অপেক্ষা শুধু দেশে ডিজেলের দাম বিশ্ব বাজারের সমান হওয়ার। তা হলেই ওই দর নির্ধারণের ক্ষমতা বাজারের হাতে ছেড়ে দেওয়ার জন্য মন্ত্রিসভার রাজনীতি বিষয়ক কমিটির সায় চাইবে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। ঠিক যেমনটা করা হয়েছিল পেট্রোলের ক্ষেত্রে।
মঙ্গলবার এ কথা জানিয়ে তেল মন্ত্রকের এক কর্তার দাবি, এর পাশাপাশি ওএনজিসি-র মতো তেল উৎপাদনকারী সংস্থাগুলিকে যাতে এখনকার তুলনায় অর্ধেক ভর্তুকি দিতে হয়, সেই প্রস্তাবও তুলেছেন তাঁরা।
বিশ্ব বাজারে ব্যারেল-পিছু অশোধিত তেল এই মুহূর্তে ঘোরাফেরা করছে ১১০ ডলারের নীচে। টাকার সাপেক্ষে মাত্রাছাড়া হয়নি ডলারও। আবার ২০১৩-র জানুয়ারি থেকে প্রায় প্রতি মাসে ডিজেলের দর লিটারে অল্প করে বাড়াতে থাকায় এখন এক লিটার ডিজেল বেচে তেল সংস্থাগুলির ক্ষতি (আন্ডার রিকভারি) হচ্ছে ১ টাকা ৭৮ পয়সা। যা সরকার ভর্তুকি হিসেবে দেয়। ফলে সব মিলিয়ে খুব তাড়াতাড়িই দেশে তার দর বিশ্ব বাজারের সমান হবে বলে কেন্দ্রের আশা। আর তখনই তা বিনিয়ন্ত্রণের পক্ষপাতী তারা।
যে কারণে চলতি বছরের শেষে ডিজেলের দামের উপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ উঠে যাবে বলে সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থ সচিব অরবিন্দ মায়ারাম। অর্থাৎ, তখন বিশ্ব বাজারে তেলের দাম যে ভাবে ওঠা-নামা করবে, তার ভিত্তিতেই ডিজেলও বাড়বে বা কমবে। সে দিন মায়ারাম জানান, “কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত হল, প্রতি মাসে ডিজেলে ভর্তুকি ৫০ পয়সা করে কমানো। ভর্তুকি শূন্য হলে, দাম বাজারের হাতেই চলে যাবে।” এ দিন এই একই সুরে কথা বলেছেন ওই তেল মন্ত্রকের কর্তাও।
ওএনজিসি বা অয়েল ইন্ডিয়ার মতো সংস্থা, যারা তেল উৎপাদন করে, খুচরো বাজারে তেল বিক্রেতা সংস্থাগুলিকে বিপুল ভর্তুকি দিতে হয় তাদের। কারণ, ডিজেল, রান্নার গ্যাস, কেরোসিন ইত্যাদি বাজার দরের তুলনায় কমে বিক্রি হয়। তার উপর প্রতি টন অশোধিত তেল তুলতে সেস লাগে ৪,৫০০ টাকা। সম্প্রতি আবার নিয়ম হয়েছে বাজার দরের ভিত্তিতে (যে কম দরে গ্রাহককে তেল বা গ্যাস বেচা হচ্ছে, তার উপর নয়) ২০% হারে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারকে রয়্যালটি দিতে হবে। কর্তাটির কথায়, এই বিপুল টাকা ভর্তুকি গুনতেই চলে গেলে সংস্থাগুলি তেল তুলতে লগ্নি করবে কী ভাবে? ফলে আমদানির উপর আরও নির্ভরশীল হয়ে পড়বে দেশ। সেই পরিস্থিতি এড়াতেই ওই সংস্থাগুলির সঙ্গে ভর্তুকির বোঝা এ বার ৫০:৫০ হারে ভাগ করে নিতে কেন্দ্রকে তাঁরা প্রস্তাব দেবেন বলেও কর্তাটির দাবি।