ারকে যদি ভেঙে ১ টাকা মূল্যের ১০টি শেয়ার করা হয়, তবে তাৎক্ষণিক ভাবে এই শেয়ারের বাজার দর নেমে আসতে পারে ৫০০ টাকার আশেপাশে। নেমে আসা দামে এই শেয়ার হয়তো অনেকের পক্ষেই কেনা সম্ভব হবে। এর ফলে বেড়ে উঠতে পারে ওই শেয়ারের চাহিদা।

শেয়ার বিভাজনের পরে চাহিদা হঠাৎ বেড়ে ওঠে বলে শেয়ারের দামও সাধারণত ৫ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে উঠতে দেখা যায়। দাম বাড়তে শুরু করে বিভাজনের সিদ্ধান্ত ঘোষিত হওয়ার পর থেকেই। চলে বিভাজনের পরেও। সম্প্রতি এই কারণে আমরা দাম বাড়তে দেখেছি অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক, স্টেট ব্যাঙ্ক এবং আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক শেয়ারের। বিভাজনের সিদ্ধান্তে দাম অনেকটাই বেড়ে উঠেছে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক শেয়ারেরও। সম্প্রতি বিভাজন করেছে অথবা বিভাজনের পথে এগোচ্ছে ৮টি সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাঙ্ক। ব্যাঙ্ক শেয়ারের মধ্যেই এই ভাঙার প্রবণতা একটু বেশি দেখা যাচ্ছে। সঙ্গের সারণিতে দেওয়া হল বিশদ তথ্য। ২০১৩ সালে শেয়ার বিভাজন করেছে ৭৯টি সংস্থা। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত এই পথে হেঁটেছে ৭৫টি সংস্থা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিভাজনের কারণে লাভবান হয়েছেন সংশ্লিষ্ট কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা।

Advertisement

স্টেট ব্যাঙ্কের ১০ টাকা দামের শেয়ার বিভাজনের আগে ঘোরাফেরা করছিল ২,৮০০ টাকার আশেপাশে। এই শেয়ার ১ টাকার ১০টি শেয়ারে বিভাজিত হওয়া মাত্র নতুন শেয়ারের দাম ছাড়াল ৩০০ টাকা এবং মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে তা উঠে এসেছে ৩২০ টাকার আশেপাশে।

একই ভাবে বিভাজনের আগে এবং পরে দাম বেড়েছে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক শেয়ারের। বিভাজনের খবরে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের শেয়ার ১,০০০ টাকা ছাড়িয়ে প্রথম বার স্পর্শ করেছে ১,১০০ টাকা। এর আগে বিভাজনের কারণে ভাল লাভের সন্ধান পেয়েছেন অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের শেয়ারে লগ্নিকারীরা। সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলির শেয়ারহোল্ডাররা নিজেদের ডিম্যাট অ্যাকাউন্টে দেখে নিন বিভাজিত শেয়ার জমা পড়েছে কি না।

প্রসঙ্গত, কিছু কিছু কোম্পানির ঘরে জমে উঠছে লাভের পাহাড়। সেবি চাইছে, এই পাহাড় পরিমাণ নগদ টাকা ধরে না-রেখে তার একাংশ বণ্টন করা হোক শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে। শেয়ার বাজারে নথিবদ্ধ কোম্পানিগুলির একটি ডিভিডেন্ড পলিসি থাকা উচিত বলে সেবি মনে করছে। এই ব্যাপারে আলাপ-আলোচনাও শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে ব্যাপারটি স্থান পেতে পারে লিস্টিং এগ্রিমেন্টে।

কন্যাসন্তানদের জন্য একটি নতুন সঞ্চয় প্রকল্পের কথা গত সপ্তাহে ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ব্যাঙ্ক এবং ডাকঘরে খোলা যাবে এই অ্যাকাউন্ট। কন্যাসন্তানের নামে টাকা জমানো যাবে তার বয়স ১৪ বছর পূর্ণ না-হওয়া পর্যন্ত। অ্যাকাউন্টের মেয়াদ ২১ বছর। অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে কন্যাসন্তানের বয়স ১০ বছর পূর্ণ না-হওয়া পর্যন্ত। সংশ্লিষ্ট কন্যাসন্তানের উচ্চশিক্ষা অথবা বিবাহের জন্য তার বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার পরে এই অ্যাকাউন্ট থেকে জমা টাকার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত তোলা যেতে পারে। প্রকল্পে সুদের হার কী হবে, তা এখনও জানানো হয়নি। অরুণ জেটলির প্রথম বাজেটে বলা হয়েছিল এই প্রকল্পের কথা। অন্য দিকে, এর আগে কিসান বিকাশপত্র পুনরায় চালু করার কথাও ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন