বৈঠক ডাকলেন ডেপুটি শ্রম কমিশনার

টয়োটার বেঙ্গালুরু কারখানা চালু করতে হস্তক্ষেপ কর্নাটক সরকারের

টয়োটা-র বেঙ্গালুরু কারখানার জট খুলতে হস্তক্ষেপ করল কর্নাটক সরকার। সে রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী পরমেশ্বর নায়ক মঙ্গলবার সংস্থা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করলেন। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বৈঠক ডেকেছেন শ্রম দফতরের ডেপুটি কমিশনার। বেতন সংশোধন-সহ শ্রমিক ইউনিয়নের বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনা ভেস্তে যাওয়া ও কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষকে ঘিরে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় রবিবার থেকে বেঙ্গালুরুর বিদাদির কারখানায় লক-আউট ঘোষণা করেছে টয়োটা কির্লোস্কর মোটর।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৪ ০১:০৬
Share:

অনিশ্চয়তা আর কত দিন? লকআউটের জেরে মঙ্গলবার শুনশান কারখানা চত্বর। ছবি: রয়টার্স।

টয়োটা-র বেঙ্গালুরু কারখানার জট খুলতে হস্তক্ষেপ করল কর্নাটক সরকার। সে রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী পরমেশ্বর নায়ক মঙ্গলবার সংস্থা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করলেন। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বৈঠক ডেকেছেন শ্রম দফতরের ডেপুটি কমিশনার।

Advertisement

বেতন সংশোধন-সহ শ্রমিক ইউনিয়নের বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনা ভেস্তে যাওয়া ও কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষকে ঘিরে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় রবিবার থেকে বেঙ্গালুরুর বিদাদির কারখানায় লক-আউট ঘোষণা করেছে টয়োটা কির্লোস্কর মোটর। এ ঘটনার জন্য কর্তৃপক্ষ ও ইউনিয়ন, দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছে।

জট খোলার চেষ্টায় এ দিন নিজের বাড়িতেই উভয়পক্ষের সঙ্গে আলাদা ভাবে বৈঠক করেন শ্রমমন্ত্রী। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার সুষ্ঠু সমাধানের চেষ্টা করছে। ডেপুটি কমিশনার এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। আশা করছি, কারখানা শীঘ্রই চালু হবে।”

Advertisement

দ্রুত রফাসূত্র বার করার ব্যাপারে আশাবাদী হলেও সংস্থা কর্তৃপক্ষ এ দিনও জানিয়েছেন, কারখানায় লক-আউট চলছে। শ্রমমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে ই-মেল বার্তায় তাঁরা জানিয়েছেন, বেতন সংক্রান্ত গোটা বিষয়টি ও লক-আউটের কারণ তাঁরা শ্রমমন্ত্রীকে ব্যাখ্যা করেন। সব শুনে তিনি বিষয়টি বুঝেছেন বলেও দাবি কর্তৃপক্ষের। আজ তাঁদের প্রতিনিধিরা ডেপুটি কমিশনারের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন। দ্রুত এই সমস্যার সমাধানের ব্যাপারে আশাবাদী হলেও লকআউট তোলার ব্যাপারে কোনও ইঙ্গিত তাঁরা এ দিন দেননি।

সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান শেখর বিশ্বনাথন জানান, রফাসূত্রের ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে পারবেন না। তবে তাঁরা চান, কর্মীরা কাজে ফিরুন। না-হলে উৎপাদন মার খাচ্ছে। কারণ ওই কারখানায় দৈনিক ৫৭০টি গাড়ি তৈরি হয়। যদিও সোমবার টোকিও থেকে সংস্থাটির মুখপাত্র সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছিলেন, সেই সংখ্যাটা ৭০০।

শ্রমিক ইউনিয়নের অভিযোগ ছিল, লক-আউটের ব্যাপারে যে আগাম নোটিস দেওয়ার নিয়ম রয়েছে, তা মানেনি সংস্থা। পাশাপাশি, আগে যে-হারে বেতন বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি কর্তৃপক্ষ দিয়েছিলেন, এখন তা তাঁরা মানতে চাইছেন না। এ সব অভিযোগ অস্বীকার করে কর্তৃপক্ষের পাল্টা দাবি, নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করলে নোটিস ছাড়াই লক-আউট ঘোষণা করা যায়। এবং সেই আশঙ্কাই তাঁরা বিবৃতিতে স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন। বেতন বৃদ্ধির হারের প্রশ্নেও কর্তৃপক্ষের দাবি, এমন কোনও চুক্তি বা নির্দিষ্ট কিছু স্থির হয়নি।

কর্মী ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট প্রসন্ন কুমার জানিয়েছেন, তাঁরাও শ্রম দফতরের ডেপুটি কমিশনারের সঙ্গে দেখা করবেন। এ দিনও তিনি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। তাঁর দাবি, কাজের চাপ ও নিরাপত্তা-সহ তাঁদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া থেকে নজর ঘোরাতেই কারখানায় লক- আউটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। উৎপাদন ব্যাহত করার যে-অভিযোগ কর্তৃপক্ষ তুলেছেন, তারও বিরোধিতা করেছেন তিনি। প্রসন্নর দাবি, গাড়ি বিক্রিতে মন্দার জন্যই উৎপাদন কমেছে। তিনি বলেন, “আমরা উৎপাদন কমাইনি। বরং ওঁরাই কাজের সময় কমিয়েছেন।” অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের এই দোলাচলের মধ্যে আপাতত সংশ্লিষ্ট মহল তাকিয়ে শ্রম দফতরর বৈঠকের দিকেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন